৩০০ এমপিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারব কিনা জানি না: সিইসি
১৩ জুন ২০২২ ২০:৪৫
ঢাকা : প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ এমপিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো কিনা সেটি আমরা জানি না।
সোমবার (১৩ জুন) ট্রান্সপারেন্সি ইন্ট্রারন্যাশনাল (টিআইবি) প্রতিনিধি দলের সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সংলাপ শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল সাংবাদিকদের এ সব কথা বলেন।
কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে একজন সংসদ সদস্যকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিভাবে ৩০০ জন এমপিকে নিয়ন্ত্রণ করবেন— এমন প্রশ্নের সিইসি বলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ এমপিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারব কিনা, সেটি আমরা জানি না। তবে নিয়ন্ত্রণের কতকগুলো বিষয় আছে।’
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, ‘কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহারকে আমরা একটা চিঠি দিয়েছিলাম, উনি যেন এলাকায় না থাকেন। কারণ ওটা নির্বাচনী আচরণবিধিমালাতে রয়েছে— ভিভিআইপিরা নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেবেন না।’
সিইসি বলেন, ‘নির্বাচনের সময় দেশে যে সরকার থাকেন সেটিই নির্বাচনকালীন সরকার। নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে বিরোধীদল থেকে যে দাবিগুলো করা হচ্ছে— সেগলো নিয়ে আমাদের কোনো মন্তব্য নেই। নির্বাচনকালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা বিভিন্ন সরকার নিয়ে কথা বলা হচ্ছে। এগুলো আমাদের বিষয় না। এটি সাংবিধানিক বিষয়। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো যদি একমত হন তাহলে তারা সেটি দেখবেন। আমার কাছে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনের সময় যে সরকার থাকবেন সেটিই নির্বাচনকালীন সরকার।’
সিইসি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করব নির্বাচনকালীন সরকার যাতে আইন অনুযায়ী আচরণ করেন। যদিও নির্বাচনকালীন সরকার কোনো একটা রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে এসেছেন কিন্তু তখন তিনি রাজনৈতিক নেতা হবেন না, তিনি কেবল একজন মন্ত্রী। বাইরে উনি আওয়ামী লীগের দলীয় সদস্য হতে পারেন। কিন্তু মন্ত্রী হিসাবে ওনার দায়িত্বটা হচ্ছেন রাষ্ট্রীয় এবং সরকারের। সরকার এবং দল এক নয়। যদিও আমরা সরকার, দল ও রাষ্ট্রকে এক করে ফেলি। অনেক কিছুকে গুলিয়ে ফেলি। নির্বাচনকালীন সরকারের সময় আমরা চেষ্টা করব নির্বাচনকালীন সরকারকে যতটা সম্ভব নিরপেক্ষ করা যায়। আমি নিজেও বিশ্বাস করি নির্বাচনকালীন সরকারও চাইবেন নির্বাচনটা যেন সুষ্ঠু ও সুন্দর হয়।’
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যখন হবে তখন সংসদ সদস্যরা তাদের নির্বাচনী এলাকায় থাকবেন। তবে ওনাদের কিছু আচরণ অনুসরণ করতে হবে। তখন দেখা যাবে আমরা কতটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারব, অথবা পারবো না। কিন্তু সকলের সহযোগিতায় আমাদের সেই চেষ্টা থাকবে।’
দলীয় সরকারের অধীনে কতটা সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘সারা পৃথিবীতে দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচন হচ্ছে। ভারতেও হচ্ছে, বিলেতে হচ্ছে আমেরিকাতেও হচ্ছে। সরকারটা কিন্তু দলীয় সরকার না, সরকার সরকারই। এই জিনিসটা যদি উপলব্ধি করা যায় যে সরকার সরকারই, দল ভিন্ন জিনিস।’
সিইসি বলেন, ‘কেবিনেট রাষ্ট্রপতি থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে ডেপুটি মিনিস্টারগুলো এটিই হচ্ছে মূল সরকার। বাকি যারা রযেছেন তারা হলেন সাব-অর্ডিনেট সরকার আমলাতন্ত্র বা ব্যুরোক্রেটস। কাজেই সরকার শপথ নিয়েছেন, যে আমরা সংবিধানকে মানব, সংবিধান অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করব, সম আচরণ করব, পক্ষপাতিত্ব করব না। ওনারা বলেননি আমরা আমাদের দলকে আগামীতে আরও বেশি করে হেল্প করব। কাজেই আমার বিশ্বাস সরকার তাদের শপথটা জানেন। ফলে আগামী নির্বাচনের সময় অন্তত সুষ্ঠু ও একটা সুন্দর নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে সরকারের মন্ত্রী হিসেবে আচরণ করবেন, দলীয় মন্ত্রী হিসেবে নয় আমরা এমন প্রত্যাশা করছি।’
আরও পড়ুন
আগামী নির্বাচনে পুলিশ, জনপ্রশাসন ও সশস্ত্র বাহিনী প্রয়োজন: সিইসি
মূল বিরোধী দল অংশ না নিলে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয় না: সিইসি
সারাবাংলা/জিএস/একে