স্যাটেলাইট নিয়ে সুন্দরবনে নামল ১২টি বাটাগুর বাসকা কচ্ছপ
২৬ মে ২০২২ ১৭:৫১
বাগেরহাট: সুন্দরবন এলাকায় বিলুপ্তপ্রায় বাটাগুর বাসকা কচ্ছপের উপস্থিতি কেমন, তা জানতে এই প্রজাতির ১২টি কচ্ছপকে অবমুক্ত করা হয়েছে বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের কালিরচরের ছেদনখালী খালের চরে। প্রতিটি কচ্ছপের সঙ্গেই যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে স্যাটেলাইট। সেই স্যাটেলাইট থেকে মিলবে কচ্ছপগুলোর গতিবিধিসহ এই এলাকায় একই প্রজাতির অন্যান্য কচ্ছপের খবরাখবর।
বৃহস্পতিবার (২৬ মে) সকালে এসব কচ্ছপ বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের কালিরচরের ছেদনখালী খালের চরে ছেড়ে দেওয়া হয়। বিলুপ্তপ্রায় বাটাগুর বাসকা প্রজাতির এই ১২টি কচ্ছপের মধ্যে ১০টি সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের বন্যপ্রাণী প্রজননকেন্দ্র করমজলের। বাকি দুইটি কচ্ছপ খুলনা ও পটুয়াখালী থেকে উদ্ধার করা। সেগুলোর গায়ে ভারতীয় স্যাটেলাইট যুক্ত ছিল।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজননকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির বলেন, কচ্ছপের মধ্যে বাটাগুর বাসকা একটি মহাবিপন্ন প্রজাতি। করমজল বন্যপ্রাণী প্রজননকেন্দ্রে বাটাগুর বাসকা কচ্ছপের প্রজনন করা হয়েছিল। সেখান থেকে ১০টি কচ্ছপ নিয়ে ছাড়া হয়েছে ছেদনখালী খালের চরে। এছাড়া ভারতীয় স্যাটেলাইটযুক্ত দুইটি কচ্ছপ খুলনা ও পটুয়াখালী থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল। ওই দুইটি কচ্ছপও এদের সঙ্গে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
কচ্ছপগুলোর সঙ্গে স্যাটেলাইট যুক্ত করে দেওয়ার কথা জানিয়ে আজাদ কবির বলেন, একটা সময় ছিল যখন সুন্দরবনের এ ধরনের ঈষৎ লবণাক্ত পানিতে বাটাগুর কচ্ছপ ছিল। বর্তমানে এ ধরনের কচ্ছপ আর দেখা যায় না। সুন্দরবনের কোথাও এ ধরনের কচ্ছপ আছে কি না, তা খুঁজে বের করতে ও কচ্ছপের জীবনাচার জানার জন্য কচ্ছপগুলো অবমুক্ত করা হয়েছে। স্যাটেলাইট থেকে আমরা এ সংক্রান্ত তথ্যগুলো পাব।
কচ্ছপগুলো অবমুক্ত করার সময় সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন, বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের খুলনার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা নির্মল কুমার পাল, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু, অষ্টিয়ার ভিয়েনা জু’র কিউরেটর টনিসহ সুন্দরবন বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির কচ্ছপ বাটাগুর বাসকা সংরক্ষণের জন্য ২০১৪ সাল বাংলাদেশ বন বিভগ, অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা জু, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন এবং টিএসএ সম্মিলিতভাবে সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজননকেন্দ্রে সম্মিলিতভাবে কাজ করে আসছে।
বাটাগুর বাসকার তথ্য জানতে এর আগেও এই প্রজাতির কচ্ছপ অবমুক্ত করার হয়েছে সুন্দরবনে। এর মধ্যে ২০১৭ সালে দুইটি, ২০১৮ সালে পাঁচটি, ২০১৯ সালে পাঁচটি কচ্ছপ সুন্দরবনে অবমুক্ত করা হয়। করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালে সুন্দরবনে কোনো কচ্ছপ অবমুক্ত করা হয়নি।
সারাবাংলা/টিআর