জলবায়ু পরিবর্তনে অনেক খাদ্য শস্যের প্রজাতি বিলুপ্ত হতে পারে
২২ জুন ২০২২ ২২:৫৪
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অচিরেই অনেক খাদ্য শস্যের প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। সেই বিবেচনায় আমি বিশ্ব খাদ্য ফোরামকে একটি আন্তর্জাতিক বীজ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানাই যেন সব ধরনের উদ্ভিদ প্রজাতির বীজ আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সংরক্ষণ করে।
বুধবার (২২ জুন) জাতীয় সংসদে ঢাকা-১১ এ কে এম রহমতুল্লাহ্ এর প্রশ্নের জাবাবে সংসদ নেতা সংসদে এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জিনগত বৈচিত্র্য বজায় রাখা যায়। একটি আন্তর্জাতিক বীজ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হলে এটি শত শত বছর ধরে যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে খাদ্য সংকট মোকাবিলায় সহায়ক হতে পারে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে স্থানীয় পরিসরে ছোট ছোট বীজ ব্যাংক থাকলেও আন্তর্জাতিক সংকট, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ইত্যাদি পরিস্থিতিতে এ ধরনের বীজ ব্যাংক সমস্যা সমাধানে যথেষ্ট নয়। তাই, বর্তমান প্রেক্ষাপটে একটি পরিপূর্ণ আন্তর্জাতিক বীজ ব্যাংক অত্যাবশ্যক হয়ে উঠেছে। এর মাধ্যমে ক্লাইমেট ভালনারেবল তথা উপকূলীয় অঞ্চল এবং খরাপিড়িত অঞ্চলসমূহে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে লবণাক্ততা ও খরা সহিষ্ণু জাত উদ্ভাবনসহ শস্যের নিবিড়তা (Crop intensity) বৃদ্ধির কার্যক্রম গ্রহণ করা যেতে পারে। ক্লাইমেট ভালনারেবল অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে হতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের উপযোগী সাস্টেইনেবল (Sustainable) কৃষি উৎপাদন পদ্ধতির উদ্ভাবন সে বিবেচনায় আমি বিশ্ব খাদ্য ফোরামের মহাপরিচালককে এ ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানাই। এ ধরনের বহুপাক্ষিক উদ্যোগকে বাস্তবে রূপদান করতে সকল সদস্য রাষ্ট্রের সমর্থন প্রয়োজন যা একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া।’
তিনি বলেন, ৮-১১ মার্চ ঢাকায় অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)-এর এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ৩৬তম আঞ্চলিক সম্মেলনে যোগ দিতে এসে সংস্থাটির মহাপরিচালক Mr. Qu Dongyu (কিউ ডংইউ) ১৩ মার্চ ২০২২ আমার সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় আমি জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো বিশেষ করে ছোট দ্বীপ রাজ্যগুলোতে চাষ উপযোগী জমি দ্রুত হ্রাসে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই পদ্ধতিতে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একটি বৈশ্বিক উদ্যোগ গ্রহণের পরামর্শ দেই এবং একটি আন্তর্জাতিক বীজ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করি। কোভিড-১৯ মহামারির কারণে বিশ্বব্যাপী যোগান ব্যবস্থা (Supply Chain) ভেঙে পড়েছে। অধিকন্তু জলবায়ু পরিবর্তন ও বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক বৈরিতার কারণে বিশ্ব খাদ্য ব্যবস্থা একটি সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এরইমধ্যে বাংলাদেশসহ অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ দেশে কৃষিতে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে জলবায়ু সহনশীল কৃষি (Climate Smart Agriculture) ব্যবস্থা গড়ে তুলে ফসলের অভিযোজন ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে দেশীয় উদ্যোগের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সমন্বিত প্রয়াস জরুরি।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/একে