Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিদ্যুৎ বিতরণ স্মার্ট করতে পরামর্শকেই যাচ্ছে ৮০ কোটি টাকা

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১ মে ২০২২ ০৮:২১

ঢাকা: বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থায় স্মার্ট গ্রিড তৈরিতে পরামর্শকেই যাচ্ছে প্রায় ৮০ কোটি ২৭ লাখ টাকা। চার ধরনের পরামর্শকের পেছনে এ অর্থ ব্যয় করা হবে। মডার্নাইজেশন অফ পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন স্মার্ট গ্রিডস ফেজ-১ প্রকল্পে এমন প্রস্তাব করা হয়েছে। এর আগে অনুষ্ঠিত প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) সভায় এই খাতের ব্যয় যৌক্তিকভাবে কমাতে বলেছিল পরিকল্পনা কমিশন। সেটি করার পরও এই ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৬৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে কেএফডব্লিউ থেখে ঋণ দিচ্ছে ৬৯৯ কোটি ২৫ লাখ টাকা, সরকারি তহবিলের ২৭৩ কোটি ৯১ কোটি টাকা এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থার তহবিল থেকে ৯৪ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান মঙ্গলবার সারাবাংলাকে বলেন, এক সময় আমরা দুর্বল ছিলাম। তখন বিদেশিরা আমাদের বলত তোমাদের দক্ষতার অভাব আছে, আমরা লোক দিচ্ছি। অথবা তোমরা লোক দাও আমরা ফেলে দিচ্ছি। কিন্তু এখন আমরা অনেক দক্ষ হয়েছি। কিন্তু ওই অভ্যাসটা আছে। এখন ঢালাওভাবে পরামর্শক নেওয়াটা বন্ধ করতে হবে। আমরা অনেক সতর্ক। পর্যায়ক্রমে এই ধারা থেকে বেরিয়ে আসতে আমরা কাজ করছি।

সূত্র জানায়, প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং সুপারভিশন খাতে ২২৮ পরামর্শক জনমাসের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৩১ কোটি ১৬ লাখ টাকা। যা মোট প্রকল্প ব্যয়ের ২ দশমিক ৯২ শতাংশ। এছাড়া একম্পানিং মেজার কনসানটেন্ট ফর ক্যাপাসিটি বিল্ডিংয়ের জন্য ১০৬ জনমাস পরমর্শকের ১৬ কোটি ৯৮ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। যা মোট প্রকল্প ব্যয়ের ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ। জিআইএম ম্যাপিং পরামর্শক সেবা এবং বাস্তবায়নে ১৫৬ জনমাস পরামর্শকের জন্য ২৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। যা মোট প্রকল্প ব্যয়ের ২ দশমিক ৬৮ শতাংশ। পরামর্শক সেবা সংশ্লিষ্ট সরঞ্জাদির কাস্টম, শুল্ক ও ভ্যাট বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। এছাড়া পরামর্শক সেবা আইটি ভ্যাট বাবদ ২০ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ধরা হয়েছে।

প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বর্তমানে ওজোপাডিকো বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার ৪১টি উপজেলায় বিদ্যমান ৪৮টি বিক্রয় ও বিতরণ কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রায় ১৪ লাখ গ্রাহককে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। বিদ্যমান বিতরণ ব্যবস্থায় সাব-স্টেশন ও ফিডারগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে পর্যবেক্ষণ এবং নিয়ন্ত্রণের সুযোগ না থাকায় ওজোপাডিকোর আওতাধীন এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট এবং সিস্টেম লস প্রত্যাশিত পর্যায়ে নামিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে না। গ্রাহক পর্যায়ে তদারকি এবং স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়ায় নিয়ন্ত্রণের সুযোগ না থাকায় রাজস্ব আদায়ও বিলম্বিত হচ্ছে। প্রকল্পটির মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা অটোমেশন করে সার্বক্ষণিক মনিটরিং ও কন্ট্রোলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের হার ও সময়কাল কমিয়ে আনা যাবে। এছাড়াও প্রকল্পটির মাধ্যমে বিতরণ ব্যবস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধি ও সিস্টেম লস হ্রাস করে ওজোপাডিকো এলাকায় মানসম্মত বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত এবং প্রকৃত রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হবে।

বিজ্ঞাপন

প্রকল্পের মূল কার্যক্রম হচ্ছে, ৯৭টি ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্রকে সেন্ট্রাল স্ক্যাডা সিস্টেমের সাথে সংযুক্তকরণ, ২০টি ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্র পুনর্বাসন, ৮টি সাবস্টেশন অটোমেশন সিস্টেম স্থাপন, ১২১ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার ৩৩ কেভি নতুন বিতরণ লাইন নির্মাণ, ৬১ দশমিক ৬০ কিলোমিটার ৩৩ কেভি বিতরণ লাইন পুনর্বাসন এবং ২০টি ৩৩ কেভি বে নির্মাণ সম্প্রসারণ করা হবে।

এ বিষয়ে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগের সদস্য একেএম ফজলুল হক পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ওজোপাডিকোর বিদ্যমান বিতরণ ব্যবস্থা সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরনের পাশাপাশি সকল উপকেন্দ্রকে স্ক্যাডা সিস্টেমের আওতায় এনে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। ফলে গ্রাহক পর্যায়ে মানসম্মত বিদ্যুৎ নিশ্চিত, সিস্টেম লস হ্রাস এবং বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করে বিতরণ ব্যবস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধি করা যাবে।

সারাবাংলা/জেজে/এসএসএ

বিদ্যুৎ বিতরণ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর