লোডশেডিং নিয়ন্ত্রণে অফিস টাইম কমাতে চায় সরকার
৭ জুলাই ২০২২ ১৪:৪১
ঢাকা: দেশজুড়ে লোডশেডিং নিয়ন্ত্রণে বিদ্যুতের চাহিদা কমাতে চায় সরকার। সেক্ষেত্রে অফিসের সময় কমিয়ে আনার চিন্তা করা হচ্ছে। পাশাপাশি ওয়ার্ক ফর্ম হোমেরও চিন্তা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী। বর্তমান পরিস্থিতিকে যুদ্ধ উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, এই যুদ্ধ মোকাবিলায় সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।
বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বিদ্যুৎ, জ্বালানি বিভাগ এবং উৎপাদন, বিতরণ সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, ‘সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গ্রিডে সাড়ে ১৪ হাজার পর্যন্ত চাহিদা হতে পারে। সেখান থেকে কতটা কমাতে পারি সেই চিন্তা করা হচ্ছে। আমরা সাশ্রয়ী হলে হয়ত চাহিদা সাড়ে ১২ হাজার নামিয়ে আনতে পারব। মার্কেটগুলো নির্ধারিত সময়ের সময়ের মধ্যে বন্ধ করা, অফিসের সময় কমিয়ে আনা যায় কি না (৯ টা থেকে ৩ টা) সেই চিন্তা করা হচ্ছে। এছাড়া প্রতিদিন অফিসে না গিয়ে ওয়ার্ক ফর্ম হোমের কথাও ভাবা হচ্ছে।’
ড. তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী বলেন, ‘সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে এসির ব্যবহার ২৫ এর নিচে রাখা এবং ব্যবহার কম করলে হয়তো লোডশেডিং অনেক কম হবে। মসজিদে এসির ব্যবহার কমাতে হবে। বিয়েসহ সব অনুষ্ঠান সাতটার মধ্যে শেষ করতে হবে। তখন বিদ্যুতের চাহিদা কমে যাবে।’ তিনি বলেন, ‘এটা একটা যুদ্ধের মতো। এ যুদ্ধ মোকাবিলায় সকলকে সহযোগিতা করতে হবে।’
জ্বালানি উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘বিশ্বের অনেক দেশ এক্ষেত্রে অ্যাপ তৈরি করেছে। অন্যান্য দেশের চেয়ে বাংলাদেশ এখনো অনেক ভালো অবস্থানে। তবে তা নিয়ে আত্মতুষ্টির অবকাশ নেই। দেশে বিদ্যুত খাত অনেক উন্নত হয়েছে। আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা আছে। কিন্তু বিশ্ববাজারে দাম না বাড়লে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না।’
তিনি বলেন, ‘২০০৯ সালের দিকে যখন সরকার ক্ষমতা নিল তখন অনেক লোডশেডিং হতো। আমরা পদক্ষেপ নিয়েছিলাম যে, সকলকে সাশ্রয়ী হতে হবে। আবাসিকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির ব্যবহার কমাতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ভাবছি লোডশেডিংয়ের বিষয়টি গ্রাহকদের আগে কীভাবে জানানো যায়, সেটা ভাবা হচ্ছে। এতে গ্রাহক প্রস্তুতি নিতে পারে। আগে উদ্যোগ নিয়েছিলাম, কিন্তু তা মাঠ পর্যায়ে কার্যকর করা যায়নি। তবে যে নয়টি কমিটি রয়েছে সেগুলোকে আবার অ্যাকটিভ করা হচ্ছে। আমরা চাচ্ছি যে, মানুষ যাতে সহজে জানতে পারে।’
ড. তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ে যে কমিটি রয়েছে সেগুলো শক্তিশালী করা হবে। কেন্দ্রীয়ভাবে কমিটিগুলোর তদারকি বাড়াতে হবে। যে ঘাটতি হবে তা যেন গ্রাহকদের জানানো যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই সংকট কাটাতে পুরনো গ্যাস ফিল্ডগুলো থেকে কী পরিমাণে গ্যাস পাওয়া যায় সে বিষয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি অবৈধ বিদ্যুৎ ও গ্যাসলাইন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সারাবাংলা/জেআর/পিটিএম