স্টার্টআপের জন্য বাজেটে ছাড়
৯ জুন ২০২২ ১৯:৪৮
ঢাকা: প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে স্টার্টআপ উদ্যোক্তাদের টার্নওভার করহার শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক ১ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। পাশাপাশি আয়কর রিটার্ন দাখিল বাদে বাকি সব রিপোর্টিং থেকে অব্যাহতির কথা বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৯ জুন) জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপনের সময় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এমন প্রস্তাব দিয়েছেন। ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বাজেট অধিবেশন চলে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমান যুগ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির (আইসিটি) যুগ। সরকার আইসিটি খাতকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে। সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্নকে বহুমাত্রিক রূপ দেওয়ার নিমিত্ত স্টার্টআপ উদ্যোগকে বিশেষ প্রণোদনা প্রদানের মাধ্যমে সম্প্রসারিত করা প্রয়োজন। প্রস্তাবিত বাজেটে স্টার্ট-আপ উদ্যোক্তাদের জন্য কেবলমাত্র আয়কর রিটার্ন দাখিল ব্যতীত অন্যান্য সকল প্রকার রিপোর্টিং এর বাধ্যবাধকতা হতে অব্যাহতি এবং স্টার্টআপ কোম্পানির লোকসান ৯ বছর পর্যন্ত সমন্বয় এর বিধান প্রস্তাব করছি। এছাড়াও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ব্যবসার প্রসার এর জন্য স্টার্টআপ উদ্যোক্তাদের ক্ষেত্রে ব্যয় সংক্রান্ত বিধিনিষেধ প্রত্যাহার ও টার্নওভার করহার ০.৬০ শতাংশ এর পরিবর্তে ০.১ শতাংশ করার প্রস্তাব করছি।
মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশে প্রায় ২.৫ হাজারের বেশি স্টার্টআপ রয়েছে। স্টার্টআপ খাতে এ পর্যন্ত প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় ১৫ লাখ মানুষের। আমাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হলো ২০২৫ সালে আইসিটি রফতানি ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিনির্ভর কর্মসংস্থান ৩০ লাখে উন্নীত করা এবং সে জন্য এ খাতে পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন-
- একনজরে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট
- ‘বাজেট গরিববান্ধব, ব্যবসাবান্ধব ও গণমুখী’
- এবারের বাজেট লুটপাটের হিসাব মাত্র: ফখরুল
- দেশের বাজারে ল্যাপটপ-কম্পিউটারের দাম বাড়বে
- বাজেট বক্তৃতায় ‘ফিনিক্স পাখি’র গল্প শোনালেন অর্থমন্ত্রী
- জাতির পিতার সোনার বাংলার সুবর্ণরেখা স্পর্শ করার প্রত্যয়
- মন্ত্রিসভায় ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন
- কর দিলে বৈধ হবে পাচার করা টাকা, কেউ প্রশ্ন তুলতে পারবেন না
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের ফলে ডিজিটাল অর্থনীতির বিকাশ ঘটেছে। আইসিটি খাতের রফতানি ইতোমধ্যে ১.৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। দেশে ৩৯টি হাইটেক পার্ক বা আইটি ইনকিউবেশন সেন্টার গড়ে তোলা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৯টিতে ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পার্কগুলোতে এ পর্যন্ত দেশি বিনিয়োগ হয়েছে প্রায় ২০০০ কোটি টাকা এবং প্রস্তাবিত বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ৪৩৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। উদ্ভাবনী শক্তির বিকাশে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড, আইডিয়া প্রকল্প ও বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্রান্ট (বিগ)। সরকারের এরূপ নানা উদ্যোগের ফলে ক্রমশ দেশে স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম গড়ে উঠছে।
নতুন বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ছয় লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। এর আগে, ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটের আকার ছিল ছয় লাখ তিন হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে তা ১০ হাজার ১৮১ কোটি টাকা কমে পাঁচ লাখ ৯৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকায় নেমে আসে। সে হিসাবে নতুন বাজেটের আকার সবশেষ বাজেটের তুলনায় ৭৪ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা বা ১২ দশমিক ৩২ শতাংশ বেশি। আর সংশোধিত বাজেটের চেয়ে এটি ৮৪ হাজার ৫৬৪ কোটি বা ১৪ দশমিক ২৪ শতাংশ বেশি।
আগামী অর্থবছরের জন্য বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার ধরা হয়েছে দুই লাখ ৪৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা। অন্যদিকে জিডিপি’র আকার প্রাক্কলন করা হয়েছে ৪৪ লাখ ৪৯ হাজার ৯৫৯ কোটি টাকা। জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। অন্যদিকে আগামী অর্থবছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশ হবে বলে প্রক্ষেপণ করা হয়েছে।
সারাবাংলা/ইএইচটি/আইই
২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট ৫২তম বাজেট অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অর্থমন্ত্রীর চতুর্থ বাজেট বাজেট ২০২২-২৩