খালে বাঁধ: সামান্য বৃষ্টিতে পানিবন্দি চট্টগ্রাম নগরী
২১ মে ২০২২ ১৪:১৪
চট্টগ্রাম ব্যুরো: ঘণ্টাখানেকেরও কম সময়ের টানা বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। কর্মস্থলে যেতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের বাড়তি ভাড়া গুনতে হয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানান, চলমান জলাবদ্ধতা নিরসনের আওতায় বিভিন্ন খালে ও ড্রেনে দেওয়া বাঁধের কারণে টানা বৃষ্টিতে পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে জমে যায়। তবে বৃষ্টি থেমে যাওয়ার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই পানি সরে যায়।
শনিবার (২১ মে) ভোরে চট্টগ্রাম নগরীসহ আশপাশের এলাকায় বজ্রসহ বৃষ্টিপাত শুরু হয়। প্রথমদিকে টানা বৃষ্টি হলেও পরে থেমে থেমে হাল্কা বৃষ্টিপাত স্থায়ী ছিল সকাল ৯টা পর্যন্ত।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ চৌধুরী সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, শনিবার ভোর ৬টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। দুপুর ১২টা পর্যন্ত রেকর্ড করা বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৪৩ মিলিমিটার। এসময় ঘণ্টায় ৫০ মাইল বেগে বাতাস বয়ে যায়।
বৃষ্টিতে নগরীর দুই নম্বর গেট, মুরাদপুর, বাকলিয়া, ডিসি রোড, চকবাজার, চান্দগাঁও, ফিরিঙ্গিবাজার, আলকরণ এলাকায় জলাবদ্ধতা কোথাও গোড়ালিসমান, কোথাও হাঁটু পর্যন্ত পানি ওঠে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা এই পানি জমে ছিল। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে মেঘ কেটে রোদ ওঠে।
এ সময় অনেক এলাকায় পানি নেমে গেলেও ফিরিঙ্গিবাজার-আলকরণসহ কিছু কিছু এলাকায় জমেই ছিল। বৃষ্টিতে নালা থেকে ময়লা-আবর্জনা রাস্তায় এসে পড়ে। এতে রাস্তা দিয়ে হাঁটতেও বিপাকে পড়তে হয়েছে।
আলকরণের বাসিন্দা বাঁশখালীর একটি কলেজের শিক্ষক অয়ন দে সারাবাংলাকে বলেন, ‘বৃষ্টির মধ্যে রাস্তায় প্রায় এক হাঁটু পানি জমে যায়। সব নালার ময়লা পানি। কলেজে যাওয়ার জন্য বের হয়ে গাড়ি পাচ্ছিলাম না। পরে ফিরিঙ্গিবাজার থেকে শাহ আমানত সেতু পর্যন্ত ১০০ টাকা ভাড়ায় অটোরিকশা ঠিক করে গিয়েছি।’
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি মোবারক আলী সারাবাংলাকে বলেন, ’৩০-৩৫ মিনিট টানা বৃষ্টি হয়েছে। এরপর হাল্কা বৃষ্টি। মাত্র ৪৫ মিলিমিটারের মতো বৃষ্টিতে শহরের অনেক এলাকায় পানি জমে গেছে। চাক্তাই খাল, মির্জা খাল, টেকপাড়া খালসহ আরও কয়েকটি খাল সংলগ্ন এলাকাগুলোতে বেশি পানি উঠেছে। জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের জন্য খালগুলোতে বাঁধ দেয়া হয়েছে। সেজন্য পানি যেতে পারেনি। বাস্তবায়নকারীরা বলেছেন, বর্ষার আগে বাঁধ খুলে দেয়া হবে। তখন আশা করি এই পরিস্থিতি থাকবে না।’
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। এ প্রকল্পের আওতায় নগরীর বিভিন্ন খালের ভেতরের অংশে অস্থায়ী বাঁধ দিয়ে জলকপাট ও প্রতিরোধ দেওয়াল নির্মাণের কাজ চলছে। খালে দেওয়া বাঁধের কারণে ব্যাপক জলাবদ্ধতার আশঙ্কা করছিলেন সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। তিনি বাঁধ অপসারণের জন্য সময়ও বেঁধে দিয়েছিলেন। তবে বাঁধ সরেনি।
সারাবাংলা/আরডি/এএম