বিলাসপণ্যে বাড়তে পারে কর, ৩ প্রতিষ্ঠানকে রূপরেখা তৈরির নির্দেশ
১৯ মে ২০২২ ১৯:৪০
ঢাকা: দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় চলমান পরিস্থিতি বিলাস পণ্য আমদানিতে বাড়তি কর আরোপসহ অন্যান্য বিধিনিষেধ আসতে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য কী করণীয়— আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই অর্থ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংককে এ সংক্রান্ত একটি স্পষ্ট রূপরেখা প্রণয়ন করতে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (১৯ মে) মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। পরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্যের বাড়তি দাম ইস্যুতে মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এক পর্যায় বৈঠকে অর্থ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। পরিস্থিতি মোকাবিলায় পর্যাপ্ত ও সার্বিক কী ব্যবস্থা নিয়ে সবার কাছে তুলে ধরা যায়, সে বিষয়গুলো নির্ধারণ করতে দুই মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন- জুনের শেষে উদ্বোধন, ‘পদ্মাসেতু’ নামই রাখার ইঙ্গিত
সচিব বলেন, বিশেষ করে এই যে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাচ্ছে বা সরবরাহ কমে যাচ্ছে— এ পরিস্থিতি কীভাবে আমরা সামাল দিতে পারব, কোন কোন জায়গায় বিধিনিষেধ আরোপ করলে ভালো হয় বা কোথায় সুযোগ উন্মুক্ত করে দিতে— এ বিষয়গুলো আলাপ-আলোচনা করে ব্যবস্থার কথা তুলে ধরতে বলা হয়েছে তাদের।
সরকারিভাবেই মার্কিন ডলারের দাম বেড়েছে দেশে। খোলা বাজারে এই দাম বেড়েছে আরও বেশি। প্রথমবারের মতো খোলা বাজারে ডলারের দাম ছাড়িয়েছে ১০০ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে ডলারের সরবরাহও কম। এ পরিস্থিতি নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
তিনি বলেন, ডলারের এই যে সংকট— এটি কীভাবে সমাধান করা যায়, তা বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বসে দুই-তিন দিনের মধ্যে গণমাধ্যমের সামনে বসতে বলা হয়েছে। সবকিছু নিয়েই আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংককে বসে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিতে বলা হয়েছে।
বিলাসপণ্য আমদানিতে বিধিনিষেধ আরোপের কথা জানিয়ে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এখন বৈশাখ মাস। আমাদের এখানে আম, জাম, কাঁঠালের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকবে। তাদের (২ মন্ত্রণালয় ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক) আপনি সাজেশন দিলেন, এই সময়ের জন্য ফল আমদানিতে ট্যাক্স বাড়িয়ে দেন, যেন বেশি ফল না আসে। অথবা অন্য যেসব বিলাসপণ্য (ফ্যান্সি আইটেম) আছে, সেগুলোতে ট্যাক্স বাড়িয়ে দেন, যেন এসব পণ্য কম আসে।
আরও পড়ুন- অনুমতি ছাড়া হাট বসালে সেই জায়গা সরকার নিয়ে নেবে
সচিব বলেন, বছরে আমাদের দেশে ৮/৯ হাজার কোটি টাকার ফল আসে। ৯ হাজার কোটি টাকা মানে এক বিলিয়ন ডলারের বেশি। ফলে এসব ফল বা ফ্যান্সি আইটেমে ট্যাক্স বাড়ালে জরুরি পণ্যের বাইরে আমদানি কমবে। এ ধরনের পরামর্শ যৌক্তিক কি না, সেসব বিবেচনায় নিয়ে তাদের দুই-তিন দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে।
সারাবিশ্বেই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রয়েছে জানিয়ে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, সারাবিশ্বই কিন্তু ভুগছে। কালই দেখলাম, গ্রেট ব্রিটেনে মুদ্রাস্ফীতি ৯ শতাংশ হয়েছে। আমেরিকাতে ৮ শতাংশের বেশি। আমরা তো বিশ্বের বাইরে না, আমরাও বিশ্বের অংশ। সেক্ষেত্রে আমাদের আরেকটু যৌক্তিক আচরণ করতে হবে। আমরা গণমাধ্যমকে অনুরোধ করব, আপনারা একটু ইতিবাচক থাকুন। আমরা সবাই যেন একটু সাশ্রয়ী এবং যৌক্তিক থাকি।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর
ডলারের দাম ডলারের দাম বৃদ্ধি দ্রব্যমূল্য দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি মন্ত্রিপরিষদ সচিব মন্ত্রিসভার বৈঠক