Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘বাংলার অহংকার’ পদ্মা সেতু নিয়ে গান

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৩ জুন ২০২২ ২৩:৫৫

ঢাকা: আকাশজুড়ে আষাঢ়ের মেঘ। এক পশলা ভারী বৃষ্টি শেষে তখনো বাতাসের তোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা দায়। সেই বাতাসে উত্তাল পদ্মার ঢেউ আছড়ে পড়ছে তীরে। এই আবহের মধ্য থেকেই ভেসে আসছে গান— ‘দাঁড়িয়ে আছে ওই দেখো বাংলার অহংকার, দাঁড়িয়ে আছে ওই দেখো স্বপ্নের সেতু আমার’।

সারাদেশের মানুষ যখন বহুল প্রতীক্ষিত স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের প্রহর গুনছে, ঠিক তখন সেই সেতুটি নিয়ে এমন আবেগমথিত বাণী আর সুর উঠে এলো শিল্পীর কণ্ঠে। দেশের ইতিহাসে কাঙ্ক্ষিত ও সবচেয়ে বড় অবকাঠামো প্রকল্প পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হতে বাকি আর মাত্র এক দিন। উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মতো পুরো দেশের মানুষের চোখ এখন এই সেতুতে। জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সামনে রেখে সরকারের পক্ষ থেকেও চলছে ব্যাপক আয়োজন। সেই আয়োজনে যুক্ত থাকতেই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অনুপ্রেরণায় নির্মিত হলো পদ্মা সেতু নিয়ে এই গান।

কবি ও লেখক সাদেকুর রহমান পরাগের কথায় গানটির সুর-সংগীতায়োজনে ছিলেন লাবিক কামাল গৌরব। নন্দিত সংগীতশিল্পী পান্থ কানাইয়ের সঙ্গে গৌরব নিজেও কণ্ঠ দিয়েছেন এই গানে। পান্থ কানাইয়ের কাছে স্বপ্নের এই পদ্মা সেতু এখন আর স্বপ্নে আবদ্ধ নেই, পদ্মা সেতু এখন ইতিহাসের বিস্ময়।

পন্থ কানাই বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে গান গাইতে পেরে আমি ভীষণ গর্বিত এবং ভাগ্যবান। এই গানের কথা— ‘দাঁড়িয়ে আছে ওই দেখো বাংলার অহংকার/ দাঁড়িয়ে আছে ওই দেখো স্বপ্নের সেতু আমার’। আজ এমন একটি অহংকার পদ্মা সেতু। এটি দেশের অহংকার। আমি গর্বিত অনুভব করছি পদ্মাসেতু নিয়ে গান গাইতে পেরে। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি এমন একটি অহংকার আমাদের জন্য তৈরি করে দেওয়ার জন্য।

গানের মাধ্যমে হলেও পদ্মা সেতুর সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে শিল্পীরা গর্বিত। সুরকার লাকিবের ভাষায়, পদ্মা সেতু বাঙালির আবেগ, অনুভূতির নাম। এই সেতু নিয়ে গান গাইতে পারাকেই বড় প্রাপ্তি মনে করছেন তিনি।

লাবিক কামাল গৌরব বলেন, সাধারণত ব্রিজ বা একটি বিল্ডিং নিয়ে আমরা গান বানাই না। কিন্তু পদ্মা সেতু শুধু একটি ব্রিজ না, আমাদের কাছে একটি আবেগ। আমি গানটির সুর করার সময় সে বিষয়টি অনুভব করেছি, সেই আবেগ দিয়েই গানটি তৈরি করেছি। এটি বাংলাদেশের জন্য একটি গর্বের জায়গা এবং নিজেদের সক্ষমতা প্রতিষ্ঠার জায়গা যে আমরা নিজেদের অর্থে, নিজেদের উদ্যোগে সেতুটি তৈরি করতে পেরেছি।

গানটির রেকর্ডিং শেষ করার পর সম্প্রতি পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে গানটির ভিডিওধারণ করা হয়। বৃষ্টি উপেক্ষা করে সেখানে শুটিং দেখতে সেতুতে কাজ করা শ্রমিকেরা নেমে আসেন। সামনে থেকে দেখেন প্রিয় শিল্পীদের ভিডিওধারণ।

গানটির ভিডিও নির্মাণ করেছেন প্রযোজক জাভেদ রুমি। তিনি বলেন, এই প্রোডাকশনটি করতে পেরে মনে হচ্ছে ইতিহাসের অংশ হতে পেরেছি। পদ্মা সেতুর কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে বেশ কয়েকবার আমি এখানে এসেছি। এবার যখন এলাম, তখন পুরো সেতু দাঁড়িয়ে গেছে। পূর্ণাঙ্গ সেতুটি দেখে অন্যরকম আবেগ কাজ করছে। সেতুটি ভবিষ্যতে অর্থনীতিতে অবদান রাখবে, এটি গর্বের বিষয়। এই সেতুকে ঘিরে প্রোডাকশনটি করতে পেরে ভীষণ ভালো লেগেছে।

গীতিকার সাদিকুর রহমান পরাগের ভাষায়, পদ্মা সেতু আমাদের নিজেদের চিনতে শিখিয়েছে। এটি নিছক কোনো সেতু নয়, এটি আমাদের সার্বভৌমত্বের প্রতীক। আমাদের সার্বভৌমত্বের জায়গায় যখন কেউ আঘাত করে তখন আমরা যে ঘুরে দাঁড়াতে পারি, সেই সার্বভৌমত্বের প্রতীক এই পদ্মা সেতু, প্রতিবাদের প্রতীক পদ্মা সেতু। আমরা জাতি হিসেবে যে ঘুরে দাঁড়াতে পারি, সেই ঐক্যের প্রতীক পদ্মা সেতু।

পরাগ বলেন, আমাদের ঐক্যবদ্ধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেজন্য পদ্মা সেতু কেবল ২১ জেলার যোগাযোগের মাধ্যম নয়, এটি আমাদের প্রতিবাদের প্রতীক, সার্বভৌমত্বের প্রতীক এবং প্রতিবাদের ভাষা। এই জায়গা থেকে পদ্মা সেতু নিয়ে অনেকেই গান তৈরি করেছেন। ভেবেছি, আমরাও একটি কিছু তৈরি করতে চাই। সেই জায়গা থেকে গানটি লেখা হয়েছে।

এই গীতিকার আরও বলেন, পদ্মা সেতুর পয়েন্ট অব ভিউ থেকে বিষয়টি খুব সরলভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। জানি না কেমন হয়েছে। দর্শক-শ্রোতারা দেখে বলতে পারবেন কেমন হয়েছে। তবে আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। পদ্মা সেতু ঘিরে দেশবাসীর যে আবেগ, সেই আবেগেরই প্রতিফলন ঘটেছে গানটিতে।

আগামী ২৫ জুন স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগেই গানটি  ডিজিটাল মাধ্যমে রিলিজ দেওয়া হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অডিও ও ভিডিও আকারে দর্শক-শ্রোতাদের কাছে গানটি পৌঁছে দেওয়া হবে। গানটি শ্রোতাপ্রিয়তা পাবে— এর সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্টরা সবাই এমনটিই প্রত্যাশা করছেন।

সারাবাংলা/জেআর/টিআর

টপ নিউজ পদ্মা সেতু নিয়ে গান পান্থ কানাই লাবিক কামাল গৌরব


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর