Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

প্রথমবারের মতো ঋণের কিস্তি দিতে ব্যর্থ শ্রীলংকা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১৯ মে ২০২২ ১৮:২৬

বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ শূন্যের কোঠায় নেমে আসায় ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে পারেনি শ্রীলংকা। দেশটির ৭০ বছরের ইতিহাসে এই প্রথমবার তারা বিদেশি ঋণের কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হলো।

বিবিসির খবরে বলা হয়, বিদেশি ঋণের সুদ বাবদ শ্রীলংকার ৭ কোটি ৮০ লাখ ডলারের কিস্তি ৩০ দিনের গ্রেস পিরিয়ডসহ পরিশোধের জন্য তারিখ ছিল গতকাল বুধবার (১৮ মে)। কিন্তু এই কিস্তি পরিশোধ করতে পারেনি শ্রীলংকা, যা তাদের ইতিহাসে প্রথম। শ্রীলংকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বলেছেন, তারা এখন আগাম খেলাপিতে পরিণত হয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

শ্রীলংকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর পি নন্দলাল বিরাসিংহে বলেন, আমাদের অবস্থান স্পষ্ট। আমরা বলে দিয়েছি— ঋণ পুনর্গঠনের আগ পর্যন্ত আমাদের পক্ষে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করা সম্ভব হবে না। অর্থাৎ আমরা আগাম খেলাপিতে পরিণত হয়েছি। এর অন্যান্য কারিগরি সংজ্ঞায়ন থাকতে পারে। কিন্তু তারা আমাদের খেলাপি বিবেচনা করতেই পারে।

আরও পড়ুন- শ্রীলংকায় পেট্রোলের মজুত শেষ!

কোনো সরকার যখন ঋণদাতাকে সঠিক সময়ে ঋণের টাকা বা কিস্তি পরিশোধ করতে পারে না, তখন দেশটি খেলাপি দেশে পরিণত হয়। খেলাপি দেশে পরিণত হওয়া একটি রাষ্ট্রের জন্য অমর্যাদাকর। কারণ এ ধরনের কোনো দেশের জন্য অন্য দেশ বা আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে ঋণ পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। অর্থনৈতিক দুরবস্থায় বিদেশি ঋণের সংস্থান না থাকলে অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক সংকট আরও তীব্র হয়ে উঠতে পারে।

এ পরিস্থিতিতেও বিদেশি ঋণের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে শ্রীলংকা। শ্রীলংকা সরকার এর আগে জানিয়েছিল, এ বছরেই তাদের ৪শ কোটি মার্কিন ডলার পর্যন্ত সহায়তা প্রয়োজন। সেটি পাওয়ার জন্য এরই মধ্যে তারা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে কথা বলেছে।

বিজ্ঞাপন

তবে শ্রীলংকার মুদ্রাস্ফীতি আরও বাড়তে পারে বলে সতর্ক করছেন গভর্নর বিরাসিংহে। তিনি বলেন, মুদ্রাস্ফীতি এখন ৩০ শতাংশের মতো রয়েছে। আগামী কয়েক মাসে এটি ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে।

গত ৭০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটকাল পার করছে শ্রীলংকা। দেশটিতে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে বহু গুণে। এর মধ্যে করহার কমিয়ে দেওয়ার ‘জনতুষ্টিবাদী’ সিদ্ধান্তে রাজস্ব কমে গেছে। বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ শূন্যের কোঠায় নেমে যাওয়ায় আমদানি ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি মুদ্রাস্ফীতির কারণে ওষুধসহ নিত্যপণ্যের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে।

এ পরিস্থিতিতে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু করে দেশটির জনগণ। প্রবল বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। প্রেসিডেন্ট পদে থাকা তার ভাই গোটাবায়া রাজাপাকসের পদত্যাগের দাবিও উঠেছিল। তবে তিনি পদত্যাগ করেননি। তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রনিল বিক্রমাসিংহের নাম ঘোষণা করেন।

পরে গত ১২ মে শ্রীলংকার নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন রনিল। তিনি নিজেও শপথ নিয়ে বলেন, তার সরকারের প্রথম কাজ হবে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার। শ্রীলংকার নাগরিকদের অন্তত তিন বেলা খাবারের সংস্থান তিনি করতে চান। এর জন্য বিদেশিদের সহায়তা করার আহ্বানও জানান তিনি।

সারাবাংলা/টিআর

ঋণখেলাপি ঋণের কিস্তি শ্রীলংকা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর