বাড়তি ভাড়া আদায়, ব্যবস্থা নিচ্ছে না পুলিশ
৪ মে ২০২২ ১৪:১৯
গাজীপুর: ইদুল ফিতরের পরদিন সকাল থেকেই ঘরমুখী মানুষের ঢল দেখা গেছে ব্রাক্ষণবাড়িয়াগামী পরিবহনগুলোতে। তবে যানবাহনের স্বল্পতায় যাত্রীদের ভোগান্তি বেড়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করেও মিলছে না গাড়ি। যাত্রীর চাপ দেখে সুযোগ বুঝে বেশি ভাড়াও হাঁকছে পরিবহনগুলো। তবে যাত্রীরা বাড়তি ভাড়ার অভিযোগ করলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।
বুধবার (৪ মে) সকাল থেকেই ঢাকা-সিলেট সড়কের টঙ্গী এলাকার সড়কে দেখা গেছে মানুষের জটলা। টঙ্গীর স্টেশন রোড এলাকায় দূরপাল্লার গণপরিবহনে টিকিটের জন্য অপেক্ষা করছেন হাজারও যাত্রী। ইদের আগের দিনও যাত্রীর চাপ কম থাকলেও ইদের পরদিনই ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে এই সড়কে।
ঢাকা ও গাজীপুর থেকে সিলেট, ব্রাক্ষণবাড়িয়া, ভৈরব রুটে চলাচলরত বাসগুলোর কাউন্টার টঙ্গী স্টেশন রোড এলাকায়। টঙ্গী পূর্ব থানা থেকে কাউন্টারের দূরত্ব ৩০০ মিটার। থানা এত কাছে থাকলেও যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগের শেষ নেই। নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অনেক বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের। তাদের অভিযোগ, সকাল থেকেই বাসগুলো অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলেও পুলিশ বা প্রশাসনের কেউ তদারকি করতে আসেনি।
গাজীপুরের টঙ্গী স্টেশন রোড হয়ে ব্রাক্ষণবাড়িয়া রুটে চলাচল করে তিতাস পরিবহন, লাবিবা পরিবহন, ইকোনো পরিবহন, উত্তরা পরিবহন ও কাজী পরিবহনের বাস। এই রুটে ইদের আগ মুহূর্তেও ব্রাক্ষণবাড়িয়া পর্যন্ত ভাড়া রাখা হয়েছে ২৪০ টাকা। তবে বুধবার সেই ভাড়া ৪০০/৪৫০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ টিকিট প্রতি দেড়-দুইশ টাকা পর্যন্ত বেশি আদায় করছে পরিবহন কোম্পানিগুলো।
যাত্রীদের অভিযোগ, বাড়তি ভাড়া না দিলে কাউন্টার মাস্টাররা টিকিটই বিক্রি করছে না। ফলে বাড়ি ফেরার তাগিদে বাধ্য হয়েই অনেক বেশি দামে টিকিট কিনছেন তারা।
স্থানীয়রা বলছেন, বুধবার সকাল থেকেই শুরু হয় যাত্রীর চাপ। ইদুল ফিতরের পরদিন এত যাত্রীর চাপ কিছুটা অস্বাভাবিক। আর সেটিকে পুঁজি করেই কাউন্টার মাস্টাররাও বাড়তি ভাড়া আদায় করছেন।
ভুক্তভোগী যাত্রী রিপন মিয়া বলেন, অতিরিক্ত ভাড়ার জন্য ইদের আগে বাড়ি যাইনি। কিন্তু লাভ কী হলো! আজকেও তো সেই দ্বিগুণ ভাড়া চাইছে। কাউন্টার মাস্টারদের কিছু বললে তারা বলছে, সব ম্যানেজ করেই নাকি চালাচ্ছে। তাই তাদের কোনো সমস্যা হবে না।
পরিবার নিয়ে ব্রাক্ষণবাড়িয়ার পথে রওনা হয়েছেন যাত্রী সোহাগ। তিনি বলেন, ভাড়া নিয়ে যাচ্ছেতাই ব্যবহার করছে কাউন্টারগুলো। আমি বলেছিলাম যে পুলিশের কাছে অভিযোগ করব। কিন্তু কাউন্টার থেকে বলল, অভিযোগ করে পারলে কিছু করেন। ওদের নাকি কিছু হবে না।
বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করলেন কাজী পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার মো. মুজাহিদ। তিনি বলেন, আমরা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছি না। টিকিটে যে মূল্য আছে, সেটিই আদায় করছি।
যাত্রীদের অভিযোগ নিয়ে জানতে চাইলে টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাবেদ মাসুদ বলেন, আমাদের কাছে কেউ লিখিত বা মৌখিক কোনো অভিযোগ করেনি। তবে যেহেতু আপনি বললেন, আমরা খবর নিয়ে দেখছি। বাড়তি ভাড়া আদায়ের সুযোগ নেই।
সারাবাংলা/টিআর