পদ্মা সেতু: দক্ষিণাঞ্চলবাসীর বাঁচবে সময়, অবসান হবে ভোগান্তির
২১ জুন ২০২২ ১১:৪৯
বরিশাল: পদ্মা পাড়ি দিয়ে যাতায়াতে যে সময় লাগতে, তার কয়েকগুণ বেশি সময় ফেরিঘাটে অপেক্ষা করেই কাটতো দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। অবশেষে সেই ফেরির অপেক্ষা ঘুচে যাচ্ছে। যাত্রী ও চালকদের সময় যেমন বাঁচবে, তেমনি দীর্ঘ ভোগান্তির অবসান হবে। যাত্রী-চালকদের আর ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেরিঘাটে বসে থাকতে হবে না। আন্তঃদেশীয় সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায়ও সুদিন ফিরবে। আসন্ন কুরবানির ইদে ঘরমুখো যাত্রীদের আর দুর্ভোগে পড়তে হবে না। এ কারণে পদ্মা সেতুকে ঘিরে ব্যাপক উচ্ছ্বসিত এ অঞ্চলের মানুষ।
আগামী ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতু উদ্বোধন করার পরদিন থেকে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করা ফেরি ঘাটের বদলে এখন পদ্মা সেতুতে সময় লাগবে মাত্র ১০ থেকে ১২ মিনিট। ঢাকা থেকে ৪ ঘণ্টায় বরিশাল, ৫ ঘণ্টায় পটুয়াখালি, সাড়ে ৪ ঘণ্টায় ঝালকাঠি এবং সাড়ে ৬ ঘণ্টায় কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে পৌঁছতে পারবেন যাত্রীরা।
ফেরিতে যে ভাড়া গুণতে হয়, সেতুতে অবশ্য তার দেড়গুণ ভাড়া বেশি লাগবে। সময় সাশ্রয় আর দুর্ভোগ না থাকলে এই বাড়তি টাকা গায়েই লাগবে না। পদ্মা পাড়ি দেওয়া যাত্রী, গাড়ির চালকরা এখন থেকেই এমন হিসাব কষছেন। যাত্রীদের বক্তব্য, যুগ যুগ ধরে চলে আসা দুর্ভোগের চিরবিদায় ঘটতে যাচ্ছে।
পদ্মা সেতু চালুর পর দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বাসের সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকারের পরিবহন সংস্থা বিআরটিসি। এতোদিন বিআরটিসির বাস ছিল না, এমন প্রায় সব জেলায় বাস চালু করতে চায় সংস্থাটি। তারা পদ্মা সেতু হয়ে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত (এসি) ও নন-এসি দুই ধরনের বাসই নামাবে।
বরিশাল নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব ডা. মিজানুর রহমান বলেন, পদ্মা সেতু পালটে দেবে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের আর্থ-সামাজিক চিত্র। বরিশাল বা খুলনার যেকোনো জায়গা থেকে আগের তুলনায় কম করে হলেও দুই ঘণ্টা আগে পৌঁছানো যাবে ঢাকায়। আমাদের স্বপ্নের পদ্মা সেতু এখন বাস্তব।
বাংলাদেশের পরিবহন ব্যবসার অন্যতম বড় প্রতিষ্ঠান হানিফ পরিবহনের মালিক কফিলউদ্দিন বলেন, এতদিন ফেরি পারাপারের ঝামেলার কারণে অনেক বিলাসবহুল বাস চলেনি এ রুটে। সেগুলোও এখন যুক্ত হবে। রাজবাড়ী বাদে অন্য সব জেলার বাসই পদ্মা পাড়ি দিয়ে দক্ষিণে ছুটবে।
সাকুরা পরিবহন (প্রা.) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন কবির বলেন, আমার কোম্পানিতে থাকা ৭০টি বাস মূলত বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন রুটে চলাচল করে। সেতু উদ্বোধনের পর পদ্মা পাড়ি দিয়েই চলাচল করব আমরা। এতে সময় ও দূরত্ব দুটোই কমবে।
এদিকে বাস টার্মিনালে পুরাতন পরিবহন কোম্পানির সঙ্গে নতুন নতুন পরিবহন কোম্পানিগুলো তাদের কাউন্টার সাজিয়ে নিচ্ছে। এ তথ্য জানিয়ে বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের দফতর সম্পাদক অমল চন্দ্র দাস বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের খবরে কয়েকদিন ধরে টার্মিনালের চেহারা পাল্টাতে শুরু করেছে। নতুন পরিবহনগুলো যেমন তাদের কাউন্টার গুছিয়ে নিচ্ছে, তেমনি পুরাতন পরিবহনগুলোও নতুন করে সাজানো হচ্ছে। কাউন্টারগুলোর সামনে লাগানো নতুন স্টিকার, ব্যানার, ফ্যাস্টুনে বিভিন্ন রুটের প্রচার চালাচ্ছে।
সারাবাংলা/এসএসএ