ফের জনসমাগমের ‘আশায়’ চট্টগ্রামের বিনোদন কেন্দ্রগুলো
২ মে ২০২২ ১৮:২৮
চট্টগ্রাম ব্যুরো: করোনা মহামারির বিধিনিষেধ ‘উঠে যাওয়ায়’ ইদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে ফের আগের মতো দর্শনার্থী-পর্যটক সমাগমের অপেক্ষায় আছে চট্টগ্রাম নগরীর বিনোদন কেন্দ্রগুলো। সংশ্লিষ্টদের আশা, আবারও মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠবে বিনোদন কেন্দ্রগুলো। বাড়তি সমাগমের বিষয়টি মাথায় রেখে পর্যটন কেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তা জোরদার করেছে প্রশাসন।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতিতে গত দুই বছর ইদুল ফিতরের সময় চট্টগ্রাম নগরীর কনকর্ড ফয়’স লেক অ্যামিউজমেন্ট পার্ক, চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতসহ বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্র ও দর্শনীয় স্থাপনা সরকারি নির্দেশনার কারণে বন্ধ ছিল। তবে করোনা মহামারিকাল বাদ দিলে প্রতিবছর ইদের দিন থেকে অন্তত সপ্তাহখানেক বিনোদন কেন্দ্রগুলো দর্শনার্থী-পর্যটকদের বিপুল সমাগমে মুখর থাকতো।
দুই বছর পর এবার ইদুল ফিতর উদযাপন হতে যাচ্ছে অনেকটা করোনামুক্ত পরিবেশে। ফলে দর্শনার্থী-পর্যটকদের কথা বিবেচনায় রেখে মাসখানেক ধরে বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে চলছে জোর প্রস্তুতি। সৌন্দর্য বর্ধনের মধ্য দিয়ে বর্ণিল রঙে সেজেছে কেন্দ্রগুলো, আলোকায়ন করা হয়েছে।
নগরীর কনকর্ড ফয়’স লেক অ্যামিউজমেন্ট পার্ক ও ওয়াটার পার্ক সি ওয়ার্ল্ড সেজেছে নতুন সাজে। অ্যামিউজমেন্ট পার্কের ১৪টি রাইড সংস্কার করা হয়েছে। লেকে ভ্রমণের জন্য নতুন ইঞ্জিন বোট যুক্ত করা হয়েছে। পর্যটকদের জন্য কমপ্লেক্সের ভেতরে থাকা রিসোর্ট ও বাংলোও সংস্কার করা হয়েছে।
কনকর্ড ফয়’স লেক অ্যামিউজমেন্ট পার্কের ডেপুটি ম্যানেজার (মার্কেটিং) বিশ্বজিৎ ঘোষ সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, ইদের দিন দুপুর থেকে পার্ক খোলা থাকবে। ইদের দ্বিতীয় দিন থেকে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। প্রতিদিন প্রায় ছয় হাজার দর্শনার্থী আসবে বলে তাদের ধারণা।
‘করোনার কারণে আমরা গত দুই বছর ইদসহ বিভিন্ন উৎসবে অ্যামিউজমেন্ট পার্ক খোলা রাখতে পারিনি। এবার সংকট কেটে গেছে, তাই প্রচুর দর্শনার্থীর সমাগম হবে বলে আমাদের ধারণা। সেজন্য আমরা পার্ককে আরও আধুনিকায়ন করেছি। দর্শনার্থীদের আনন্দময় ভ্রমণ এবং তাদের নিরাপত্তা- এই দুটো বিষয়কে মাথায় রেখে আমরা সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি’- বলেন বিশ্বজিৎ ঘোষ।
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর ডা. শাহাদাত হোসেন শুভ সারাবাংলাকে বলেন, ‘করোনা মহামারি আমরা কাটিয়ে উঠেছি। এবার দর্শনার্থী প্রবেশে কোনো সমস্যা নেই। আগের মতো ইদের সময় প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ হাজার লোক সমাগম হবে বলে আমরা আশা করছি। এজন্য সার্বিক প্রস্তুতিও আমরা সম্পন্ন করেছি।’
নগরীর পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে উপচে পড়া ভিড় হবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। বাড়তি সমাগম ও ভালো বিকিকিনির আশা করছেন চটপটি-ফুচকা, কাঁকড়া ভুনা, পিঁয়াজু, আইসক্রিম-শরবত বিক্রেতাসহ সৈকতের ক্ষুদ্র দোকানিরা।
পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘সৈকতে এবার বেশি জনসমাগম হতে পারে। আমরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছি। ইদের দিন দুপুর থেকেই আমাদের সার্বক্ষণিক পুলিশ মোতায়েন থাকবে। টহল পুলিশ, গোয়েন্দা টিম থাকবে। সৈকতে আসা দর্শনার্থীদের নিরাপত্তাকে আমরা সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছি। একইসঙ্গে বেপরোয়া গতিতে মোটর সাইকেল-গাড়ি চালিয়ে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে ঘটাতে না পারে, সেই বিষয়টিও আমরা দেখছি।’
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) তৌহিদুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম নগরী ও জেলায় যেসব বিনোদন কেন্দ্র আছে, সেগুলোতে এবার লোক সমাগম বেশি হতে পারে। যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে, তাহলে দূর-দূরান্ত থেকেও লোকজন আসতে পারে। আমরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষয়টি নজরে রাখছি। নিরাপত্তার বিষয়টিতে জোর দেওয়া হচ্ছে।’
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম