বরিসকে পদত্যাগ করতে বলে নিজেই পদচ্যুত ব্রিটিশ মন্ত্রী
৭ জুলাই ২০২২ ০৩:১৫
মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্যের পদত্যাগের মুখে খোদ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকেই পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছিলেন গৃহায়ন ও সম্প্রদায় বিষয়ক মন্ত্রী মাইকেল গোভ। সে আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন বরিস। উল্টো এবার মাইকেল গোভকেই পদচ্যুত করেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ১০ ডাউনিং স্ট্রিটের একটি সূত্র মাইকেল গোভকে রীতিমতো ‘সাপ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
বিবিসির খবরে বলা হয়, বাংলাদেশ সময় বুধবার (৬ জুলাই) দিবাগত রাত ২টার দিকে মাইকেল গোভকে পদচ্যুত করেছেন বরিস জনসন। অথচ ব্রেক্সিট ক্যাম্পইনের সময় বরিস জনসনের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হিসেবেই পরিচিত কনজারভেটিভ পার্টির এই নেতা।
১০ ডাউনিং স্ট্রিট সূত্র বলছে, সাপকে কখনো সঙ্গে রাখা যায় না যে কি না বড় ধরনের কোনো সমস্যার মুখে আপনার পাশেই থাকবে না। শুধু তাই নয়, তিনিই আবার গণমাধ্যমকে উচ্ছ্বাসের সঙ্গে বলেন, আপনার (ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী) সরে দাঁড়ানো উচিত।
আরও পড়ুন- পদত্যাগ করবেন না বরিস জনসন
মাইকেল গোভ কনজারভেটিভ পার্টির একজন প্রভাবশালী নেতা। ২০১০ সাল থেকে তিনি কনজারভেটিভ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। পরে তাকে গৃহায়নমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এর আগেও তিনি দল ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন।
মাইকেল গোভ বিভিন্ন সময়ে ব্রিটিশ সংসদে চিফ হুইপ, ডাচি অব ল্যানচেস্টারের চ্যান্সেলর, আইন ও বিচার বিষয়ক মন্ত্রী এবং পরিবেশমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। ব্রেক্সিট প্রচারণার সময় বরিস জনসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার কথা তো আগেই বলা হয়েছে।
বরিস জনসন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে তার অনুগত হিসেবেই পরিচিত ছিলেন গোভ। তবে ২০১৬ সালে কনজারভেটিভ পার্টির শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতিযোগিতায় তিনি বরিস জনসনকে সমর্থন দিয়েছিলেন। শেষ মুহূর্তে অবশ্য নাটকীয়ভাবে তিনি সেই সমর্থন প্রত্যাহার করে নিজেই দলীয় প্রধান পদে প্রার্থী হিসেবে আবির্ভূত হন।
আরও পড়ুন- ২ ব্রিটিশ মন্ত্রীর পদত্যাগ, বড় সংকটে সরকার
সেবার অবশ্য বরিস বা গোভ কেউই জয় পাননি। সেবার দলের প্রধান নির্বাচিত হয়েছিলেন সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। এরপরও অবশ্য ২০১৯ সালের দলীয় প্রধানের পদে নির্বাচনে বরিস জনসনের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন গোভ।
মাইকেল গোভকে পদচ্যুত করায় ব্রিটেনের রাজনৈতিক অঙ্গন আরও বেশি উত্তপ্ত হয়ে উঠল। এর আগে নানা কেলেঙ্কারিতে জর্জরিত ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনার মধ্যে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী পদত্যাগে করে বসেন। চলমান পরিস্থিতিতে দলীয় সংসদ সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের পদত্যাগ দাবি করেন। তাদের সঙ্গেই সুর মিলিয়েছিলেন গোভ। তবে বরিস জনসন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়ছেন না।
সারাবাংলা/টিআর