Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সিলেট-সুনামগঞ্জ-নেত্রকোনায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি, আছে শঙ্কা

সারাবাংলা ডেস্ক
২০ জুন ২০২২ ১০:৩৮

ভয়াবহ বন্যার চতুর্থ দিনে এসে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনায়। সিলেটের উঁচু জায়গাগুলো থেকে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। পানি নেমেছে সুনামগঞ্জের প্রধান প্রধান সড়ক থেকেও। নেত্রকোনার কলমাকান্দা ও দুর্গাপুরে বন্যার পানি কিছুটা কমতে শুরু করছে। সোমেশ্বরী নদীর বিজয়পুর পয়েন্টে পানি এখন বিপৎসীমার নিচে অবস্থান করছে।

তবে শেষ হয়নি আশঙ্কা। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, গতকাল থেকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমায় বন্যা পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হয়েছে। সোমবার যদি আবারও বৃষ্টিপাত বাড়ে তাহলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পানিও বাড়বে।

সুনামগঞ্জের সারাবাংলা করেসপন্ডেন্ট আল হাবিব জানান, সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের পানি নামায় যোগাযোগা ব্যবস্থা শিগগিরই চালু হতে পারে। পাড়া মহল্লার পানি এখনো খুব একটা না কমলেও সেখানকার মানুষজন আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে পারছে। রোববার সন্ধ্যায় এই জেলায় পৌঁছেছে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে নিযুক্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা। তবে এখনো ত্রাণ পৌঁছায়নি বন্যাদুর্গতদের মাঝে।

তিনি জানান, রোববার দিবাগত রাতে সুনামগঞ্জে খুব একটা বৃষ্টি হয়নি। তবে সোমবার সকাল থেকে বৃষ্টি ঝরছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে আবারও বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।

সিলেট অফিস জানিয়েছে, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এই জেলায় বন্যা পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি চোখে পড়ছে। উঁচু জায়গাগুলো থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। সেইসঙ্গে ঢাকার সঙ্গে রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে। রোববার দিবাগত রাত থেকে সকাল পর্যন্ত সিলেটে খুব একটা বৃষ্টি হয়নি। তবে আকাশ মেঘলা, যেকোনো মুহূর্তে বৃষ্টি নামতে পারে।

সারাবাংলা নেত্রকোনা করেসপন্ডেন্ট জানান, নেত্রকোনার বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও বাড়ছে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ। জেলার সীমান্তবর্তী দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা উপজেলায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমান সবচেয়ে বেশি। এই দুই উপজেলায় প্রায় সাত শতাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। ভেসে গেছে চার হাজারের বেশি পুকুরের মাছ। নষ্ট হয়েছে বীজতলা।

সোমবার সকাল পর্যন্ত নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) এর তথ্যমতে, উব্দাখালী নদীর কলমাকান্দা পয়েন্টে বিপৎসীমার ১০০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। কংশ এবং ধনু নদীর পানি বিপৎসীমার ৬০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

দুর্গাপুর উপজেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, দুর্গাপুর সদর, চন্ডিগড়, গাঁওগান্দিয়া ও বিরিশিরি ইউনিয়নের ৪০ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানির স্রোতে অন্তত দেড় শতাধিক বাড়িঘর ভেঙে গেছে। কাঁচা-পাকা সড়ক ভেঙে গেছে। উপজেলার ৯৫ ভাগ তলিয়ে গেছে।

কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল হাশেম জানান, লেঙ্গুরা ইউনিয়নে দুই শতাধিক বাড়িঘরসহ অন্তত পাঁচ শতাধিক বাড়িঘর পাহাড়ি ঢলে ভেঙে গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহনলাল সৈকত বলেন, কলমাকান্দা ও দুর্গাপুরে বন্যার পানি কিছুটা কমতে শুরু করছে। সোমেশ্বরী নদীর বিজয়পুর পয়েন্টে পানি এখন বিপৎসীমার নিচে আছে। তবে উব্দাখালি, কংসসহ ধনু নদের পানি বিভিন্ন পয়েন্টে বিপৎসীমার অনেক ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে, ভারী বৃষ্টিপাত না হলে বন্যার পরিস্থিতি উন্নতির দিকে যাবে।

নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ জানান, জেলার কংস, সোমেশ্বরী, উব্দাখালি, ধনুসহ বেশিরভাগ নদ-নদীর পানি বিভিন্ন পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে। এরই মধ্যে ২৬৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। খালিয়াজুরির ছয়টি আশ্রয়কেন্দ্রে দুই হাজার ২১০ জন আশ্রয় নিয়েছে।

সারাবাংলা/এএম

নেত্রকোনো বন্যা সিলেট সুনামগঞ্জ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর