রাস্তাঘাট আর পার্কে ঘুরেই ইদ আনন্দ উপভোগ
১০ জুলাই ২০২২ ২১:০৮ | আপডেট: ১১ জুলাই ২০২২ ১২:৪২
ঢাকা: সকাল থেকে পশু কোরবানি, রান্না বান্না, খাওয়া- দাওয়া শেষে পড়ন্ত বিকেলে পরিবার পরিজন নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন অনেকেই। তবে ইদ আনন্দে অনেকটাই ভাটা পড়েছে অধিকাংশ বিনোদনকেন্দ্র বন্ধ থাকায়। শিশুপার্ক, জাদুঘরের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় রাজধানীর টিএসসি, শাহবাগ, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রমনা পার্কে ঘুরে বেড়িয়েছেন সকলে। ছবি তুলছেন, ঘুরছেন, গল্পে করে সময় কাটাচ্ছেন কেউ কেউ। আবার কেউ তুলছেন সেলফি।
মহামারি করোনাভাইরাসের কারনে টানা দুই বছর উৎসব করে ইদ উদযাপন করতে পারনেনি কেউ। রোজার ইদের মতো এবার কোরবানির ইদে মানুষের জীবনে এনেছে বাড়তি আনন্দ। এই আনন্দ উপভোগ করতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে পছন্দ করেন। মূল উদ্দেশ্য থাকে ইদ উপভোগের পাশাপাশি নিজেদের মতো করে একটু অবসর কাটানো। আর পরিবারের ছোট সদস্যরা চায় শিশু পার্কের মতো জায়গায় গিয়ে হৈ হুল্লোড় করতে। কিন্তু সে সুযোগ এবারও পাচ্ছে না শিশু কিশোরেরা। গত দুই বছরের মতো এবারও রাজধানীর একমাত্র শিশুপার্কটি বন্ধই থাকছে। ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মতো মাঠে ঘাটেই কাটাতে হচ্ছে ইদ আনন্দ।
রাজধানীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ক্যাম্পাস, সোহরাওয়াদী উদ্যান, শিশুমেলা, রমনা পার্কের মতো ঘোরার জায়গাগুলো এবার দর্শনার্থীদের সংখ্যা একেবারে কম দেখা গেছে। টিএসসি এলাকায় সব ধরনের লোক সমাগম কিছুটা চোখে পড়লেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ছিলো একেবারে সুনসান। যে কজন দেখা গেছে তাদের বেশিরভাগই ছিলো শযারা ইদের ছুটিতে হলেই ছিলেন কিংবা ঢাকা শহরেই বসবাস করেন ইদের দিনে কেবল তাদেরকেই ক্যাম্পাসে আড্ডা দিতে দেখা গেছে।
টিএসসিতে ছিল সব ধরনের মানুষের সমাগম। বন্ধুরা মিলে চায়ের দোকানে গল্পে আড্ডায় কাটিয়েছেন ইদের বিকেল। রোজার ইদের মতো সমাগম দেখা যায়নি সোহরাওয়াদী উদ্যানে। যারা এসেছেন তাদের দেখে মনে হয়েছে বায়ু দূষণ, শব্দ দূষণ থেকে দুইদিনের ছুটিতে শান্তিতে নিশ্বাস নিতে যেন বেরিয়েছেন।
এখানে ঘুরতে আসা আয়শা সিদ্দিকি বলেন, ‘ইদের সময় সবচেয়ে আনন্দ রাস্তায় ঘুরেই। কারণ অন্য সময় এত পরিমাণ জ্যামে সময় চলে যায়, ঢাকার কোথায় কি সেদিকে নজর কমই থাকে।’
তবে মানুষের ভিড় ছিল না রমনা পার্কে। যারা বেড়াতে আসছেন তাদের অনেকই প্রকৃতি ও পরিবেশের সঙ্গে ছবি তুলে কাটিয়েছেন বেশিরভাগ সময়। শিশুদের খেলার রাইডগুলো বন্ধ থাকায় পার্কের মাঠেই কাটাতে হয়েছে তাদের।
এখানে বেড়াতে আসা লিমন আহমেদ বলেন, ‘শিশু পার্কটা বন্ধ থাকায় বাচ্চাদের বেড়ানোর কোনো জায়গাই নেই। এমনিতেই ঢাকাতে বেড়ানোর জায়গার অভাব তার ওপরে এটা দেখি বন্ধ।’
মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘ব্যবসার কারণে বাচ্চাদের সময় দিতে পারি না। বাচ্চারা খেলনা পছন্দ করে করোনার আগে কয়েকবার শিশুপার্কে নিয়ে এসেছি। ভীষণ আনন্দ পেয়েছে। এবার এসে দেখি বন্ধ।’
২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে রাজধানীর শাহবাগে শিশুপার্কটির সামনে একটি বিজ্ঞপ্তি টাঙিয়ে বন্ধ ঘোষণা করেছিলো ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিলো, ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্বম্ভ নির্মাণ ( তয় পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় শিশু পার্কের উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের কাজ মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন থাকায় অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এড়াতে কেন্দ্রীয় শিশুপার্ক সর্ব সাধারণের জন্য বন্ধ থাকবে। তখন থেকে এখনও বন্ধ আছে। ফলে এবারও ইদের দিন শিশুরা অভিভাবকদের হাত ধরে আর পার্কটিতে যেতে পারছে না। ইদের দিনে অনেকেই পরিবার নিয়ে শিশুপার্কের গেটে নেমে ফিরে যেতে দেখা গেছে।
অন্যদিকে রাজধানীর শ্যমলীতে ছোট পরিসরে ডিএনসিসি ওয়ান্ডারল্যান্ড (শিশু মেলা) থাকলেও শিশুদের তাতে মন ভরে না। এখানে রাইডের সংখ্যাও কম।
আবার জাদুঘরে ঘুরে বেড়ানোরও সুযোগ নেই। গত দুই বছরের মতো এবারও ইদের দিন জাতীয় জাদুঘর ও তার আওতাধীন শাখা জাদুঘরগুলো বন্ধ রয়েছে। বন্ধ রয়েছে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর, বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরও। ফলে এক রকম রাস্তাঘাটে ঘুরে বেড়িয়েই সকলকে ইদ আনন্দ উভভোগ করতে হয়েছে।
তবে খোলা রয়েছে মিরপুরে জাতীয় চিড়িয়াখানা। সেখানে সবচেয়ে বেশী দর্শনার্থী ছিল।
সারাবাংলা/জেআর/একে