Monday 02 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মহাসড়কের জমি বন্ধক: দুদককে অনুসন্ধানের নির্দেশ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৫ এপ্রিল ২০২২ ১৩:০৫ | আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২২ ১৪:১৩
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাকা: ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জমি বন্ধক রেখে ব্যাংক থেকে ১৫ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার ঘটনা অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ২৬ জুনের মধ্যে অনুসন্ধান করে এ বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দিতে দুদকের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

একই সঙ্গে এ বিষয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

রুলে জমি বন্ধক রাখার ঘটনায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিটসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এ ছাড়া আগামী ২৬ জুন এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন আদালত।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (২৫ এপ্রিল) জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অনিক আর হক ও মো.তামজীদ হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।

আদালতের আদেশের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।

এর আগে গতকাল (২৪ এপ্রিল) ঢাকা -ময়মনসিংহ মহাসড়কের উত্তরার আজমপুর অংশের মহাসড়কের সরকারি জমি বন্ধক রেখে ১৫ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার ঘটনা তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ওবায়েদ আহমেদ এ রিট দায়ের করেন।

রিট আবেদনে গত ১৬ এপ্রিল একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত ‘মহাসড়ক বন্ধক দেখিয়ে লুটপাট ১৫ কোটি টাকা’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মহাসড়কের সরকারি জমি বন্ধক রেখে একটি বেসরকারি ব্যাংক থেকে ১৫ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিলেন মো. গোলাম ফারুক নামে এক ভয়ঙ্কর প্রতারক।

ব্যাংকের অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে তিনি বাগিয়ে নেন মোটা অঙ্কের এ ঋণ। তবে সেটি ধরা পড়ার পর আবার সংশোধন করেন দলিল। এবার আগের বন্ধককৃত জমির দাগ নম্বর পরিবর্তন করে ব্যাংকে জমা দেন। সংশোধিত দলিলের জমিতে বন্ধকি সম্পত্তির সাইনবোর্ড স্থাপনের চেষ্টা করলে ব্যাংক জানতে পারে সেটিও ভুয়া। সংশোধিত দলিলের জমির আসল মালিক জামির আলী। ২৭ শতাংশ ওই জমি দখলে নিতে একাধিকবার তার ওপর হামলা ও হত্যাচেষ্টা চলে। অবশেষে গত ১৪ এপ্রিল রাতে রাজধানীর উত্তরা থেকে ফারুকসহ তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ফিরোজ আল মামুন ওরফে ফিরোজকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।

পরে ১৫ এপ্রিল দুপুরে কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান, আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, সম্প্রতি বাড্ডা থানার মেরুল বাড্ডা এলাকায় জাল দলিল সংক্রান্ত বিরোধের জেরে একটি হত্যাচেষ্টার ঘটনা ঘটে। যেখানে ভিকটিমকে নিজ জমি থেকে জোরপূর্বক উৎখাত করার উদ্দেশে প্রতারক গোলাম ফারুক ও তার প্রধান সহযোগী ফিরোজ আল মামুনসহ অন্যরা গত ২৬ মার্চ ও ৬ এপ্রিল হত্যার উদ্দেশে হামলা করে। ওই ঘটনায় ভিকটিম আদালতে একটি নালিশি দরখাস্ত করে। আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে রাজধানীর বাড্ডা থানাকে এফআইআর হিসেবে এটিকে গণ্য করার আদেশ দেয়। এ বিষয়ে বাড্ডা থানায় একটি মামলা হয়। র‌্যাব ওই ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা বাড্ডায় হত্যাচেষ্টা, চাঁদাবাজি, প্রতারণা, জালিয়াতি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের সঙ্গে জড়িত বলে তথ্য দেয়। মহাসড়কের জমি ব্যাংকে বন্ধক রেখে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর তথ্যও দিয়েছে তারা।

মামলার বাদী ও ভুক্তভোগী জামির আলী বলেন, ‘আমার উত্তরার ২৭ শতাংশ জমি গ্রেফতারকৃত ফারুক দখল করার চেষ্টা করছিলেন। তাদের কাছে ওই জমির কোনো দাগ-খতিয়ান নেই।’

এ ছাড়া ওই জায়গা বন্ধক দিয়ে একটি বেসরকারি ব্যাংকের প্রধান শাখা থেকে ১৫ কোটি টাকা লোন নেন। যা আমার অনুপস্থিতিতে আমার ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করা হয়েছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে অভিযোগ করলে তারা ব্যবস্থা নেননি।

জানা গেছে, ২০২১ সালের এপ্রিলে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে মহাসড়কের জমি ব্যক্তি নামে নিবন্ধন, বিক্রয়, ব্যাংকে বন্ধক ও ব্যাংক কর্তৃক নিলামে বিক্রি চেষ্টার ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে। ওই ঘটনায় ভূমি মন্ত্রণালয় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্তে একটি প্রতারক চক্র মহাসড়ক শ্রেণিভুক্ত সরকারি জমি কয়েকটি সরকারি অফিসের কতিপয় অসাধু কর্মচারীর যোগসাজশে সরকারি জমি ব্যক্তি মালিকানায় নিবন্ধন করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে নেয়। যদিও এসব জমি সড়ক ও জনপথ অধিদফতর কর্তৃক অধিগ্রহণ করা।

তাই ওই ঘটনার তদন্ত এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন দায়ের করা হয়েছে বলে জানান রিটকারী আইনজীবী ওবায়েদ আহমেদ।

সারাবাংলা/কেআইএফ/একে

মহাসড়কের জমি বন্ধক হাইকোর্ট

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর