ফ্রান্সে নির্বাচনের আগে ২ প্রার্থীর দ্বন্দ্ব
২১ এপ্রিল ২০২২ ১৪:২২
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চূড়ান্ত ধাপের আগে ম্যাখোঁ এবং তার প্রতিদ্বন্দ্বী একমাত্র টেলিভিশন বিতর্কে মুখোমুখি হয়ে একে অপরের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন। প্রায় আড়াই ঘণ্টার ওই বিতর্কে দুই প্রার্থী ফ্রান্স তথা ইউরোপের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে নিজেদের পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
করোনা সংকট ও ইউক্রেনে রাশিয়ার চলমান হামলার মধ্যে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে। কারণ অভ্যন্তরীণ বিষয় ছাড়াও দুই প্রার্থী পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ বিপরীত গতিপথ তুলে ধরছেন। ইউরোপপন্থি বলে পরিচিত ম্যাখোঁ ইউরোপীয় ইউনিয়নকে আরও শক্তিশালী করে তুলে জোরাল ঐক্যের মাধ্যমে ফ্রান্সের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে চান। সেক্ষেত্রে জার্মানির সঙ্গে বিশেষ দ্বি পাক্ষিক সম্পর্ককে সেই উদ্যোগের চালিকা শক্তি হিসেবে গণ্য করেন তিনি। ন্যাটোসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক জোটের উপরেও তার গভীর আস্থা রয়েছে।
অন্যদিকে, লা পেন প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইইউকে আরও দুর্বল করে জাতীয় স্তরে ফ্রান্সের ক্ষমতা আরও বাড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কও আন্তর্জাতিক স্তরে দুশ্চিন্তার কারণ। ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার হামলার নিন্দা করেও লা পেন সেই সংশয় দূর করতে পারছেন না। তিনি ক্ষমতায় এলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা ঐক্যে চিড় ধরার আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে।
লা পেন নিজেকে ফ্রান্সের সাধারণ মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বুধবার (২০ এপ্রিল) সন্ধ্যার টেলিভিশন বিতর্কেও তিনি ক্রয়ক্ষমতা, বেতন ও পেনশনের মতো বিষয়ে বর্তমান প্রেসিডেন্টের নীতির কড়া সমালোচনা করেন। অভিবাসন ও আইন-শৃঙ্খলার মতো অন্যান্য ক্ষেত্রেও সরকারের ব্যর্থতার দাবি করেন তিনি।
অভিজ্ঞ রাজনীতিক হিসেবে পরিচিত ম্যাখোঁ নিজের পাঁচ বছরের মেয়াদে সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরেন। নিজের কিছু ভুলত্রুটিও স্বীকার করে নেন। পুতিনের প্রতি অতীত সমর্থনের কারণে লা পেনকে আক্রমণও করেন তিনি। তার দল এমনকি রাশিয়া থেকে ব্যাংক ঋণও নিয়েছে বলে তিনি মনে করিয়ে দেন তিনি। প্রতিদ্বন্দ্বীর পররাষ্ট্রনীতি ফ্রান্সের জন্য কতটা ক্ষতিকর হতে পারে, সে বিষয়েও সতর্ক করে দেন ম্যাখোঁ। ক্ষমতায় এলে লা পেন যে সব পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, তার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের কোনো হিসেব নেই বলেও দাবি করেন তিনি।
এদিকে, জনমত সমীক্ষায় প্রায় ৫৫ শতাংশ সমর্থন পেয়ে ম্যাখোঁ আপাতত লা পেনের তুলনায় প্রায় ১০ শতাংশ এগিয়ে রয়েছেন। তবে পাঁচ বছর আগে রান অফ পর্যায়ে তাদের মধ্যে ব্যবধান ছিল আরও বেশি। তবে, বুধবারের বিতর্কের পর দুই তৃতীয়াংশ দর্শক ম্যাখোঁকে জয়ী হিসেবে মনে করছেন। মাত্র ১৪ শতাংশ ভোটার এই বিতর্ক দেখে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছিলেন। রোববার (২৪ এপ্রিল) কোন শিবিরের কত মানুষ নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন, তার ওপর নির্বাচনের ফলাফল নির্ভর করবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
সারাবাংলা/একেএম