Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আইন মেনে বিদেশ গেছেন হাজী সেলিম: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৫ মে ২০২২ ১৫:২১

ঢাকা: অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে দণ্ডিত ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিম আইন মেনেই থাইল্যান্ডে গিয়েছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

বৃহস্পতিবার (৫ মে) ইদুল ফিতরের ছুটি কাটিয়ে এসে প্রথম কর্মদিবসে সহকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় দণ্ডিত সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিম চিকিৎসার উদ্দেশ্যে থাইল্যান্ড যান, আবার ফিরেও এসেছেন। ১০ বছরের দণ্ড মাথায় নিয়ে এবং আদালতের দেওয়া আত্মসমর্পণের আদেশ থাকা সত্ত্বেও তিনি বিদেশ যেতে পারেন কি না, তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা-সমালোচনা হয়।

এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন, আইন মেনেই হাজী সেলিম বিদেশে গেছেন। আবার আইন মেনেই ফিরে এসেছেন।

মন্ত্রী বলেন, তিনি (হাজী সেলিম) আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটাননি। হাইকোর্টের সময়সীমার মধ্যেই তিনি ফিরে এসেছেন। এ নিয়ে প্রশ্ন তোলার কিছু নেই।

আরও পড়ুন-

এর আগে, গত শনিবার (৩০ এপ্রিল) শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে কঠোর গোপনীয়তার মধ্য দিয়ে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে যান হাজী সেলিম। তবে এ খবর জানাজানি হয় সোমবার (২ মে)।

দুদকের দায়ের করা মামলায় নিম্ন আদালতের পর হাইকোর্ট থেকেও হাজী সেলিমের ১০ বছরের কারাদণ্ড বহাল থাকায় অনেকেই ধারণা করেছিলেন, তিনি হয়তো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে দেশ ছেড়ে গেছেন। এ নিয়ে বিরোধী দলগুলোও সরব হয়ে ওঠে। তবে বৃহস্পতিবার (৫ মে) দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে থাই এয়ারওয়েজের টিজি-৩২১ ফ্লাইটে দেশে ফিরে এসেছেন হাজী সেলিম।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিম মদীনা গ্রুপের কর্ণধার। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তিনি।

হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন ও ৫৯ কোটি ৩৭ লাখ ২৬ হাজার ১৩২ টাকার তথ্য গোপনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর রাজধানীর লালবাগ থানায় মামলা করে দুদক। ওই মামলায় ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল হাজী সেলিমকে দুদক আইনের দুই ধারায় ১৩ বছর কারাদণ্ড দেন বিশেষ জজ আদালত। পাশাপাশি ২০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন হাজী সেলিম। ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট এক রায়ে তার সাজা বাতিল করেন। পরে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দুদক। ওই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের রায় বাতিল করে পুনরায় হাইকোর্টে শুনানির নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।

গত বছরের ৯ নভেম্বর হাজী সেলিমের মামলাটি হাইকোর্টে দ্রুত শুনানির জন্য কার্যতালিকাভুক্ত করতে উপস্থাপন করা হয়। একদিন পর ১১ নভেম্বর মামলার বিচারিক আদালতে থাকা যাবতীয় নথি (এলসিআর) তলব করেন হাইকোর্ট। পরে ২০২১ সালের ৩১ জানুয়ারি মামলার আপিল শুনানি শুরু হয়। ৯ মার্চ বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ হাজী সেলিমের ১০ বছরের কারাদণ্ড বহাল রাখেন। তবে সম্পত্তির বিবরণী দাখিল না করার দায়ে দেওয়া তিন বছরের সাজা বাতিল করেন আদালত। একইসঙ্গে রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে তাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়।

গত ১০ ফেব্রুয়ারি ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি প্রকাশিত হয়। তবে এখন পর্যন্ত হাজী সেলিম আত্মসমর্পণ করেননি। তবে হাজী সেলিমের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি প্রকাশের পর ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে আপিল করার সুযোগ আছে। তারা নিয়ম মেনে আপিলও করবেন। আপিলের রায়ের ওপর বাকি সব বিষয় নির্ভর করবে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, হাইকোর্টের রায়ে সাজা বহাল থাকায় হাজী সেলিমের সংসদ সদস্যপদ নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। কেননা, সংবিধানের ৬৬ (১) (ঘ) ধারায় বলা আছে, কোনো ব্যক্তি নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে দোষী হয়ে ন্যূনতম দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে তিনি সংসদ সদস্য হওয়ার যোগ্যতা হারাবেন। তবে হাজী সেলিমের আইনজীবী বলছেন, তারা আপিল করলে সেই রায়ের ওপর নির্ভর করবে সংসদ সদস্যপদ।

সারাবাংলা/জেআর/টিআর

আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হাজী সেলিম

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর