‘দেশের ৭০ ভাগ লোক ঢাকায় চলে আসবে’
১১ জুন ২০২২ ২১:৪৩
ঢাকা: দেশের সব প্রান্ত থেকে জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা কারণে অভ্যন্তরীন অভিবাসীদের গন্তব্য ঢাকা। ২০৫০ সালের মধ্যে দেশের ৭০ ভাগ লোক ঢাকায় চলে আসবে। তাই শহরকে বাসযোগ্য করার বিষয়টি নিয়ে এখন থেকেই ভাবতে হবে বলে মনে করছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম।
শনিবার (১১ জুন) দুপুরে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ আয়োজিত ‘নগরে নিম্নবিত্তের আবাসন- বাস্তবতা ও করণীয়’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় গবেষণার মাধ্যমে ঢাকা শহরকে সুস্থ, সচল ও আধুনিক করে তুলতে বুয়েটের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।
মেয়র আতিক বলেন, দেশের অভিবাসীদের গন্তব্যস্থান হয়ে গেছে ঢাকা শহর। যুগ যুগ ধরে এই ঢাকা শহর অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে। রাজউকের অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী হাউজিং সোসাইটিগুলো তাদের আবাসন প্রকল্প সম্পন্ন করছে না। রাজউকসহ সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগকে অনুরোধ, অপরিকল্পিতভাবে যেন আর আবাসন প্রকল্প গড়ে না ওঠে তা তদারকি করতে হবে। পরিবেশের ক্ষতি করে যেন কোনো দালান নির্মাণ না করা হয়।
এছাড়াও ঢাকায় কার্যকর ট্রাফিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে বাস্তবসম্মত গবেষণার এখনই সময় উল্লেখ করে তিনি বলেন, উন্নত দেশের শহরগুলোর মতো ঢাকা শহরে কার্যকর ট্রাফিক ব্যবস্থার জন্য বাস্তবসম্মত গবেষণা করতে হবে। শহরের কোন রাস্তা একমুখী হবে আর কোন রাস্তা দ্বিমুখী হবে তা গবেষণা করে নির্ধারণ করতে হবে। বাস্তবসম্মত গবেষণা করে প্রতিবেশী দেশের শহরে কার্যকর ট্রাফিক ব্যবস্থা নিশ্চিত হয়েছে। দেশেও গবেষণা করে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে।
মেয়র বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রতিদিন প্রায় দুই হাজার মানুষ ঢাকায় চলে আসছে। ক্রমাগত নিম্ন আয়ের মানুষের সংখ্যা ঢাকা শহরে বেড়েই চলছে। নিম্ন আয়ের এই বিশাল সংখ্যার মানুষের পুনর্বাসনের ও জীবনমান উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে ব্যবস্থা নিতে হবে। শিক্ষার্থীরা নগরে নিম্নবিত্তের আবাসন-বাস্তবতা ও করণীয় বিষয়ে যে তিনটি গবেষণা করেছে এগুলো সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে বাস্তবায়নে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখানে গবেষণার মাধ্যমে নিম্নবিত্তের আবাসনের জন্য যে ধরনের প্রকল্প তুলে ধরা হয়েছে তা পাইলটিংয়ের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে। প্রথমে বিহারীপল্লিতে পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।
নিম্ন আয়ের মানুষের আবাসন বিষয়ে ডিএনসিসি গুরুত্বারোপ করছে জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের জন্য ২৪৯.৪৮ কোটি টাকা ব্যয়ে গাবতলী সিটি পল্লিতে বহুতল বিশিষ্ট আবাসিক ভবন নির্মাণ প্রকল্প চলমান আছে যা আগামী বছরের জুনে শেষ হবে। ওই প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৭৮৪ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মীর জন্য ৪টি ১৫ তলা বিশিষ্ট আবাসিক ভবন নির্মাণ এবং একটি স্কুল নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।
বক্তৃতা শেষে ডিএনসিসি মেয়র বুয়েটের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের একটি ওয়েবসাইটের শুভ উদ্বোধন করেন।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. সত্য প্রাসাদ মজুমদারের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন বুয়েটের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল জাব্বার খান এবং পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সচিব মামুন আল রশীদ। সেমিনারে উপস্থাপিত গবেষণার ওপর আলোচনা করেন রাজউক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞা।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহঃ আমিরুল ইসলাম এবং প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মাকসুদ হাসেম।
সারাবাংলা/আরএফ/একেএম