Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরীর মৃত্যুতে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর গভীর শোক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৯ মে ২০২২ ১৮:০২

ঢাকা: প্রখ্যাত সাংবাদিক আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, বীরপ্রতীক, এমপি।

মন্ত্রী আজ এক শোক বার্তায় মরহুমের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

প্রথিতযশা সাংবাদিক ও সাহিত্যিক আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরী বৃহস্পতিবার (১৯ মে) যুক্তরাজ্যের স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে উত্তর লন্ডনের বার্নেট হাসপাতাল মৃত্যুবরণ করেন।

আবদুল গাফফার চৌধুরীর ব্যক্তিগত সহকারী জাহানারা ঝর্ণা জানান, ৮৪ বছর বয়সী আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানান জটিলতায় ভুগছিলেন।

আবদুল গাফফার চৌধুরী ১৯৩৪ সালের ১২ ডিসেম্বর বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ থানার উলানিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার মাতা জোহরা খাতুন। পিতা ওয়াহেদ রেজা চৌধুরী ভূস্বামী হলেও ছিলেন ব্রিটিশশাসিত ভারতের একজন মুক্তি সৈনিক। বরিশাল জেলা কংগ্রেসের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

আবদুল গাফফার চৌধুরী ১৯৫৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েশন করেন। এরপর সাংবাদিকতা করেছেন ঢাকার বিভিন্ন কাগজে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে নিবন্ধিত স্বাধীন বাংলার প্রথম পত্রিকা সাপ্তাহিক ‘জয় বাংলা’র প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী সম্পাদক ছিলেন তিনি। এ ছাড়াও তিনি ওই সময় ‘যুগান্তর’ ও ‘আনন্দবাজার’ পত্রিকায় কাজ করেছেন।

বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের পর তার লেখা ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো’ গানটি তাকে খ্যাতি এনে দেয়। প্রথমে তিনি নিজেই গানটিতে সুর করেছিলেন। পরে শহিদ আলতাফ মাহমুদ এ গানে সুরারোপ করেন এবং এ সুরেই এখন গানটি গাওয়া হয়। বিবিসি বাংলা বিভাগের দর্শকদের জরিপে এই গান বাংলা গানের ইতিহাসে তৃতীয় সেরা গানের মর্যাদা পায়।

বিজ্ঞাপন

স্বাধীনতার পর, ১৯৭৪ সালের ৫ অক্টোবর স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য তিনি সপরিবারে লন্ডনে চলে যান। সেখানে ‘নতুন দিন’ নামে একটি পত্রিকা বের করেন। এরপর ১৯৭৬ সালে তিনি ‘বাংলার ডাক’ নামে এক সাপ্তাহিক পত্রিকার সম্পাদনা করেন। ‘সাপ্তাহিক জাগরণ’ পত্রিকায়ও তিনি কিছুদিন কাজ করেছেন।

১৯৮৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তিনি সাত জন অংশীদার নিয়ে ‘নতুন দিন’ পত্রিকা বের করেন। এরপর ১৯৯০ সালে ‘নতুন দেশ’ এবং ১৯৯১ সালে ‘পূর্বদেশ’ বের করেন। প্রবাসে বসেও আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরী বাংলাদেশের প্রধান পত্রিকাগুলোতে নিয়মিত লিখে যাচ্ছিলেন।

বাংলাদেশের শীর্ষ দৈনিকগুলোতে প্রকাশিত আবদুল গাফফার চৌধুরীর রাজনীতি, সমসাময়িক ঘটনা ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী নিয়ে লেখালেখি করেছেন নিয়মিত।

সাংবাদিকতার পাশাপাশি গল্প, উপন্যাস, স্মৃতিকথা, ছোটদের উপন্যাসও লিখেছেন গাফফার চৌধুরী। তার রচিত গ্রন্থের সংখ্যা প্রায় ৩৫টি। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘চন্দ্রদ্বীপের উপাখ্যান’, ‘নাম না জানা ভোর’, ‘নীল যমুনা’, ‘শেষ রজনীর চাঁদ’, ‘সম্রাটের ছবি’, ‘ধীরে বহে বুড়িগঙ্গা’, ‘বাঙালি না বাংলাদেশি’সহ প্রভৃতি। এ ছাড়াও তিনি কয়েকটি পূর্ণাঙ্গ নাটক লিখেছেন। এর মধ্যে রয়েছে ‘একজন তাহমিনা’ ‘রক্তাক্ত আগস্ট’ ও ‘পলাশী থেকে বাংলাদেশ’।

এগুলোর বাইরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের হত্যাকাণ্ডের ওপর গাফফার চৌধুরী ‘পলাশী থেকে ধানমণ্ডি’ নামে একটি চলচ্চিত্র তৈরি করেছেন। বঙ্গবন্ধুর ওপরেই আরেকটি চলচ্চিত্র, ‘দ্য পোয়েট অব পলিটিকস’ প্রযোজনা করছেন তিনি।

কাজের স্বীকৃতির জন্য জীবনে অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

উল্লেখযোগ্য হলো- বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৬৭), একুশে পদক, ইউনেসকো সাহিত্য পুরস্কার এবং স্বাধীনতা পদক (২০০৯)।

সারাবাংলা/একে

আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর