Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জেন্ডার বাজেটের যথাযথ বাস্তবায়নে কাঠামোগত পরিবর্তনের দাবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
৬ জুন ২০২২ ১৭:৫১

ঢাকা: নারীর উন্নয়ন নিশ্চিত করতে এবং নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে জেন্ডার বাজেটের যথাযথ বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয়গুলোর সমন্বয় বাড়ানোর পাশাপাশি সমন্বিত তথ্য-উপাত্তভিত্তিক পর্যালোচনার ওপর জোর দিয়েছেন বাজেট বিষয়ক সংলাপে অংশগ্রহণকারী বক্তারা।

সোমবার (৬ জুন) রাজধানীর কাওরান বাজারে প্রগতি ইনস্যুরেন্স ভবনে ‘নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে কেমন বাজেট চাই’ শীর্ষক এই সংলাপের আয়োজন করে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এবং সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)।

বিজ্ঞাপন

আলোচকরা বলেন, বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়ন পরিকল্পনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে নারীর ক্ষমতায়ন। জাতীয় বাজেটেও জেন্ডার বাজেটের বরাদ্দ রয়েছে বেশকিছু মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু সেই বাজেটের যথাযথ বাস্তবায়নে বাজেট কাঠামোতে পরিবর্তন প্রয়োজন। কোন মন্ত্রণালয়ে সুনির্দিষ্টভাবে বাল্যবিয়ে ও সহিংসতা প্রতিরোধে কত শতাংশ বাজেট ব্যয় হচ্ছে, তার সমন্বিত তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতে হবে। এসব তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনার মধ্য দিয়ে ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা নেওয়া সম্ভব।

সম্প্রতি প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ও সিপিডি যৌথভাবে ‘বাজেট ফ্রেমওয়ার্ক অ্যানালাইসিস অন চ্যালেঞ্জিং ফিয়ার অব ভায়োলেন্স’ শীর্ষক একটি বাজেট ফ্রেমওয়ার্ক বিশ্লেষণ প্রতিবেদন প্রকাশ করেন।  আয়োজনের শুরুতে এই প্রতিবেদনের উপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির পোগ্রাম অ্যাসোসিয়েট নাদিয়া নওরিন।

মূল প্রবন্ধে উঠে আসে— এসডিজি ও অন্যান্য ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রভূত উন্নতি হলেও নারীর প্রতি সহিংসতা এখনো একটি বড় চ্যালেঞ্জ। বিভিন্ন সহিংসতা প্রতিরোধে যে আইন রয়েছে, তার সঠিক প্রয়োগ ও একইসঙ্গে বাজেটে সহিংসতা রোধে বরাদ্দ থাকা প্রয়োজন। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে নারীর জন্য বরাদ্দ থাকলে তা সুনির্দিষ্ট নয়। এই বরাদ্দ ব্যবহারের ক্ষেত্রে সমন্বয়হীনতাও স্পষ্ট। নারীদের মধ্যে সহিংসতার যে ভয়, বাংলাদেশে জেন্ডার বাজেটের কাঠামো তা প্রতিরোধে কার্যকর হচ্ছে না। তাই এই কাঠামোর পরিবর্তন প্রয়োজন।

বিজ্ঞাপন

সহিংসতার ভয় প্রতিরোধে বাজেট কাঠামোর চারটি স্তম্ভের কথা উল্লেখ করে নাদিয়া নওরিন বলেন, নারী বিষয়ে বিভাজিত তথ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে আলোচনায় গুরুত্ব দিতে হেবে। নারীদের ভেতরে সহিংসতার ভয় থাকলে দেশের সার্বিক উন্নয়ন অর্থহীন হয়ে যাবে।

আলোচনায় সংসদ সদস্য আরোমা দত্ত বলেন, বাংলাদেশ সরকার জেন্ডার বাজেট নিয়ে সচেতন। বেশকিছু মন্ত্রণালয়ের জন্য এই জেন্ডার বাজেট বরাদ্দ রয়েছে। তবে এর বাস্তবায়নের যথাযথ কার্যকারিতা মনিটরিংয়ের জন্য বাজেট কোথায় কীভাবে খরচ হচ্ছে, সে বিষয়ে সমন্বিত ডাটা প্রয়োজন। তবেই নারীর উন্নয়নে যথাযথ বাজেটের প্রয়োগ সম্ভব হবে। পাশাপাশি প্রযুক্তির মাধ্যমে সব মন্ত্রণালয় থেকে সমন্বিত ডাটা সংগ্রহের মাধ্যমে আইন ও নীতিমালার বাস্তবায়নে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলাও সম্ভব হবে।

প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের পরিচালক-গার্লস রাইটস কাশফিয়া ফিরোজ বলেন, সহিংসতার ভয়েই মেয়েরা তাদের সম্ভাবনার পথে আগাতে পারছে না। আমরা চাই বাজেটে, আইনে, নীতিমালায় এই ভয় প্রতিরোধের বিষয়টি উঠে আসুক। ঘর থেকে শুরু করে জনসমাগম— সবখানেই এই ভয় বিদ্যমান। আমরা সারাদেশে জরিপ চালিয়ে দেখেছি, অংশগ্রহণকারীদের প্রায় ৩৫ শতাংশের মতে যৌন হয়রানির ভয় বাল্যবিয়ের অন্যতম মূল কারণ। ২৫ দশমিক ৬ শতাংশের মতে সামাজিক বিভাজনজনিত উদ্বেগের কারণে মেয়েদের অল্প বয়সেই বিয়ে দিয়ে দেন মা-বাবা।

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, সারাবিশ্বেই সহিংসতা বাড়ছে, কমছে না। সহিংসতার ফলে যে ক্ষতি হয়, তা ব্যক্তিকে ছাপিয়ে রাষ্ট্রের ক্ষতি। এই ক্ষতি অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলে। নারীর প্রতি সহিংসতা এবং সহিংসতার ভয় প্রতিরোধে আইন ও নীতিমালাগুলো নিশ্চিত এবং বাস্তবায়নে যথাযথ অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিত প্রয়োজন।

সারাবাংলা/ইএইচটি/টিআর

২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট জেন্ডার বাজেট প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল সিপিডি সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর