পুঠিয়ার সাবেক ওসি সাকিলের ৬ মাসের জামিন
১৬ মে ২০২২ ২০:২৮
ফাইল ছবি
ঢাকা: শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার এজাহার পাল্টে দেওয়ার অভিযোগে রাজশাহীর পুঠিয়া থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাকিল উদ্দিন আহমেদকে ছয় মাসের জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সোমবার (১৬ মে) বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিন ও বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতের সাকিল উদ্দিনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মুনসী মনিরুজ্জামান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী।
এর আগে, এজাহার পাল্টে দেওয়ার ঘটনায় উচ্চ আদালতের নির্দেশে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি এজাহার পাল্টে দেওয়ার অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ওসি সাকিলকে পুলিশ বাহিনী থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
পরে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুসারে গত ১২ ডিসেম্বর রাজশাহী বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে জামিন না দিয়ে জেল হাজতে পাঠানো হয়। এরপর তিনি হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
গত ২৪ জানুয়ারি রাজশাহীর পুঠিয়ায় শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার এজাহার পাল্টে দেওয়ার অভিযোগে সাবেক ওসি সাকিল উদ্দিন আহমেদের নামে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন। কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন সংস্থার সহকারী পরিচালক আল আমিন। আর মামলাটি তদন্ত করছেন, দুদকের সহকারী পরিচালক আমির হোসেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, নিহত শ্রমিক নেতার মেয়ে নিগার সুলতানা আট জনের নাম উল্লেখ করে থানায় এজাহার দিয়েছিলেন। কিন্তু থানার ওসি কারসাজি করে সেই এজাহার পাল্টে দেন। ইচ্ছেমতো ছয়জনের নাম উল্লেখ করেন। এ ছাড়া ঘটনার বিবরণও পাল্টে দেন। বেআইনিভাবে তিনি প্রাথমিক তথ্যবিবরণী (এফআইআর) পাল্টে দিয়ে বিতর্কিত মামলা রুজু করেন। বিচার বিভাগীয় তদন্তে ওসি সাকিল আহমেদের এ কাজ নিয়ে সন্দেহজনক ভূমিকা উঠে আসে।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মতো দায়িত্বশীল একজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ নিঃসন্দেহে গুরুতর। যা দণ্ডবিধি ১৬ ও ১৭ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ওসি সাকিল পুলিশ রেগুলেশন অব বেঙ্গলের প্রবিধান ২৪৩ এবং ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫৪ ধারা সুস্পষ্টভাবে লঙ্ঘন করেছেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে অপরাধমূলক অসদাচরণ করেছেন তিনি।
তা ছাড়া ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন ওসি সাকিল।
২০১৯ সালের ১১ জুন পুঠিয়ার কাঁঠালবাড়িয়া এলাকার ‘এসএস ব্রিকস ফিল্ড’ নামে ইটভাটা থেকে শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় নিহত নুরুল ইসলামের মেয়ে নিগার সুলতানা থানায় মামলা করেন। কিন্তু তার এজাহার গ্রহণ না করে তার কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেন সাবেক ওসি সাকিল।
পরে মামলার এজাহার ও প্রাথমিক তথ্য বিবরণী (এফআইআর) সংগ্রহ করে দেখেন, সেখানে নুরুল ইসলামের মেয়ে নিগার সুলতানার দেওয়া আট আসামির নাম নেই এজাহারে ঘটনার বিবরণও পাল্টে দেওয়া হয়েছে। আসামির তালিকায় ছয় জনের নাম যুক্ত করা হয়েছে।
সারাবাংলা/কেআইএফ/একে
