চেষ্টা করলে ফল আসে, প্রমাণ করেছে ডিএনসিসি: মেয়র আতিকুল
১১ জুলাই ২০২২ ১৬:১২
ঢাকা: রাজধানীর উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় কোরবানির পশু জবাই শেষে ১২ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। তবে নির্ধারিত সময়ে আগেই সেটি সম্পন্ন হয়েছে দাবি করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, চেষ্টা করলে ফল আসে—এটি প্রমাণ করেছে উত্তর সিটি করপোরেশন। এজন্য নগরবাসীকে আমি ধন্যবাদ জানাই। একইসঙ্গে পরিচ্ছন্নতাকর্মী, কাউন্সিলর ও সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তাকেও ধন্যবাদ জানাই। তাদের সহযোগিতা ছাড়া এমনটা সম্ভব হতো না।
ডিএনসিসি মেয়র এই সময় একইসঙ্গে ধন্যবাদ জানান মিরপুর ৭ নং ওয়ার্ডের নাগরিকদের। এখানে সিটি করপোরেশনের নির্দিষ্ট করা সাতটি প্যান্ডেলে ৬ হাজার পশু কোরবানি দিয়ে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে নাগরিকরা। আর তাই এই ওয়ার্ডের জন্য বিশেষ বরাদ্দের ঘোষণাও দেন ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
সোমবার (১১ জুলাই) ডিএনসিসি ভবনে কোরবানির বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রমের সমাপ্তি ঘোষণার ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, এবার ইদের দিন অর্থাৎ রোববার (১০ জুলাই) রাত ১০ টার মধ্যেই বর্জ্য অপসারণ করতে পারায় নাগরিকদের ধন্যবাদ। একইসঙ্গে এই বর্জ্য অপসারণে কাজ করে যাওয়া আমাদের ১০ হাজার পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে ধন্যবাদ জানাই। এছাড়াও কাউন্সিলর ও বর্জ্য অপসারণে যুক্ত সবাইকে ধন্যবাদ।
তিনি বলেন, আমাকে অনেকেই বলেছিল বর্জ্য অপসারণের জন্য ২৪ ঘণ্টা সময় ঘোষণা করার জন্য। কিন্তু আমরা একেকটি ওয়ার্ডে বর্জ্যের পরিমাণ ও সেগুলো সরাতে কতজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও গাড়ি লাগবে সেটার পরিকল্পনা করেছি। এরপরে বলেছি ১২ ঘণ্টার মধ্যেই সেটা শেষ করবো।
তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই নয়, এবার অনেকেই পাড়ায়-মহল্লায় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেছে বর্জ্য অপসারণের জন্য।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, এবার চার হাজার ২৬৭টি গাড়ির সাহায্যে ১৯ হাজার ২২৩ টন কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করেছে ডিএনসিসি। আমরা নগরবাসীদের কাছে ছয় লাখ ৫০ হাজার পলিব্যাগ সরবরাহ করেছি। এইসব পলিব্যাগ পরীক্ষা করে আমরা দেখেছি এগুলোতে ৩৫ কেজি পর্যন্ত ভার বহন করা সম্ভব হয়। এছাড়াও ৬০ টন ব্লিচিং পাউডার ও ১০ হাজার ক্যান স্যাভলন আমরা সরবরাহ করেছি নগরবাসীদের জন্য।
তিনি বলেন, নগরবাসীর সহায়তায় রাত ১০টার মধ্যে উত্তরের বর্জ্য অপসারণ করা গেছে। চেষ্টা করলে ফল আসে, তা প্রমাণ করেছে উত্তর সিটি।
তবে ভবিষ্যতেও রাস্তার মধ্যে কোরবানি না দেয়ার আহ্বান জানান মেয়র আতিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, এলাকাভিত্তিক জায়গা নির্ধারণ করে কোরবানি দিলে ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যায়। কিন্তু গতবার ৫৪টি ওয়ার্ডে প্যান্ডেল খাটানো হলেও সেখানে মানুষ কোরবানি দিতে আগ্রহ দেখান নি। আর এবার তাই আমরা পরীক্ষামূলকভাবে তিনটি ওয়ার্ডের নয়টি স্থানে প্যান্ডেল করে স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছিলাম।
তিনি আরও বলেন, এই তিন ওয়ার্ডের মাঝে বারিধারার জে ব্লকে একটি প্যান্ডেল ছিল। এই স্থানে মাত্র ১৩টি পশু কোরবানি হয়। নিকুঞ্জে নির্ধারিত করা স্থানে মাত্র ২০টি কোরবানি হয়। তবে মিরপুরে ৭ নং ওয়ার্ডে নির্ধারণ করা সাতটি প্যান্ডেলে ছয় হাজার পশু কোরবানি দেওয়া হয়েছে গতকাল।
মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, মিরপুরের ৭ নং ওয়ার্ডে সাতটি প্যান্ডেল করে ৬ হাজার গরু কোরবানি দিয়ে উদাহরণ তৈরি করেছে এলাকাবাসী। তারা বাসার সামনের রাস্তায় কোরবানি না করে এসব প্যান্ডেলে পশু জবাই করে সহায়তা করেছে।
তিনি বলেন, এই ওয়ার্ডের এলাকাবাসী, গুণিজন সবার সঙ্গে আমরা বসেছিলাম। প্রায় সাতদিন আমরা প্রচারণা চালাই। এই এলাকার পক্ষ থেকে একটি রাস্তা চালুর জন্য আবেদন জানানো হয়। আমি তাদের চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেছিলাম পশু কোরবানি সফলভাবে শেষ করতে পারলে পুরষ্কার ঘোষণা করা হবে। তারা আজ উদাহরণ সৃষ্টি করেছে।
তিনি আরও বলেন, মিরপুরের ৭ নং ওয়ার্ডের নাগরিকরা তাদের দেওয়া কথা রেখেছে। এখানে প্রতিটা প্যান্ডেলে আমরা মাংস পরিবহনের জন্য দুইটি করে গাড়ি রেখেছিলাম। এলাকাবাসী ও আমাদের কাউন্সিলরসহ সবাই একত্রিত হয়ে কাজ করায় সেখানে এতোগুলো কোরবানি দেওয়া সম্ভব হয়েছে। একইসঙ্গে সেখানে আমাদের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কর্মীরাও প্রস্তুত ছিল। আর সব মিলিয়ে কোরবানি ও বর্জ্য অপসারণে সফলতা দেখানোয় মিরপুর ৭ নং ওয়ার্ডের রাস্তার উন্নয়নে ১৫ কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা দিচ্ছি আমি।
মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আজকেও যারা কোরবানি দিচ্ছেন তাদের বর্জ্যগুলোও দ্রুত অপসারণ করা হবে। আগামীকাল যারা কোরবানি দিবেন তাদেরকেও আজকের মধ্যে সেটা শেষ করার অনুরোধ জানাই।
মেয়র বলেন, বর্জ্য সময়মত না সরাতে পারলে নগরবাসীর ভোগান্তি বাড়বে। এবার আমরা সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ৬০০ যানবাহনের ব্যবস্থা করেছিলাম।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনায় গাবতলী পশুর হাটের পাশে আধুনিক জবাইখানা করা হবে।
সারাবাংলা/এসবি/এএম