Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কম সুদে পুনঃঅর্থায়নের জন্য পরিবেশবান্ধব প্রকল্পের সংখ্যা বেড়ে ৬৮

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৪ জুলাই ২০২২ ২৩:৫৮

ঢাকা: পরিবেশবান্ধব পণ্য, প্রকল্প বা উদ্যোগে অর্থায়নের ক্রমবর্ধমান চাহিদা বিবেচনায় পুনরায় অর্থায়নযোগ্য এরকম পণ্য, প্রকল্প বা উদ্যোগের বিদ্যমান পরিসর গুণগত ও সংখ্যাগতভাবে বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন সার্কুলারের তথ্য বলছে, পুনঃঅর্থায়ন সংশ্লিষ্ট পণ্য, প্রকল্প বা উদ্যোগের সংখ্যা ৫৫টি থেকে বাড়িয়ে ৬৮টি করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এসব পণ্য, প্রকল্প বা উদ্যোগে পুনঃঅর্থায়নের ক্ষেত্রে সুদের হার হবে ব্যাংক হারের চেয়ে ১ শতাংশ কম।

বিজ্ঞাপন

রোববার (২৪ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স ডিপার্টটেমন্ট থেকে জারি করা এক সার্কুলারে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে, বিভিন্ন মেয়াদে পুনঃঅর্থায়নের ক্ষেত্রে সুদের হার একই থাকলেও মেয়াদভেদে পিএফআইয়ের মার্জিন ভিন্ন হবে।

সার্কুলারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, পরিবেশবান্ধব পণ্য, প্রকল্প বা উদ্যোগে পুনঃঅর্থায়নের জন্য ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর একটি এসএফডি সার্কুলার জারি করা হয়েছিল। ওই সার্কুলারের মাধ্যমে ৫৫টি পণ্য, প্রকল্প বা উদ্যোগকে পরিবেশবান্ধব বিবেচনায় পুনঃঅর্থায়নের আওতায় রাখা হয়েছিল। সরকার ঘোষিত বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা (পারসপেক্টিভ প্ল্যান, জাতীয় টেকসই উন্নয়ন কৌশল, ডেল্টা প্ল্যান, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য) বাস্তবায়নের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে প্রণীত টেকসই অর্থায়ন নীতিমালা ২০২০ অনুযায়ী এমন পণ্য, প্রকল্প বা উদ্যোগের সংখ্যা ৬৮-তে উন্নীত করা হয়েছে।

সার্কুলারে পুনঃঅর্থায়ন গ্রহণের যোগ্যতায় বলা হয়েছে, এই স্কিমের আওতায় কেবল পরিবেশবান্ধব পণ্য, প্রকল্প বা উদ্যোগ মেয়াদি ঋণের (টার্ম লোন) বিপরীতে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা পাবে। প্রকল্পের পরামর্শক, মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণ বা চলতি মূলধন বাবদ কোনো খরচ এই সুবিধার আওতাভুক্ত হবে না। পণ্য বা প্রকল্পের উৎপাদনক্ষমতা, প্রকৃত ব্যয় ইত্যাদির আলোকে বিতরণ করা ঋণের বিপরীতে প্রদেয় পুনঃঅর্থসংস্থান কোনোভাবেই সংশ্লিষ্ট পণ্য বা প্রকল্পের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত সর্বোচ্চ পুনঃঅর্থায়ন সীমা অতিক্রম করবে না।

আরও বলা হয়েছে, ঋণখেলাপিরাও এই পুনঃঅর্থায়নের যোগ্য হবেন না। বিতরণ করা ঋণের বিপরীতে বাংলাদেশ ব্যাংক বা উন্নয়ন সহযোগী বা অন্য কোনো উৎস থেকে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা পাওয়া প্রকল্পও এই স্কিমের আওতায় বিবেচ্য হবে না।

বিজ্ঞাপন

পরিবেশবান্ধব পণ্য, প্রকল্প বা উদ্যোগে পুনঃঅর্থায়নে সুদের হার উল্লেখ করে সার্কুলারে বলা হয়েছে, স্কিমের আওতায় পিএফআই কর্তৃক বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নেওয়া পুনঃঅর্থায়ন সুবিধাও ওপর ব্যাংক হারের চেয়ে (সময়ে সময়ে পরিবর্তনশীল) ১ শতাংশ কম হারে সুদ আদায়যোগ্য হবে। পিএফআই সরাসরি বা ইন্টারমিডিয়ারির সহায়তায় ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে ঋণের মেয়াদকালের ভিত্তিতে গ্রাহক পর্যায়ে সুদের হারও ব্যাংক হারের চেয়ে ১ শতাংশ কম হবে। এ ক্ষেত্রে ইন্টারমিডিয়ারির প্রাপ্য সুবিধা ব্যাংক-ইন্টারমিডিয়ারির সমঝোতার ভিত্তিতে ব্যাংক বহন করবে।

এ ক্ষেত্রে পিএফআই মার্জিন তুলে ধরে বলা হয়েছে, ৫ বছরের কম মেয়াদি পুনঃঅর্থায়নের ক্ষেত্রে পিএফআই’র মার্জিন হবে অনধিক ২ শতাংশ, ৫ থেকে ৮ বছর মেয়াদের জন্য অনধিক ২ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং ৮ বছর বা তার বেশি মেয়াদের জন্য অনধিক ৩ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে গ্রাহক পর্যায়ে সুদের হার হবে ভিত্তি হারের সঙ্গে পিএফআই মার্জিনের যোগফলের সমান। তবে এই সার্কুলার জারির আগে পিএফআই থেকে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধার জন্য আবেদন করলে আগের নির্ধারিত সুদহার অপরিবর্তিত থাকবে।

মোট ১২টি শ্রেণিতে বিভক্ত করে ৬৮টি পণ্য, প্রকল্প বা উদ্যোগকে এই পরিবেশবান্ধব পুনঃঅর্থায়নের আওতায় রাখা হয়েছে। এর মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জ্বালানি দক্ষতা ও সম্পদ ব্যবহারের দক্ষতা, বিকল্প জ্বালানি, তরল ও কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পরিবেশবান্ধব ইট উৎপাদন, পরিবেশবান্ধন স্থাপনা, সবুজ কৃষি, সামাজিক দায়বদ্ধতা অর্থায়নের মতো শ্রেণির আওতাভুক্ত বিভিন্ন পণ্য, প্রকল্প ও উদ্যোগ রাখা হয়েছে।

কোন ধরনের পণ্য, প্রকল্প বা উদ্যোগের জন্য পুনঃঅর্থায়নের সর্বোচ্চ সীমা কত হবে, এর মেয়াদ গ্রেস পিরিয়ডসহ কত হবে এবং পুনঃঅর্থায়ন পাওয়ার যোগ্যতা পণ্য, প্রকল্প বা উদ্যোগভেদে কী হবে— এসব বিস্তারিত তথ্যও তুলে ধরা হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্কুলারে। কোনো একটি প্রকল্পে ২ বছর মেয়াদে ৩ শতাংশ হারে সুদ নিলে কিস্তি বিভাজন কেমন হবে, সেটিও উদাহরণ দিয়ে তুলে ধরা হয়েছে এই সার্কুলারে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্ণাঙ্গ সার্কুলারটি দেখুন এখানে—

সারাবাংলা/টিআর

কম সুদে পুনঃঅর্থায়ন পরিবেশবান্ধব প্রকল্প পুনঃঅর্থায়ন স্কিম বাংলাদেশ ব্যাংক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর