জব্দ করা গাড়ি গোপনে বিক্রির অভিযোগে অভিযুক্ত এসআই, তদন্তে কমিটি
২৩ মে ২০২২ ২১:৩৮
ভৈরব (কিশোরগঞ্জ): বিভিন্ন সময় অভিযানে জব্দ করা গাড়ি ও মোটরসাইকেল গোপনে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে ভৈরব থানার উপপরিদর্শক (মালখানা কর্মকর্তা) আবু সাঈদের বিরুদ্ধে। দীর্ঘ দিন ধরে ভৈরব থানার মাঠে পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকা গাড়িগুলোর মধ্যে প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেল ও সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ ১৪টি যানবাহন তিনি বিক্রি করে দিয়েছেন বলে জানা যায়।
এমন অভিযোগে আলোচনা-সমালোচনা ছড়িয়ে পড়লে ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করে দিয়েছেন কিশোরগঞ্জ পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ। কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোস্তাক সরকারকে।
ভৈরব থানাসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, এ বছরের ২৭ ও ২৮ মার্চ এবং ১৫ এপ্রিল তিন দফায় ভৈরব থানা কমপ্লেক্সের ভেতরে জব্দ করে রাখা বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের মধ্যে মালিকবিহীন অন্তত ১৪টি যানবাহন বিক্রি করে দেওয়ার গুঞ্জন ওঠে। এর মধ্যে রয়েছে ছয়টি প্রাইভেটকার, পাঁচটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও তিনটি মোটরসাইকেল।
ভৈরব থানার একাধিক পুলিশ সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রাষ্ট্রপতির ইটনা, মিটামইন ও অষ্টগ্রাম সফরের সময় ভৈরব থানার অধিকাংশ পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যকে ওইসব এলাকায় দায়িত্ব দেওয়া হয়। সে সুযোগ কাজ লাগিয়ে মালখানার দায়িত্বে থাকা এসআই আবু সাঈদ ২৭ ও ২৮ মার্চ দুপুরে ছয়টি প্রাইভেটকার ও তিনটি মোটরসাইকেল আদালতের অনুমতির কথা বলে ডাম্পিং স্টেশন থেকে সরিয়ে ফেলেন। পরে ১৫ এপ্রিল একই কায়দায় পরিত্যক্ত পাঁচটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা সরিয়ে নেন। এসব গাড়ি ঢাকার একটি চোরাই সিন্ডিকেটের কাছে আনুমানিক ১০ লাখ টাকায় তিনি বিক্রি করে দেন।
এ অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করছেন অভিযুক্ত এসআই আবু সাঈদ। তিনি বলেন, আদালতের অনুমতি নিয়ে গাড়িগুলো প্রকৃত মালিকদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। গাড়ি বিক্রি করে দিয়েছি বলে থানারই কিছু লোক আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে অপপ্রচার করছে।
তবে আদালতের অনুমতি নিয়ে কতগুলো গাড়ি মালিকদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে— জানতে চাইলে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য দিতে পারেননি তিনি। অন্যদিকে এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে অভিযুক্ত এসআই আবু সাঈদ বিভিন্নভাবে চেষ্টা-তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও জানিয়েছে ভৈরব থানার একাধিক সূত্র।
এ বিষয়ে জানতে কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মীর মাশরুকুর রহমান খালেদের মোবাইল নম্বরে ফোন দেওয়া হয়। তিনি বলেন, জব্দ করা গাড়ি বিক্রি করার কোনো সুযোগ নেই। এ ধরনের একটি অভিযোগের কথা শুনে আমি একটি তদন্ত কমিটি করে দিয়েছি। তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযোগের সত্যতা মিললে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ওই তদন্ত কমিটির প্রধান কিশোরগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোস্তাক সরকার বলেন, থানার জব্দ করা গাড়ি বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে— এমন অভিযোগ পেয়ে সেটি তদন্তের জন্য পুলিশ সুপার আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। তদন্তে করে শিগগিরই প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
সারাবাংলা/টিআর