গৃহশ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় আইনের দাবি বিলসের

ঢাকা: গৃহশ্রমিকদের অধিকার রক্ষার জন্য গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন, আইনি কাঠামো ও গৃহশ্রমিকদের শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস)।

রোববার (২৯ মে) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে মহান মে দিবসের চেতনা ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিক হিসেবে গৃহশ্রমিকদের অধিকার শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব দাবি জানায় সংগঠনটি।

এসময় বিলসের সহসভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিলসের পরিচালক নাজকা ইয়াসমিন, নির্বাহী পরিষদের যুগ্ম মহাসচিব ওয়াজেদুল ইসলাম খান, গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্কের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়ক আবুল হোসেন, রাশেদ খান মেননসহ অন্যরা।

সভায় লিখিত বক্তব্যে বিলসের নির্বাহী পরিষদের যুগ্ম মহাসচিব ওয়াজেদুল ইসলাম খান বলেন, আমাদের দেশে যারা গৃহশ্রমিকদের কাজ করে, তাদেরকে অবশ্যই শ্রম আইনের আওতায় এনে নিরাপত্তা ও সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, প্রায় ৮০ লাখ মানুষ গৃহশ্রমিকের কাজ করছে। সমাজে তাদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা উচিত। সমাজে গৃহশ্রমিকদের সম্মানজনক অবস্থান তৈরির মাধ্যমে দেশের নারী গৃহশ্রমিকদের সার্বিক কল্যাণ সাধন করতে হবে।

বিলসের পক্ষে সভায় যেসব দাবি জানানো হয় সেগুলো হলো— গৃহশ্রমিকদের সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ, জিডিপিতে গৃহশ্রমিকদের অবদান পৃথকভাবে চিহ্নিত করা, সাপ্তাহিক, অসুস্থতাজনিত, মাতৃত্বকালীন ও উৎসব ছুটি বাধ্যতামূলক করা, আইনি সুরক্ষা, চাকরির নিয়োগপত্র, রাষ্ট্র কর্তৃক আইএলও কনভেনশন-১৮৯ অনুসমর্থন, সামাজিক নিরাপত্তা, সংগঠিত হওয়ার আইনি অধিকার, যথাসময়ে বেতন নিশ্চিত করা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া।

পরে বক্তৃতায় রাশেদ খান মেনন বলেন, ১৩৬ বছর পরও মে দিবস প্রাসঙ্গিক। গৃহশ্রমিকদের এখনো আমরা শ্রমিক হিসেবেই অন্তর্ভুক্ত করতে পারিনি। শ্রম আইন সংশোধনের জন্য আমরা নানা সুপারিশ দিয়েছিলাম। কিন্তু যখন সংসদে উঠল, তখন আর সুপারিশগুলো নিয়ে আলোচনা হলো না।

তিনি আরও বলেন, বেশকিছু লবি এখানে কাজ করেছে। এগুলো বিশেষ করে ছিল গার্মেন্টস শিল্পের। প্রথমদিকে গার্মেন্টস শ্রমিকদের বাথরুমে যেতে দেওয়া হতো না, ওড়না দিয়ে মেশিনের সঙ্গে বেঁধে রাখা হতো। গার্মেন্টস শ্রমিকরা লড়াই করে তাদের অধিকার আদায় করে নিয়েছেন। গৃহশ্রমিকদেরও তাদের অধিকার আদায় করে নিতে হবে।

মেনন বলেন, আইন করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এখনো আইন হয়নি। আইন করতে হলে গৃহশ্রমিকদের সংগঠিত হতে হবে। শ্রমিক আন্দোলন যতক্ষণ পর্যন্ত জোরদার না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আইন আসবে না।

সভায় বিলসের সহসভাপতি আনোয়ার হোসেইন বলেন, মালিক-শ্রমিক ঐক্যের কথা বলা হয়। কিন্তু মালিক-শ্রমিক ঐক্য কখনোই সম্ভব না। কারণ মালিক শোষণের মানসিকতা নিয়ে শ্রমিককে কাজ করান।

সারাবাংলা/টিএস/টিআর

আইনের দাবি গৃহশ্রমিকদের অধিকার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিস বিলস