‘জলবায়ু প্রভাবিত অভিবাসন নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করতে পারে’
২৬ জুলাই ২০২২ ০০:০৫
ঢাকা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সতর্ক করে বলেছেন, জলবায়ু প্রভাবিত অভিবাসন গুরুতর নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করছে। যা দেশের সীমানা ছাড়িয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ মনে করে যে, জলবায়ু প্রভাবিত লাখ লাখ অভিবাসীদের দুর্দশা অবশ্যই যথাযথ ফোরামে তুলে ধরতে হবে এবং জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক আলোচনায় নারী ও শিশু-সংবেদনশীল বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে।
সোমবার (২৫ জুলাই) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত ‘হিউম্যান মোবিলিটি ইন দ্য কনটেক্সট অব ক্লাইমেট চেঞ্জ: টুওয়ার্ডস এ কমন ন্যারেটিভ অ্যান্ড অ্যাকশন পাথওয়ে’ শীর্ষক নীতি বিষয়ক সংলাপে এসব কথা বলেন মোমেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
জলবায়ু অভিবাসনের বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ ও জরুরি পদক্ষেপ কামনা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এই বিষয়ে সংবেদনশীল যে, জলবায়ু প্রভাবিত জোরপূর্বক অভিবাসন দেশের সীমানার বাইরে ছড়িয়ে পড়ার পাশাপাশি গুরুতর নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।’
এই অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য ছিল জলবায়ু পরিবর্তন-অভিবাসন সংক্রান্ত বৈশ্বিক এজেন্ডাকে আরও এগিয়ে নেওয়ার জন্য বাংলাদেশের জন্য সম্ভাব্য উপায়গুলো চিহ্নিত করার লক্ষ্যে সকল স্টেকহোল্ডারদের একত্রিত করা। যাতে চলতি বছরের নভেম্বরে মিশরের শারম আল-শেখ নগরীতে জাতিসংঘের ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জের জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন (কপ২৭) উপস্থাপন করা যায়। সংলাপটি সরকার, সুশীল সমাজ, বেসরকারি খাত এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পাশাপাশি মিডিয়ার বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরার একটি ফোরাম হিসাবে কাজ করেছে।
মোমেন বলেন, ‘গ্লাসগোতে গত কপ২৬ সম্মেলনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা বৃদ্ধি, নদী ভাঙন, বন্যা এবং খরার কারণে বাস্তুচ্যুত জলবায়ু অভিবাসীদের জন্য বিশ্বব্যাপী দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। সামগ্রিকভাবে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাস্তুচ্যুত বাংলাদেশিদের সংখ্যা ২০৫০ সালের মধ্যে ১৩ দশমিক ৩ মিলিয়নে পৌঁছতে পারে। বিশ্বব্যাংকের মতে এটি দেশের অভ্যন্তরীণ অভিবাসনের প্রধান কারণ হয়ে উঠেছে।’
তিনি বলেন, ‘এ ধরনের বাস্তুচ্যুতি ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য বড় শহরের ওপর ভারী বোঝা তৈরি করছে। কক্সবাজারে ব্যাপক পরিবেশগত ক্ষতি স্বীকার করেও বাংলাদেশ মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিচ্ছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সরকার এই দুটি বাস্তুচ্যুতি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। পাশাপাশি আমাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের গতিপথকে ত্বরান্বিত করছে।’ জলবায়ু অভিবাসী ইস্যুটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উপেক্ষা করতে পারে না বলে উল্লেখ করেন ড. মোমেন।
সারাবাংলা/পিটিএম