অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ, নেই প্রশাসনের তৎপরতা

গাজীপুর: গাড়ি থাকলেও যাত্রীর চাপ নেই। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীদের চাপ বাড়ার আশায় আছেন কাউন্টার মাস্টাররা। ইদের বাকি আর একদিন। অন্যান্য সময়ের মতো এবারও যাত্রীদের নিয়ে কাড়াকাড়ি করছে কাউন্টার মাস্টাররা। তবে যাত্রীদের অভিযোগ, ইদকে সামনে রেখে বাড়তি ভাড়া আদায় করছে পরিবহনগুলো। প্রতিটি টিকিটে বেড়েছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা।

সোমবার (২ মে) রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর, গাজীপুরের টঙ্গী স্টেশন রোড ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।

রাজধানী এবং রাজধানীর আশেপাশে বসবাস করা বিভিন্ন পেশার মানুষ পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ইদ করতে গ্রামের বাড়িতে ছুটছেন। অগ্রিম টিকিট কেটে রেখেছিলেন অনেকেই। তবে যারা এখন টিকিট কেটে বাড়ি যেতে চাইছেন তাদেরই পড়তে হচ্ছে বিড়ম্বনায়। চাইলেই অনেক পরিবহনের পাচ্ছে না বাসের টিকিট, সেই সঙ্গে টিকিট পেলেও গুণতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া। দুপুর থেকেই আব্দুল্লাহপুরে একতা পরিবহন, এস আই এন্টারপ্রাইজসহ বেশ কিছু কাউন্টারে যাত্রীদের ভীড় লক্ষ্য করা যায়। তাদের অভিযোগ, আগের তুলনায় ভাড়া বেশি নিয়েছে।

সিলেট, ব্রাক্ষণবাড়িয়া রুটে চলাচলরত বাসগুলোর কাউন্টার টঙ্গী স্টেশন রোড এলাকায়। টঙ্গী পূর্ব থানা থেকে কাউন্টারের দূরত্ব ৩০০ মিটার। থানা এতো কাছে থাকা স্বত্বেও যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগের শেষ নেই। নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অনেকাংশে ভাড়া বাড়িয়েছে কাউন্টার মাস্টাররা। এতে নেই প্রশাসনের কোনো তৎপরতা। যাত্রীদের অভিযোগ, সকাল থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলেও প্রশাসনের কেউই অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টি তদারকি করতে আসলো না।

গাজীপুরের টঙ্গী স্টেশন রোড হয়ে ব্রাক্ষণবাড়িয়া রুটে চলাচল করে তিতাস পরিবহন, লাবিবা পরিবহন, ইকোনো পরিবহন ও কাজী পরিবহনের বাস। এসব রুটে চলাচলরত পরিবহনগুলোর মধ্যে ইদের আগে ব্রাক্ষণবাড়িয়া পর্যন্ত ২৪০ টাকা ভাড়া আদায় করা হচ্ছিলো। তবে এখন সেই ভাড়া বাড়িয়ে ব্রাক্ষণবাড়িয়া পর্যন্ত লাবিবা পরিবহন ভাড়া আদায় করছে ৩০০-৪০০ টাকা। প্রতিটি কাউন্টারে টিকিট প্রতি ১০০-২৫০ টাকা বেশি আদায় করা হচ্ছে। অতিরিক্ত ভাড়া দিতে অসম্মতি জানালে কাউন্টার মাস্টাররা বিক্রি করছেন না টিকিট।

অন্যদিকে রাজধানীর আব্দুল্লাহপুরেও একই চিত্র। বগুড়া পর্যন্ত টিকিটের ভাড়া আদায় করা হচ্ছে ৭০০ টাকা, সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে ৫০০ টাকা। সেখানেও প্রতিটি টিকিটে ২০০-৩০০ টাকা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।

রাজধানীর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে দুই ভাই। মা-বাবার সঙ্গে ইদ করতে ব্রাক্ষণবাড়িয়া যাচ্ছে তারা। বাড়তি ভাড়া দিয়ে কাউন্টার থেকে টিকেট কিনতে হয়েছে তাদের। তাদের অভিযোগ, অন্যান্য সময় থেকে ১৫০-২০০ টাকা অতিরিক্ত নিয়েছে প্রতিটি টিকিটে। এছাড়া ভোগান্তি তো আছেই।

এ বিষয়ে লাবিবা পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার ফারুক অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টি অস্বীকার করেন। তার দাবি অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে না। এটা জাকির (৫৫ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি পদপ্রার্থী) ভাইয়ের কাউন্টার। উনি এটা দেখাশোনা করে।

অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে একতা পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার নয়ন জানান, আমাদের গাড়ি খালি আসবে। গাড়ি ফেরত আসার যেই তেল খরচ সেটা তো যাত্রীরা দিবে না তাই আমরা কিছু টাকা অতিরিক্ত নিচ্ছি।

এ বিষয়ে বিআরটিএ ঢাকা মেট্রো-৩ সার্কেলের সহকারী পরিচালক (ইঞ্জি:) শেখ মো. ইমরান বলেন, অতিরিক্ত ভাড়া কেউ আদায় করতে পারবে না। যদি কেউ অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাবেদ মাসুদ জানান, এখনো আমরা অভিযোগ পাইনি। যদি কেউ অভিযোগ করে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সারাবাংলা/এসএসএ

ইদযাত্রা বাড়তি ভাড়া বাড়তি ভাড়া আদায়