‘বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি ২০ জনের কেউই শঙ্কামুক্ত নন’

গত ৪ জুন বিএম ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ফাইল ছবি

ঢাকা: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের সদস্যসহ আহত ২০ জন রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) থাকা তিন জনের মধ্যে ফায়ার ফাইটার গাউসুল আজমের (২২) অবস্থা শঙ্কটাপন্ন। তাকে লাইফ সাপোর্টে বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। চিকিৎসাধীন বাকিদের অবস্থাও আশঙ্কামুক্ত নয় বলে জানা গেছে।

শনিবার (১১ জুন) শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন এ তথ্য জানিয়েছেন।

ডা. সামন্ত লাল বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ২০ জন রোগী এখানে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে গাউসুল আজম লাইফ সাপোর্টে আছেন। আরেক ফায়ার ফাইটার রবিন মিয়া (২২) ও কনটেইনার চালক নজরুল মণ্ডল (৩৮) আইসিইউ’তে ভর্তি আছেন। বাকিরা পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডে আছেন। তবে গাউসুল আজমের অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক। বাকিদের অবস্থা একেবারে আশঙ্কামুক্ত তা বলা যাচ্ছে না।’

ডা. সামন্ত বলেন, ‘আজ সকালে সব চিকিৎসক মিলে রোগীদের ওয়ার্ডে রাউন্ড দিয়েছি। বেলা ১১টার দিকে মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা একটি মিটিং করেছি। সেখানে প্রত্যেক রোগীর বিষয়ে পর্যালোচনা হয়েছে। তাদের চোখের সমস্যাগুলো দেখছি। আগামীকাল অধ্যাপক ডা. কাজী দ্বীন মোহাম্মদসহ জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালক রোগীদের আবার এসে দেখবেন। এরপর সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নেব তাদের চিকিৎসায় আর কী কী করা যায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘রোগীদের রক্তের দরকার ছিল। এটা জানার পর অনেকেই স্বেচ্ছায় রক্ত দিয়েছেন। আমাদের এখানে প্রচুর পরিমাণে রক্ত মজুত আছে। নতুন করে রক্ত রাখার জায়গাও নাই। আপাতত আমাদের আর রক্ত লাগছে না।’

এর আগে, সোমবার (৬ জুন) সকালে সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন থেকে বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধদের চিকিৎসায় ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। বার্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালামকে প্রধান করে এ মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার (৪ জুন) আনুমানিক রাত ১০টার দিকে চট্টগ্রাম নগরী থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে সোনাইছড়ি ইউনিয়নের শীতলপুর এলাকায় অবস্থিত বিএম কন্টেইনার ডিপোর লোডিং পয়েন্টের ভেতরে আগুন লাগে। প্রথমে কুমিরা ও সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিসের ৪টি ইউনিট আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। পরে রাত পৌনে ১১টার দিকে এক কনটেইনার থেকে অন্য কনটেইনারে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। হঠাৎ একটি কনটেইনারে রাসায়নিক থাকায় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসের সদস্য ও শ্রমিকসহ ৪ শতাধিক মানুষ দগ্ধ ও আহত হন। ঘটনার দিন থেকে এখন পর্যন্ত ৪৩ নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে নয় জন ফায়ার ফাইটার রয়েছেন।

আরও পড়ুন:

• সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ: বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি ২০
• ‘তথ্যে ভুল ছিল’, সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণে নিহতের ‘প্রকৃত সংখ্যা’ ৪১
• সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ: দগ্ধদের চিকাৎসায় ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড
• ‘সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণের দূষণ পৌঁছাতে পারে ঢাকায়’

সারাবাংলা/এসএসআর/এনএস/পিটিএম

বিএম কনটেইনার ডিপো শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ