Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক প্রস্তুত, তবুও শঙ্কা যানজটের

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৪ এপ্রিল ২০২২ ০৮:১৩

ছবি: সারাবাংলা

টাঙ্গাইল: ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের টাঙ্গাইল অংশে চার লেন সড়কের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। তবে গোড়াইয়ে নির্মানাধীন ফ্লাইওভার চলাচলের জন্য আগামীকাল সোমবার (২৫ এপ্রিল) খুলে দেওয়া হবে। এরপরও যানজটের শঙ্কা রয়েছে। ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে ১৩ কিলোমিটার দুই লেন বাড়াতে পারে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের যানজট। এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব পার পর্যন্ত দুই লেন হওয়ায় ভয়াবহ যানজট হওয়ার আশঙ্কায় করেছে চালকসহ সংশ্লিষ্টরা। ফলে এই ইদে ঘরমুখো মানুষরা চরম ভোগান্তির শিকার হতে পারেন।

বিজ্ঞাপন

পুলিশ, পরিবহনের চালক এবং সংশ্লিষ্টরা জানান, ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে উত্তরবঙ্গসহ ২৪ জেলার যানবাহন চলাচল করে। এতে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা যানবাহনগুলো মহাসড়কের এলেঙ্গা পর্যন্ত চার লেন সুবিধা নিয়ে দ্রুত চলে আসতে পারে। তবে এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত সড়কটি দুই লেনের। এছাড়াও বঙ্গবন্ধু সেতুটিও দুই লেনের। এতে যানবাহন চার লেনের সুবিধায় দ্রুত এলেঙ্গা পর্যন্ত এসে আটকে যায় দুই লেনের মুখে। সেখান থেকেই যানবাহনগুলো ধীর গতিতে চলে, ফলে যানজটের শুরু হয়। এছাড়াও সিরাজগঞ্জ অংশে চার লেনের কাজ চলমান থাকায় গাড়ির চাপ বাড়লেই যানজটের সৃষ্টি হয়। সেই জট কখনো কখনো টাঙ্গাইল পর্যন্ত পৌঁছায়। আবার সেতুতে টোল দিয়ে গিয়েও যানজট লেগে যায়।

বিজ্ঞাপন

এরপরও ইদ সামনে রেখে মহাসড়কে নানা কারণে যানজটের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। প্রতিবছর ইদে ঢাকা-বঙ্গবন্ধসেতু মহাসড়কে সৃষ্ট যানজটে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় দূরপাল্লার যাত্রীদের। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে যানজটে ঘণ্টার পর ঘন্টা আটকে থাকে যানবাহন। মহাসড়কে গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ৬৫ কিলোমিটারে চার লেন সড়কের কাজ প্রায় শেষ হওয়ার পথে। ফলে ধরে নেওয়া যায় এবার ইদে নির্বিঘ্নে যান চলাচল করতে পারবে। কিন্তু তারপরেও দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার দুই লেন সড়কটুকু। চার লেনের সুবিধায় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা যানবাহন এলেঙ্গা পর্যন্ত পৌঁছে আটকে যায় দুই লেনের মুখে। আর এখান থেকেই শুরু হয় যানজটের।

বঙ্গবন্ধু সেতু টোল প্লাজা সূত্র জানিয়েছে, স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতিদিন ১২/১৩ হাজার যানবাহন সেতু পারাপার হয়। ইদের আগে ৩৫/৩৬ হাজার যানবাহন পারাপার হয়। স্বাভাবিকের চেয়ে অধিক যানবাহন পারাপার হওয়ায় দুই লেনের সড়কে যানজট লেগে যায়। সিরাজগঞ্জ অংশে দুই লেনের সড়ক। এছাড়া সেখানে কয়েকটি সরু সেতু রয়েছে। এ কারণে পশ্চিম প্রান্তে যানজট লেগে সেতু অতিক্রম করে টাঙ্গাইল অংশ পর্যন্ত চলে আসে। এদিকে স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতিদিন ১২ থেকে ১৩ হাজার যানবাহন বঙ্গবন্ধুসেতু পারাপার হলেও ইদের আগে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩০ থেকে ৩২ হাজারে। ফলে টোল দিতে গিয়েও যানজট লেগে যায়।

সরেজমিন মহাসড়ক ঘুরে দেখা যায়, চার লেন সড়কের কাজ প্রায় শেষের দিকে। সড়কের দু’পাশের সার্ভিস লেন চালু আছে। যানবাহন দ্রুত গতিতে চলাচল করছে। মির্জাপুরের গোড়াই ফ্লাইওভারের কাজ চলছে।

বগুড়ার বাস চালক কামাল মিয়া জানান, এলেঙ্গা থেকে ঢাকা দিকে ফোর লেন। অপর দিকে এলেঙ্গা থেকে সেতু পর্যন্ত দুই লেন। এ কারণে ফোর লেনের যানবাহন যখন দুই লেনে যাতায়াত করে তখনই যানজট সৃষ্টি হয়। ইদের মধ্যে স্বাভাবিক তুলনার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি যানবাহন চলাচল করবে। আর ফলে এ কারণে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হবে।

অপর দিকে বাস চালক মোতালেব হোসেন জানান, ইদের আগে আমরা টিপের প্রতিযোগিতায় থাকি। কে কত বেশি টিপ মারতে পারি, বেশি টাকার লোভের আশায় নিজের জীবনেরও তোয়াক্কা করি না। অপর দিকে রাস্তার নিয়ম কানুনও মানি না। ফলে অনেক সময় চালকদের কারণেও যানজটের সৃষ্টি হয়।

টাঙ্গাইল জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) কাজী নুসরাত এদ্বীপ লুনা জানান, জয়দেবপুর হতে এলেঙ্গা পযর্ন্ত চারলেন প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ হলেও এলেঙ্গার পর থেকে এই ১৩ কিলোমিটার দুই লেনের রাস্তাই ভোগান্তির কারণ হতে পারে। তবে যানজট নিরসনে প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ গ্রহণ করেছে জেলা পুলিশ। ইদে ঘরফেরা মানুষের ভোগান্তি লাঘবে মহাসড়কে যানবহনে থাকা রোজাদারদের ইফতারের ব্যবস্থা রেখেছে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ। এছাড়া দীর্ঘ সময় ভ্রমণে মহাসড়কে বৃদ্ধ, রোগী ও শিশুসহ সকলের জন্য প্রয়োজন অনুসারে মোবাইল টয়লেটের ব্যবস্থাও রয়েছে।

চার লেন প্রকল্পের ব্যবস্থাপক অমিত চক্রবর্তী জানান, মির্জাপুরের ফ্লাইওভারটি ২৫ এপ্রিল যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। তাই এই সড়কে এলেঙ্গা পর্যন্ত আর কোনো সমস্যা থাকবে না।

বঙ্গবন্ধু যমুনা বহুমুখী সেতুর প্রকৌশলী আহসান মাসুদ বাপ্পী জানান, স্বাভাবিক সময়ে বঙ্গবন্ধু সেতুতে ৬/৭ টি লেনে টোল আদায় করা হয়। ইদের আগে যানজট নিরসনে সেতুর উভয় পাশে ১৮ টি লেনে টোল আদায় করা হবে।

টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানান, ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক দিয়ে উত্তরবঙ্গসহ ২৪টি জেলার যানবাহন চলাচল করে। তবে ইদ আসলেই যানজটের কবলে পড়তে হয়। এ বছর যানজট নিরসনে অন্য বছরের তুলনায় এবার ব্যতিক্রম কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে পুলিশের পাশাপাশি মহাসড়কে দুইশ এপিপিএনের সদস্য যানজট নিরসনে কাজ করবে। সব মিলিয়ে ইদের ছুটির সময় মহাসড়ক যানজট মুক্ত রাখতে আট শতাধিক পুলিশ কাজ করবে।

তিনি আরও জানান, এতে ঘর মুখো মানুষের ভোগান্তি অনেক কম হবে। তবে দুই লেনের ১৩ কিলোমিলো রাস্তায় যেন যানজট শুরু না হয় সেজন্য ভুঞাপুর থেকে এলেঙ্গা লিংক রোড পর্যন্ত ডাইভার্ড করে বিকল্প রাস্তার ব্যবহার করা হবে। রাস্তার দুপাশের দোকানে যেন গাড়ি অহরহ থামাতে না পারে সে ব্যাপারেও পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া আছে।

সারাবাংলা/এনএস

ইদযাত্রা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর