ছোট ভাইকে খুন: বড় ভাই ও ৩ ভাতিজার যাবজ্জীবন
২৫ জুলাই ২০২২ ১৭:২৮
চট্টগ্রাম ব্যুরো: তিন দশক আগে চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় ছোট ভাইকে খুনের দায়ে এক ব্যক্তি ও তার তিন ছেলেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই রায়ে আদালত তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় আদালত দু’জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন।
সোমবার (২৫ জুলাই) চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ফেরদৌস ওয়াহিদ এ রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডিতরা হলেন- নুরুল ইসলাম এবং তার তিন ছেলে মো. ওসমান গণি, সরোয়ার কামাল ও আব্বাস উদ্দিন।
১৯৯৯ সালের ৬ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার আধুনগর রুস্তমের পাড়া আজলা পুকুরের পাড়ে সৌদিপ্রবাসী নুরুল কবির (৪৫) খুন হয়েছিলেন। এ ঘটনায় তার স্ত্রী খালেদা ইয়াসমিন দণ্ডিত চারজনসহ মোট ছয়জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছিলেন।
মামলার নথিপত্রের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি লোকমান হোসেন চৌধুরী সারাবাংলাকে জানান, খুন হওয়া নুরুল কবির দণ্ডিত নুরুল ইসলামের ছোট ভাই। নুরুল কবির বড় ভাই নুরুল ইসলামের ছেলে ইসমাইলকে সৌদিআরবে নিয়ে গিয়েছিলেন। এতে নুরুল কবিরের এক লাখ ৭০ হাজার টাকা খরচ হয়েছিল।
ঘটনার তিন মাস আগে নুরুল কবির দেশে ফিরে ওই টাকা বড় ভাইয়ের কাছে ফেরত চান। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। ঘটনার দিন ঝগড়ার এক পর্যায়ে নুরুল ইসলাম তার ছেলেদের নিয়ে নুরুল কবিরকে মারতে যান। এসময় নুরুল কবির পালিয়ে ঘরের পেছনে পুকুর পাড়ে চলে যান। আসামি আব্বাস সেখানে গিয়ে শাবল দিয়ে তার চোখে আঘাত করেন। নুরুল কবির মাটিতে পড়ে গেলে অন্য আসামিরা লাঠি ও রড দিয়ে তাকে মারধর করেন। এতে নুরুল কবিরের মৃত্যু হয়।
এই ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় ২০০০ সালের ২১ ডিসেম্বর পুলিশ ছয় আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। ২০০৩ সালের ১৩ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষ মোট ১৭ জন সাক্ষীকে আদালতে উপস্থাপন করে। এছাড়া আরও তিনজন সাক্ষী সাফাই সাক্ষ্য দেন।
আদালত রায়ে বাবা ও তিন ছেলেসহ চারজনকে সাজা দিয়েছেন। নুরুল ইসলামের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম ও তার মেয়ে নাসিমা আক্তারকে খালাস দিয়েছেন। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডিত আসামিরা আদালতে হাজির ছিলেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম