ফল কে মানল আর কে মানল না তাতে কিছু যায় আসে না: বাহার
১৬ জুন ২০২২ ০৮:২৬
কুমিল্লা থেকে: কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের (কুসিক) ফলাফল কে মানল আর কে মানল না তাতে কিছু যায় আসে না বলে মন্তব্য করেছেন কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার। তিনি বলেন, ফল যা হয়েছে সেটিই সঠিক।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর গতকাল বুধবার (১৫ জুন) রাত সাড়ে ৯টায় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার।
এর আগে নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু বলেন, ‘আমাকে পরিকল্পনা করে নির্বাচনে হারানো হয়েছে। তবে আমি এর বিরুদ্ধে রিট করব।’
মনিরুল হক সাক্কু নির্বাচনের ফলাফল না মানার বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার বলেন, ‘কে কি বলল তাতে কিছু যায় আসে না। যা ফল হয়েছে সেটাই সঠিক। এই রায়ের ফলে প্রকৃত অর্থে জয় হয়েছে সাধারণ জনতার। কারণ তারা এমনই ফলের জন্যেই অপেক্ষা করছিলেন।’
আরফানুল হক রিফাতের রাজনৈতিক জীবন নিয়ে তিনি বলেন, ‘রিফাত ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতা। চল্লিশ বছরের রাজনৈতিক জীবনে মানুষের জন্য সে কাজ করেছে। সে ছাত্রলীগ করা ছেলে। শিবির তার চার হাত-পায়ের রগ কেটে দিয়েছিল। তবুও সে থমকে যায় নাই।’
তিনি বলেন, ‘খন্দকার মোস্তাক কুমিল্লায় কখনো মিটিং করতে পারেনি। রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর পাঁচ হাজার পুলিশ এনে মিটিং করেছিল। আমরা সেই মিটিং ভেঙে দিয়েছিলাম। সেই সময়ে সামরিক ট্রায়ালে সাড়ে তিন বছর জেলও খেটেছে রিফাত।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি ক্ষমতায় আসার পর রিফাতকে কয়েকটি স্কুল-কলেজের দায়িত্ব দিয়েছিলাম। এসব স্কুল কলেজের কোনো ফান্ড ছিল না। আজকে এমন স্কুলও আছে যেখানে ১০ কোটি টাকার ফান্ড রয়েছে।’
রিফাতের জয়ের পেছনে সবচেয়ে বড় নিয়ামক কী?— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বাহার বলেন, ‘জয়ের নিয়ামক আমার নেত্রী শেখ হাসিনার নৌকা প্রতীক। এই নৌকা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। এই নৌকার পক্ষে আমি ছাত্রজীবনে কাজ করেছি। এই নৌকার জন্য আমি স্লোগান তুলেছি।’
কুমিল্লায় নৌকা প্রতীকের বিজয়ের জন্য আমার ছায়াই যথেষ্ট বলেও মন্তব্য করেন আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার।
এ দিন নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে মনিরুল হক সাক্কু বলেন, ‘আমার হিসাবে ৯৮০ ভোটে এগিয়ে ছিলাম। শেষ মুহূর্তে ফল পাল্টে দেওয়া হয়েছে। ষড়যন্ত্র করে আমাকে হারানো হয়েছে। ভোট পুনরায় গণনার জন্য আমি আদালতে রিট করবো, আইনি ব্যবস্থা নেব।’
এর আগে বুধবার (১৫ জুন) রাত সাড়ে ৯টার দিকে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহেদুন্নবী চৌধুরী জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে কুসিকের ফল ঘোষণা করেন। ঘোষিত ফল অনুযায়ী, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত পেয়েছেন ৫০ হাজার ৩১০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মনিরুল হক সাক্কু পেয়েছেন ৪৯ হাজার ৯৬৭ ভোট। মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী অন্য তিন প্রার্থী মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন কায়সার ঘোড়া প্রতীকে ২৯ হাজার ৯৯, রাশেদুল ইসলাম হাতপাখায় তিন হাজার ৪০ ও কামরুল আহসান বাবুল হরিণ প্রতীকে দুই হাজার ৩২৯ ভোট পেয়েছেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তার দফতর সূত্রে জানা যায়, নির্বাচনে মোট দুই লাখ ২৯ হাজার ৯২০ ভোটার ছিলেন। এর মধ্যে এক লাখ ৩৫ হাজার ৬৪টি ভোট পড়ে। তবে বাতিল হয় ৩১৯ ভোট। ভোট পড়েছে ৫৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ। মোট ১০৫টি কেন্দ্রের ৬৪০টি কক্ষে ভোটগ্রহণ হয়েছে। নির্বাচনে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১০৬ জন ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৩৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর আগেই দুইজন কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী না থাকায় জয়লাভ করেন।
এর আগে সকাল ৮টা থেকে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) নগরীর ২৭টি ওয়ার্ডের ১০৫ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বিপুল উৎসাহের মধ্য দিয়ে বিকাল ৪টায় ভোটগ্রহণ শেষ হয়। তবে যেসব কেন্দ্রে ভোটার ছিলেন সেসব কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ বিকেল ৪টার পরেও চলে।
সারাবাংলা/এসবি/এনএস