‘বিরোধী রাজনৈতিক দলের ঐক্যেই বৃহত্তর গণআন্দোলন হবে’
২৭ মে ২০২২ ২০:০৭
ঢাকা: সরকার পতনের লক্ষ্যে বিরোধী রাজনৈতিক দলের ঐক্যেই আগামীতে বৃহত্তর গণআন্দোলন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার (২৭ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে এক আলোচনা সভায় তিনি এ আশাবাদ ব্যাক্ত করেন। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিক ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) এই আলোচনা সভা আয়োজন করে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘একটা কথা আমি অনুরোধ করে বলতে চাই— আজ যার যা অবস্থান আছে, সেই অবস্থান থেকে আমাদের লড়াই করতে হবে, রাজনীতিকে উদ্ধার করতে হবে। আমরা অবশ্যই জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করবার জন্য সচেষ্ট হব। আমাদের সব রাজনৈতিক নেতারা এ ব্যাপারে একমত হয়েছেন এবং কাজ করছেন।’
তিনি বলেন, ‘আমরা পরিষ্কার করে বলে আসছি, এই সরকারের অধীনে নির্বাচন সম্ভব নয়। এটা আমাদের কাছে পরীক্ষিত। আমরা আমাদের অভিজ্ঞতার থেকে দেখেছি যে আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচন সম্ভব নয়।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজ মানুষের ভোটের অধিকার নেই, ভোট ব্যবস্থাই এখন নেই। এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে আমরা কাজ শুরু করেছি। সমস্ত রাজনৈতিক জোট, সংগঠন, ব্যক্তি এবং জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসে যুদ্ধ শুরু করতে হবে, সেই যুদ্ধ হচ্ছে আমাদের গণতন্ত্রকে ফিরে পাওয়ার জন্য। কোনো দল বা ব্যক্তিকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য নয়।’
‘আমরা যুদ্ধ করছি আমাদের দেশকে ফিরে পাওয়ার জন্য। আসুন এই আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে এই প্রতিজ্ঞা আমরা করি, এই দেশকে রাহুমুক্ত করা ছাড়া, যে ভয়াবহ একটা দানব বসে আছে তাকে সরানো ছাড়া আমরা বাড়ি ফিরে যাব না,’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার— এটা সংবিধানে ছিলই। এটাতে সবাই ভোট দিতে পারবে, সবাই তার মতামত প্রকাশ করতে পারবে। এটা আমাদের একমাত্র পথ। আমার বিশ্বাস এটাতে আমরা সফল হলে এই ভয়াবহ দানবকে সরিয়ে জনগণের সংসদ, জনগণের রাষ্ট্র নির্মাণ করতে পারব।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে উনি (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) বলেছেন, পদ্মাসেতু ওপর থেকে টুস করে ফেলে দেওয়া হবে। পদ্মাসেতু কারও পৈত্রিক সম্পত্তি না। এ দেশের মানুষের কষ্টার্জিত যে অর্থ, এ দেশের মানুষ যে ট্যাক্স প্রদান করে, সেই ট্যাক্সের টাকা দিয়ে পদ্মাসেতু নির্মাণ করা হয়েছে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘যে ঘটনা তারা ঘটিয়েছে, এটাই তাদের আসল চেহারা। আওয়ামী লীগ একটি সন্ত্রাসী দল। তাদের জন্মের পর থেকে তারা সন্ত্রাসী।’
তিনি বলেন, ‘এখানে পুরনো যারা আছেন, তারা জানেন— আওয়ামী লীগের সম্মেলনে দলটির প্রতিষ্ঠাতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে পিটিয়ে রূপমহল হল থেকে বের করে দিয়েছিল। ওখান থেকে বেরিয়ে তিনি ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি গঠন করেছিলেন। সন্ত্রাসীদের কাছে এই মহান নেতা টিকতে পারেননি।’
এনপিপি চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামীর আবদুল হালিম, জাগপার খন্দকার লুতফর রহমান, ডিএলের সাইফুদ্দিন মনি, এনডিপির আবু তাহের, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, এলডিপির সাহাদাত হোসেন সেলিম, গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নুরসহ অন্যরা।
সারাবাংলা/এজেড/টিআর