পারিবারিক-সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সিইসি

ঢাকা: প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ভোটের মাঠে তলোয়ার-রাইফেল নিয়ে প্রতিরোধ গড়ার বক্তব্যটি গণমাধ্যমে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। তিনি বলেন, সবার প্রতি অনুরোধ থাকবে যে মিডিয়ার ভাইয়েরা যারা আছেন, তারা যেনো বক্তব্যটাকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করেন। কারণ পারিবারিক-সামাজিকভাবে আমি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি, নির্বাচন কমিশনও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) নির্বাচন ভবনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল এসব কথা বলেন। সংলাপে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। অন্যদিকে চার নির্বাচন কমিশনারসহ ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এতে উপস্থিত ছিলেন।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমরা মিডিয়াকে অবাধ সুযোগ দিয়েছি। আমি আগে মন্ত্রণালয়ে সচিব ছিলাম। বৈঠক কখনো ওপেন করা হয় না। মিটিং অলওয়েজ কনফিডেনশিয়াল। তারপরে একজন মুখপাত্র সে বিষয়ে অবহিত করেন। কিন্তু কোনো একটা সময় এটা এখানে চালু হয়েছে। আমরা আর এটাকে বন্ধ করিনি। সবাই শুনতে পারেন, যে স্বচ্ছতাটা আমরা ধরে রাখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু যেভাবে আমাদের বক্তব্য বিকৃত হচ্ছে এবং মান-সম্মান যেভাবে বিকিয়ে যাচ্ছে, এটা নিয়েও আমাদের এখন চিন্তা-ভাবনা করতে হবে, যে আমরা কতটা ওপেন হব।’

প্রসঙ্গত, ১৭ জুলাই জাতীয় গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) সঙ্গে সংলাপে সিইসি বলেছিলেন, ‘কেউ যদি তলোয়ার নিয়ে দাঁড়ায়, আপনাকে রাইফেল বা আরেকটি তলোয়ার নিয়ে দাঁড়াতে হবে। আপনি যদি দৌড় দেন, তাহলে আমি কী করবো?’ এই বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রচার হলে দেশব্যাপী ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন সিইসি।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘যেভাবে বক্তব্যটা পত্র-পত্রিকায় উপস্থাপিত হয়েছে, এটা কখনো বক্তব্য হতে পারে না। আমরা অনেক সময় হাস্য-রসিকতা করি, আপনারাও করেন। এজন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করেছি। এটা যদি আমরা মনে করতাম যে সবার অস্ত্র নিয়ে আসা উচিত। তাহলে চার মাস আগে থেকেই ক্রমাগতভাবে বলে যেতাম আপনাদের যার যা আছে অস্ত্র, তীর-ধুনক, রাইফেল, বোম এগুলো নিয়ে আসবেন। এটা কথার পিঠে কথা, হাস্যরসের সঙ্গে বলা হয়েছিল। এটা আপনারা সহনশীলতার সঙ্গে দেখবেন, ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।’

সিইসি বলেন, ‘সংলাপের পর সবার মতামত পর্যালোচনা করবো, দেখবো কোন কোন বিষয়ে ঐকমত্য রয়েছে। আর কোন কোন বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বা আমাদের কর্মপরিধির মধ্যে সেগুলো পড়ে কি না, সেগুলো আমরা সংলাপ শেষে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করব।’

তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক ঐকমত্য তৈরি করার জন্য আপনাদের চেষ্টা করা উচিত। আপনাদের জন্য সেই সুযোগটা আরও বেশি। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে মোটাদাগে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেন- কেউ সহিংসতা করবো না, শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন করবো। কেউ সহিংসতা করলে সম্মিলিতভাবে প্রতিহত করব।’

সারাবাংলা/জিএস/একেএম

টপ নিউজ সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল