Thursday 05 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চট্টগ্রামে বৃষ্টি অব্যাহত, পাহাড় থেকে ১৫০ ঘর উচ্ছেদ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৯ জুন ২০২২ ১৭:২৫

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরী ও আশপাশের এলাকায় টানা বৃষ্টিপাত তৃতীয় দিনের মতো অব্যাহত আছে। এ অবস্থায় পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরতদের উচ্ছেদে জোরালো অভিযান চালাচ্ছে জেলা প্রশাসন।

রোববার (১৯ জুন) জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এদিন বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিভিন্ন পাহাড় থেকে প্রায় ১৫০ ঘর উচ্ছেদ করে সেখানে বসবাসরত পরিবারগুলোকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

এর আগে, শুক্রবার (১৭ জুন) ভোর থেকে চট্টগ্রাম নগরী এবং আশপাশের এলাকায় বৃষ্টিপাত শুরু হয়। শনিবারও দিনভর কখনও হালকা, কখনও মাঝারি বৃষ্টিপাত হয়, যা অব্যাহত রয়েছে রোববারও।

নগরীর পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এটা হালকা থেকে মাঝারি আকারে আরও দু’দিন অব্যাহত থাকবে। মঙ্গলবার বা বুধবার থেকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমতে পারে।’

পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস রোববার বিকেল তিনটা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ১০৪ দশমকি ৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে। অন্যদিকে, আমবাগান আবহাওয়া অফিস বেলা ১২ টা পর্যন্ত ৪৫ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে।

টানা বৃষ্টির মধ্যে শুক্রবার রাতে নগরীর নগরীর আকবর শাহ থানা এলাকায় দু’টি পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটে। এতে চারজন নিহত ও দু’জন আহত হন। নগরীর ফিরোজ শাহ কলোনির এক নম্বর ঝিল বরিশালঘোনা এলাকায় পাহাড়ধসে মারা যান শাহীনূর আক্তার (২৬) ও তার বোন মাইনুর আক্তার (২৪)। আহত হন তাদের বাবা-মা ফজল হক (৭০) ও মোশারা বেগম (৬৫)। এছাড়া নগরীর ফয়’সলেক সংলগ্ন সী ওয়ার্ল্ডের পাশে বিজয়নগর এলাকায় আরেকটি পাহাড়ধসের ঘটনায় লিটন (২৩) ও ইমন (১৪) নামে দু’জনের মৃত্যু হয়।

এরপর শনিবার পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরত ৩২ পরিবারকে সরিয়ে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যায় জেলা প্রশাসনের টিম। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান নিজেই উচ্ছেদ অভিযানে নামেন। এদিকে, টানা বৃষ্টির মধ্যে রোববার সকাল থেকে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে আরও জোরালোভাবে পাহাড়ে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। জেলা প্রশাসনের তিন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নগরীর আকবর শাহ থানাধীন এক নম্বর ঝিল পাড় এলাকায় অভিযান শুরু করেন।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) ও সহকারী কমিশনার মো. তৌহিদুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘টানা অভিযান চলছে। বিকেল পর্যন্ত প্রায় ১৫০ পরিবারকে আমরা পাহাড় থেকে সরিয়ে নিয়েছি। ঘরগুলো ভেঙে দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। অন্যান্য পাহাড় থেকে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরতদের সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে।’

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমানও দুপুরে উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘পাহাড়ে অবৈধ ও ঝুঁকিপূর্ণ যেসব স্থাপনা উচ্ছেদ করা হচ্ছে সেখানে পুনরায় কেউ দখলে নিয়ে যেন স্থাপনা নির্মাণ করতে না পারে সেজন্য আমরা কাঁটাতারের বেড়া ও গাছ লাগিয়ে দেব। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে সেখানে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে সীমানা নির্ধারণ করা হবে। যদি কেউ এ সীমানা ভেঙে বসতি গড়ে তুলে, তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এবং রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকেও বলেছি, তাদের আওতাধীন পাহাড়ী জায়গায় নির্মিত অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করে সেখানে কাঁটাতারের বেড়া ও গাছ লাগিয়ে সংরক্ষণ করতে। পাহাড়ে অবৈধ ও ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের বিরুদ্ধে আমাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।’

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

উচ্ছেদ ঘর চট্টগ্রাম টপ নিউজ পাহাড় বৃষ্টি


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর