সারাদেশে বজ্রপাতে পাঁচ শিশুসহ ১৩ জনের মৃত্যু
১৭ জুন ২০২২ ২৩:০৩
ঢাকা: প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যে বজ্রপাতের ঘটনায় দেশের বিভিন্ন জেলায় ৫ শিশুসহ ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (১৭ জুন) ময়মনসিংহ, সিরাজগঞ্জ, রাজশাহী, নওগাঁ, বগুড়া ও লালমনিরহাটে পৃথব এসব বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে।
ময়মনসিংহ
সারাবাংলা’র ময়মনসিংহ করেসপন্ডেন্ট জানান, ধোবাউড়া, সদর ও নান্দাইলে বজ্রপাতে তিন শিশুসহ ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (১৭ জুন) বেলা ২টার দিকে বজ্রপাতে এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- জেলার ধোবাউড়ার গোয়াতলার গফুর মিয়ার ছেলে আবু সাঈদ (৩০), সদর উপজেলার দড়ি কুষ্টিয়া ইউনিয়নের হাসেন আলীর ছেলে কৃষক বাক্কার হোসেন (৪০) ও পচাঁ মিয়ার ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন (৩২) এবং নান্দাইল উপজেলার গাঙ্গাইল ইউনিয়নের কংকরহাটি গ্রামের শহীদুল্লাহর ছেলে সাঈদ মিয়া (১২), হাদিস মিয়ার ছেলে স্বাধীন মিয়া (১১), বিল্লাল হোসেনের ছেলে শাওন (৮)।
সিরাজগঞ্জ
বজ্রপাতের দুই ঘটনায় সিরাজগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলসেতুর সিকিউরিটি গার্ডসহ দুই জন মারা গেছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও ৪ জন। আহতদের সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সারাবাংলা’র সিরাজগঞ্জ করেসপন্ডেন্ট জানান, শুক্রবার (১৭ জুন) দুপুরে সদর উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়নের শিল্পপার্ক এলাকা ও যমুনার দুর্গম চরাঞ্চল কাওয়াকোলা ইউনিয়নের বর্ণি গ্রামে বজ্রপাতের এ দুই ঘটনা ঘটে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, প্রচণ্ড বৃষ্টির সময় সদর থানার দু’টি স্থানে বজ্রপাতে দুই জনের প্রাণহানি ঘটেছে। আহত হয়েছেন আরও ৪ জন। সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে আহতদের চিকিৎসা চলছে।
রাজশাহী
গোদাগাড়ী ও মোহনপুরে বজ্রপাতে নারী ও কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (১৭ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ দু’টি দুর্ঘটনা ঘটে।
গোদাগাড়ী উপজেলার নিহত ওই নারীর নাম নাদিরা বেগম (৫৫)। তিনি উপজেলার বামনাইল গ্রামে পাতান আলীর মেয়ে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম।
ওসি জানান, বৃষ্টির সময় মাঠে গরু আনতে গিয়েছিলেন নাদিরা বেগম। পরে বাসায় ফিরতে দেরি হওয়ায় পরিবারের সদস্যরা খুঁজতে গিয়ে মাঠে লাশ পড়ে থাকতে দেখে। তাকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে, মোহনপুর উপজেলায় ফুটবল খেলতে গিয়ে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। নিহত কিশোরের নাম রাব্বি হোসেন (১২)। রাব্বি আমগাছি গ্রামের মো. কাউছার আলীর ছেলে।
মোহনপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম জানান, দুপুরে বৃষ্টির সময় খোলা জায়গায় কয়েকজন কিশোর ফুটবল খেলছিল। বজ্রপাতের বিকট শব্দ হলে রাব্বি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে যায়। পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
নওগাঁ
মান্দায় বজ্রপাতে নাঈম হোসেন (১৪) নামে এক কিশোর নিহত হয়েছে। শুক্রবার (১৭ জুন) দুপুরের দিকে উপজেলার ভারশোঁ ইউনিয়নের পাকুড়িয়া গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত কিশোর ওই গ্রামের ইয়াছিন আলীর ছেলে।
পুলিশ জানায়, মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল। বৃষ্টি উপেক্ষা করে নাঈম হোসেন বাড়ির পাশে মাঠে গরু নিয়ে যায়। এ সময় বজ্রপাতের শিকার হয়ে সে ঘটনাস্থলেই মারা যায়।
লালমনিরহাট
বজ্রপাতে হাতীবান্ধা উপজেলার সানিয়াজান ইউনিয়নের শেখ সুন্দর গ্রামে আ. মতিন (৫২) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। নিহত আ, মতিন একই গ্রামের মৃত নুর ইসলামের ছেলে।
বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে মাছ ধরতে গিয়ে এই বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। পরে শুক্রবার সকালে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
বগুড়া
বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়নের কোমারভোগ গ্রামে বজ্রপাতে জহুরুল ইসলাম (২১) নামের এক যুবক মারা গেছে। সে ওই গ্রামের মসলিম উদ্দিনের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় বৃষ্টির সময় জহুরুল কয়েকজন শ্রমিক নিয়ে তাদের মরিচ খেত পরিচর্যার জন্য যাচ্ছিল। এসময় বজ্রপাতে তার সারা শরীর ঝলসে যায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে আদমদীঘি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সারাবাংলা/এমও