Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নাম থাকুক আর নাই থাকুক এর নাম ‘শেখ হাসিনা সেতু’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২১ জুন ২০২২ ১৮:৩১

ঢাকা: বহুল আকাঙ্খিত পদ্মা বহুমুখী সেতুর উদ্বোধন ২৫ জুন। দেশের দীর্ঘতম এই সেতুর নামকরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম যুক্ত করার প্রস্তাবনা থাকলেও তার অনিচ্ছাতেই ‘পদ্মা সেতু’ নামে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। তবে সেতুতে নাম না থাকলেও এর নাম ‘শেখ হাসিনা সেতু’ বলেই মনে করেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।

একই বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘পাথরে না লিখে হৃদয়ে লেখা হোক না শেখ হাসিনার নাম। পদ্মা সেতু যতদিন থাকবে, আমরা এই নাম হৃদয়ে নিয়েই চলে যাব। এটাও তার বিশালতা যে, তিনি তার নাম যুক্ত করতে চাননি।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২১ জুন) রাজধানীর একটি বেসরকারি হোটেলে ‘জাতীয় অর্থনীতিতে পদ্মা সেতুর গুরুত্ব’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন তারা। সেমিনারটি আয়োজন করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক উপকমিটি।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাঙালিকে বলা হয় শংকর শ্রেণির জাতি। সব ভালোকেও ভালো বলতে রাজি না। এই যে পদ্মা সেতু হলো, তারপরও কিন্তু সমালোচনার শেষ নেই। এসব মিলিয়েই বাঙালি। এসব না থাকলে বাঙালি কি না তা নিয়ে সন্দেহ আছে। এগুলো নিয়ে চিন্তা করে লাভ নেই। আমরা এগিয়ে যাব।’

তিনি বলেন, ‘পদ্মা ছিল কীর্তিনাশা পদ্মা, এখন হয়ে যাবে কীর্তিমান পদ্মা। এর ওপর দিয়েই তো আমাদের নতুন সফলতা গাঁথা হবে, নতুন ইতিহাস তৈরি হবে। পদ্মা সেতুর নামকরণ নিয়ে অনেকে বলেছেন, শেখ হাসিনার নামে করার জন্য। পাথরে না লিখে হৃদয়ে লেখা হোক না শেখ হাসিনার নাম। পদ্মা সেতু যতদিন থাকবে, আমরা এই নাম হৃদয়ে নিয়েই চলে যাব। এটাও তার বিশালতা যে, তিনি তার নাম যুক্ত করতে চাননি।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, “বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘দাবায় রাখতে পারবা না।’ তার উত্তরসূরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিন্তু একই সুরে বলেছিলেন, বন্ধ করতে পারবা না। যে কথা বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, একইভাবে প্রধানমন্ত্রী বললেন, ‘আমরা অতিক্রম করবোই।’ সেই সাহস, তেজদীপ্ত ঘোষণাই আজকের পদ্মা সেতু। আমরা জানি যে, অর্থনীতিতে বিশাল প্রভাব পড়বে, আমাদের ভাগ্য বদলাবে। এটা নিশ্চিত যে, পদ্মা সেতু আমাদের ভাগ্য পরিবর্তন করবে। এই সাহস দেখিয়ে তিনি আবারও প্রমাণ করেছেন যে, আমরা মাথা নত করার লোক নই।”

বাঙালি জাতি আমরা আবার গর্বের সঙ্গে বলবো যে, ‘আমাদের দাবায় রাখতে পারবা না।’ এটা কিন্তু কম পাওয়া না।’— যোগ করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে ষড়যন্ত্রের মধ্যেই শেখ হাসিনা সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন উল্লেখ করে সালমান এফ রহমান, ‘আমি তখন তার (প্রধানমন্ত্রী) সঙ্গে ছিলাম। ষড়যন্ত্র যেটা হয়েছে, এটা সত্য। এটা খুবই গভীর মূলের ষড়যন্ত্র ছিল। এটা এমন ছিল না যে, কেউ কাউকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য এমন করেছে। ষড়যন্ত্র ছিল বাংলাদেশে যেন এত বড় অবকাঠামো না হয়।’

তিনি বলেন, ‘বিশ্ব ব্যাংকের অভিযোগ ছিল ভিত্তিহীন। কাজ তখনও শুরু হয়নি, কনস্ট্রাকশন শুরু হয়নি, কিন্তু তারা (বিশ্বব্যাংক) বলছে, কনসালটেন্সিতে দুর্নীতি হয়েছে। অথচ কনসালটেন্ট তখন নিয়োগই দেওয়া হয়নি। সেটা করার আগেই দুর্নীতি করার নাকি ইচ্ছা ছিল! দুর্নীতি হয়েছে- এমনটাও অভিযোগ ছিল না তাদের। দুর্নীতি করার ইচ্ছা ছিল, এই ভিত্তিতে তারা অর্থায়ন বন্ধ করে। তাতে বোঝা যাচ্ছে, এই সেতু যেন বাংলাদেশ না করতে পারে সেটাই ছিল মূল উদ্দেশ্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি সেদিন পাকিস্তানের সোশ্যাল মিডিয়ার একটি পোস্ট দেখছিলাম। সেটি প্রধানমন্ত্রীকে ফরোয়ার্ড করেছিলাম। যে তারা কীভাবে দেখছে। কয়েকদিন আগে আমাকে একজন পাকিস্তানি ব্যবসায়ী বলছিলেন যে, শেখ হাসিনা পাকিস্তানের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা হয়ে গেছেন। আমি বলব- প্রধানমন্ত্রীর নাম থাকুক আর না থাকুক এটি শেখ হাসিনা সেতু।’

সালমান এফ রহমান বলেন, কানাডার আদালত পর্যন্ত গড়ায় পদ্মা সেতুর বিষয়টা। সেখান থেকে রায় এলো যে, কোনো দুর্নীতি হয়নি। সেই সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাহস করে বললেন, তাদের টাকার দরকার নেই, আমরা নিজের টাকায় করব। তখন সরকারের অনেকেই বলেছিলেন এরকম না করার জন্য, বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে ঝামেলা না করার জন্য। তারা বলেছিলেন, বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক রাখা উচিত।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের কয়েক জনই নিজের টাকায় সেতু করতে বাধা দিয়েছিলাম। প্রধানমন্ত্রী তখন বলেছিলেন, তোমরা চেষ্টা করছো করো। কিন্তু আমি বলে দিচ্ছি, বিশ্ব ব্যাংক টাকা দেবে না। ঠিকই দিল না। প্রধানমন্ত্রী আমাদের বললেন, আমাকে খামোখা ছয় মাস পেছালে। আমি তো আগেই এটা করতে পারতাম। নিজের টাকায় পদ্মা সেতু করা নিয়েও সুশীল সমাজ অনেক সমালোচনা করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি পদ্মা সেতু নিয়ে অনেক সমালোচনা করেছে। বিএনপি আগে বলেছে, সেতু ভেঙে যাবে, পড়ে যাবে, এটা কনস্ট্রাকশন করা যাবে না। যখন কনস্ট্রাকশন হয়ে গেল তখন তারা ক্রেডিট নিতে চাইল যে, এটার ভিত্তিপ্রস্তর তারা করেছে। কিছু দিন আগে তাদের আমলের যোগাযোগমন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা বিবৃতি দিলেন যে, এমন কিছু হয়নি। বিএনপি কী বলছে, সেটা নিয়ে যত কম কথা বলা যায় তত ভালো।’

পদ্মা সেতু দিয়ে বাংলাদেশের একটা আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডিং হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন সালমান এফ রহমান।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার ও এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক ও বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা কাজী আকরাম উদ্দিন, এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি সালাম মুর্শেদী, এফবিসিসিআই সাবেক সভাপতি ও সংসদ সদস্য শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, সিনিয়র সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল, গ্লোবাল টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, একাত্তর টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল হক বাবু, বিএসএমএ চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন, মাছরাঙা টেলিভিশনের হেড অব নিউজ রেজওয়ানুল হক, অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. জামালউদ্দিন আহমেদ, সিপিডি’র বিশেষ ফেলো ড. মুস্তাফিজুর রহমান এবং বুয়েটের অধ্যাপক ড. শামসুল হক প্রমুখ।

সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম

আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক উপকমিটি জাতীয় অর্থনীতিতে পদ্মা সেতুর গুরুত্ব টপ নিউজ সেমিনার

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

উর্মিলার সংসার ভেঙে যাওয়ার কারণ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:০২

নতুন পরিচয়ে কুসুম সিকদার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:৫৭

সম্পর্কিত খবর