‘তৃণমূলের অর্থনীতির ভালো বলে চায়ের ব্যবহার বেড়েছে’
২ জুন ২০২২ ১৬:৪৯
ঢাকা: দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো হওয়ার কারণে দেশে চায়ের ব্যবহার বেড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
তিনি বলেন, তৃণমূলের মানুষের অর্থনীতির অবস্থা ভালো হওয়ার কারণে দেশে চায়ের ব্যবহার বেড়ে গেছে। এখন গ্রামগঞ্জের মানুষও চা খাচ্ছে। ফলে চা বিদেশে রফতানি করতে পারছি না। দেশে প্রতিবছর চায়ের উৎপাদন বাড়লেও এর সঙ্গে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় রফতানি সম্ভব হচ্ছে না। চায়ের উৎপাদন না বাড়লে আমাদের চা আমদানি করতে হতো।
বৃহস্পতিবার (২ জুন) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আগামী ৪ জুন দ্বিতীয় জাতীয় চা দিবস-২০২২ উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, গত বছর রেকর্ড পরিমাণ চা উৎপাদন হয়েছে। আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল দেশের প্রয়োজন মিটিয়ে চা আমরা বিদেশে রফতানি করব। কিন্তু প্রতিবছর আমাদের দেশে চায়ের চাহিদা বেড়ে যাচ্ছে। যার ফলে আমরা চা রফতানি করতে পারছি না। প্রতিবছর বাড়তি যে পরিমাণ চা উৎপাদিত হচ্ছে, বাড়তি সেই পরিমাণ চা দেশের লোকজন খেয়ে ফেলছে। উৎপাদন বাড়ার বিপরীতে চাহিদা বেশি বেড়ে গেলে বরং রফতানির লক্ষ্যমাত্রা বাদ দিয়ে চাহিদা পূরণে চা আমদানি করতে হবে।
দেশে চায়ের উৎপাদনের তথ্য তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ২০২১ সালে দেশে ৯ কোটি ৬৫ লাখ কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে। এর মধ্যে দেশের উত্তরাঞ্চলে রেকর্ড পরিমাণ ১ কোটি ৪৫ লাখ কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে, যা মোট উৎপাদিত চায়ের প্রায় ১৫ শতাংশ। আগামীতে এই পরিমাণ ২০ শতাংশে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দেশে এখন বড় চা বাগানের সংখ্যা ১৬৭টি এবং ক্ষুদ্রায়তন চা বাগানের সংখ্যা ৮ হাজারেরও বেশি।
চা আবাদে সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে টিপু মুনশি বলেন, দেশে চা উৎপাদনের বিপুল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। চায়ের নতুন ও উন্নত জাত উদ্ভাবনে গবেষণা বাড়ানো হয়েছে। কৃষকদের চা চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। এতদিন শুধু দেশের পাহাড়ি অঞ্চল অর্থাৎ চট্টগ্রাম, মৌলভীবাজার ও সিলেটে চা উৎপাদিত হতো। বর্তমানে দেশের উত্তারঞ্চল পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও ও লালমনিহাটের সমতল ভূমিতেও চা উৎপাদিত হচ্ছে। এতে করে অন্য ফসল চাষে অনুপযোগী জমিগুলোতে চা উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে। ফলে দেশে চা শিল্পের বিপুল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। চা উৎপাদনের এ ধারা অব্যাহত থাকলে আমরা দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে বিপুল পরিমাণ চা রফতানি করতে পারব।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আগামী ৪ জুন সকাল ১১টায় ওসমানি মিলনায়তনে দ্বিতীয়বারের মতো জাতীয় চা দিবস উদযাপন করা হবে। এখানে আলোচনা সভার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চা প্রদর্শন ও বিক্রির করার ব্যবস্থা থাকবে। অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক মন্ত্রী ইমরান আহমেদ উপস্থিত থাকবেন।
সারাবাংলা/জিএস/টিআর