গাজী পিসিআর ল্যাবের ২ বছর, নমুনা পরীক্ষা হয়েছে লক্ষাধিক
২৯ এপ্রিল ২০২২ ১৩:৫৬
নারায়ণগঞ্জ: ২০২০ সালের মার্চে দেশে নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে শুরুর দিকেই হটস্পট ও রেড জোন ঘোষণা করা হয়েছিল নারায়ণগঞ্জকে। কিন্তু করোনার অন্যতম হটস্পটে পরিণত হলেও এই এলাকায় কোভিড-১৯ নমুনা পরীক্ষার কোনো ব্যবস্থা ছিল না। সব নমুনা পরীক্ষা করতে হতো ঢাকার ল্যাবগুলোতে। এ পরিস্থিতিতে নারাণয়গঞ্জের মানুষদের করোনা পরীক্ষার সুযোগ করে দেওয়ার উদ্যোগ নেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতিক এবং গাজী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে তারা রূপগঞ্জে গড়ে তোলেন গাজী কোভিড-১৯ পিসিআর ল্যাব।
২০২০ সালের ২৯ এপ্রিল দুপুরে ভিডিও কনফারেন্সে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতিকের উপস্থিতিতে ল্যাবটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। সেই থেকে এখন পর্যন্ত গত দুই বছরে এক লাখেরও বেশি মানুষের করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে এই ল্যাবটিতে।
কেবল নারায়ণগঞ্জবাসী নয়, গাজী কোভিড-১৯ পিসিআর ল্যাবের সুফল পেয়েছেন আশপাশের জেলার মানুষও। র্যাব, পুলিশ, ম্যাজিস্ট্রেট, চিকিৎসক, ব্যবসায়ী, জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ গাজী পিসিআর ল্যাবে বিনামূল্যে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করিয়ে চলেছেন। গাজী গ্রুপের উদ্যোগে বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করা নমুনাগুলোও এখানে পরীক্ষা করা হয়েছে।
গাজী গ্রুপের উদ্যোগে এই করোনাভাইরাস পরীক্ষার ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হয় রূপগঞ্জে। ওই সময় সারাদেশেই নমুনা পরীক্ষার সুযোগ ছিল অপ্রতুল। নারায়ণগঞ্জ হটস্পটে পরিণত হলে সেখান থেকে সংগ্রহ করা নমুনার সংখ্যা বাড়তেই থাকে। কিন্তু সেসব নমুনা পরীক্ষার জন্য ঢাকার ওপর নির্ভর করতে হতো। আর শুরু থেকেই ঢাকাতে নমুনার চাপ বেশি হওয়ায় নারায়ণগঞ্জের নমুনাগুলো পরীক্ষা হতে দীর্ঘ সময় লেগে যেত। এ পরিস্থিতিতে রূপগঞ্জ গোটা নারায়ণগঞ্জ জেলার সব করোনা নমুনা পরীক্ষার সুযোগ দিয়ে আশীর্বাদ হয়ে আসে গাজীর এই করোনা ল্যাব। অর্থায়নের পাশাপাশি শুরু থেকেই এই ল্যাবের পুরো কার্যক্রম তদারকি করে যাচ্ছেন গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পা।
গাজী কোভিড-১৯ পিসিআর ল্যাব প্রতিষ্ঠার ২ বছর পূর্তিতে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা, রক্তের গ্রুপ নির্ণয়, ডায়াবেটিস পরীক্ষাসহ নানা কর্মসূচি পালন হয়েছে এই ল্যাবে। ল্যাবের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. রুখসানা রায়হান বলেন, গাজী পিসিআর ল্যাবের সুফল পাচ্ছেন নারায়ণগঞ্জসহ আশপাশের জেলার মানুষ। ঘনবসতিপূর্ণ নারায়ণগঞ্জে যারা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাদের দ্রুত শনাক্ত করা যাচ্ছে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের আইসোলশনে রাখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলায় আগে কোনো পিসিআর ল্যাব ছিল না। ফলে নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা করা সময়সাপেক্ষ হয়ে যেত। কিন্তু গাজী কোভিড-১৯ পিসিআর ল্যাবের কারণে এখন অনেক উপকার হচ্ছে। প্রতিদিন বিভিন্ন স্থান থেকে নমুনা আসছে। আগে রিপোর্ট পেতে সপ্তাহ পেরিয়ে যেত। এই ল্যাবের কল্যাণে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে।
ডা. রুখসানা আরও বলেন, গত দুই বছরে এ ল্যাবে লক্ষাধিক করোনা নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। বর্তমানে ল্যাবে কর্মরতরা করোনার নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষার পাশাপাশি বিনামূল্যে মানুষকে চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া গবেষণামূলক কাজও করছে তারা।
সারাবাংলা/টিআর
গাজী করোনা ল্যাব গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পা গাজী পিসিআর ল্যাব গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক