Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শীল বাহিনীর হামলা ও মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন

সারাবাংলা ডেস্ক
৭ মে ২০২২ ১৫:৪৮

ঢাকা: পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ থানাধীন চৈতা গ্রামের মানুষ শীল বাহিনীর তাণ্ডবে অতিষ্ঠ। এ বাহিনীর নেতৃত্বে অরুণ চন্দ্র শীল ও তার ছেলে অঞ্জন শীল রয়েছে। এই বাহিনীতে সক্রিয় আছে দিপু শীলসহ অনেকেই।

ভৌগোলিকভাবে চৈতা গ্রাম পটুয়াখালী, বরিশাল ও বরগুনার বর্ডার এলাকায় হওয়ায় পার্শ্ববর্তী জেলার কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসী এই বাহিনীর সদস্য হিসেবে সক্রিয় আছে। এরা শুধু সন্ত্রাসী কার্যক্রমেই সীমাবদ্ধ নয় ‘সংখ্যালঘু’ নাম ব্যবহার করে বহু মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে চৈতা গ্রামের জালাল মোল্লা বলেন, ‘ছাগলে গাছ খাওয়ার তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমার সঙ্গে অরুণ শীলের সামান্য কথা কাটাকাটি হয়। সেদিন রাতেই তার নিজ বাড়ির মন্দিরের প্রতিমা ভেঙে আমার বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু নির্যাতন ও প্রতিমা ভাঙচুর মামলা দিয়ে ঈদের চাঁদ রাতে গ্রেফতার করায়। অভিযোগ মিথ্যে প্রমাণ হলে আদালতে মামলা খারিজ হয়ে যায়।’

চৈতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আমার ক্রয়কৃত জমি দিপু শীল ও অরুণ চন্দ্র শীল দখল করতে এলে আমি তা বাধা দেই। পরে আমিসহ দশ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি তিন লাখ টাকা লুটসহ দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলা করে। বিষয়টি সরেজমিনে তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হয়।’

একই গ্রামের শাহীন আকন্দ বলেন, ‘আমাকে জমি বিক্রির কথা বলে এক লাখ টাকা নিয়েছে। পরে জানতে পারি ওই জমির মালিক তিনি নন। ওই জমি তার জবর-দখলের। এমনকি তার জবরদখলের জমি দেখিয়ে আরও তিনজনের কাছে থেকে টাকা নিয়েছে। আমি টাকা ফেরত চাইলে সে আমাকে হুমকি দেয়।’

বিজ্ঞাপন

একই গ্রামের রাজ্জাক মোল্লা বলেন, ‘একজন সম্মানিত লোককে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করতে শুনলে আমি তাকে গালমন্দ করা থেকে বিরত থাকতে বলি এরপর তিনি আমাকেও অকথ্য ভাষায় গালাগালি শুরু করে এবং জীবননাশের হুমকি দেয়। কয়েকদিন পরে জানতে পারি অন্য লোক দিয়ে শীল বাহিনী আমার বিরুদ্ধে দুইটি মামলা দিয়েছে।’

তার মামলা থেকে রেহাই পাননি সাংবাদিকও আজকের বসুন্ধরা পত্রিকার সাংবাদিক মাসুদ রানা। অরুণ শীলকে দিবালোকে ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঘুরতে দেখে ছবি তোলার চেষ্টা করলে তার ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়।

স্থানীয় এক ব্যক্তির হস্তক্ষেপে ক্যামেরা ফেরত পায় এবং কয়েকদিন পরে অন্য লোকের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির একটি মামলা দায়ের করে।

দৈনিক ভোরের পাতা পত্রিকার সিনিয়র সাব-এডিটর জাওহার ইকবাল খান বলেন, ‘অরুণ শীল ও তারপুত্র অঞ্জন সিল আমাদের অনেক জমি-জবর দখল করে আছে। জমি ফেরত চাইলে আমাকে হুমকি দেয় এমনকি তার বাহিনী নিয়ে দেশি অস্ত্রসহ ধাওয়া করে। এ বিষয়ে স্থানীয় থানায় একটি ডায়েরি করা আছে।’

জাওহার ইকবাল বলেন, ‘সাংবাদিকদের একটি অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর উপস্থিতিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের হল রুমে যে তারিখে আমি একটি প্রোগ্রামে সঞ্চালনা করেছিলাম, ওই তারিখ দেখিয়ে আমার বিরুদ্ধে দিপু শীলকে দিয়ে একটি মিথ্যা মামলা করায়। এমনকি আমার পরিবারের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করেছে।’

তার মিথ্যা মামলা থেকে রেহাই পায়নি তার নিজ বাড়ির হিন্দু পরিবারের দিলীপ চন্দ্র শীলও। পারিবারিক ঝামেলার জের ধরে দিপু শীলকে দিয়ে লুট ও চাঁদাবাজির মামলা দিয়েছে যা পুলিশ তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।

সন্ত্রাসী কার্যক্রমের পাশাপাশি রয়েছে মাদক ব্যবসায় সক্রিয়। গ্রামটির দুই জেলার বর্ডারে হওয়ায় পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে মাদক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের সঙ্গে রয়েছে সম্পৃক্ত। এই চক্রের কয়েক জন গ্রেফতারও হয়েছে।

স্থানীয়দের দাবি শীল বাহিনীকে দমন করতে না পারলে সংখ্যালঘু নির্যাতনের নামে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা চলতে থাকবে এতে আন্তর্জাতিক মহলে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে।

অনেকের ধারণা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশে সাম্প্রদায়িক উস্কানি বন্ধ না হলে এ অঞ্চলে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হতে পারে। তাই শীল বাহিনীকে আইনের আওতায় এনে তাদের বিচার দ্রুত কার্যকর করা সময়ের দাবি।

সারাবাংলা/একে

পটুয়াখালী শীল বাহিনী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর