‘এখন ঋণ দরকার, তাই আইএমএফের কাছে আবেদন করেছি’
২৭ জুলাই ২০২২ ১৬:৩১
ঢাকা: অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, এখন আমাদের ঋণ দরকার। সেজন্য আমরা আইএমএফের কাছে আবেদন করেছি। বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেনের ভারসাম্য রক্ষায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে ঋণ আবেদন করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা শুধু আইএমএফ নয়, বিশ্বব্যাংক, জাইকা, এডিবিসহ সব দাতা সংস্থা ও উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে ঋণ সহায়তা চাইব। আমাদের প্রতি তাদের পূর্ণ বিশ্বাস আছে।
বুধবার (২৭ জুলাই) দুপুরে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ঋণ দেওয়ার জন্য তারা আমাদের পিছে পিছে আছে। কারণ বাংলাদেশ একটি ভালো দেশ। ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা আছে। উন্নয়ন সহযোগীদের বাংলাদেশের ওপর পূর্ণ আস্থা আছে। তারা জানে, বাংলাদেশ সময়মতো ঋণ পরিশোধ করতে পারবে।’
কিছুদিন আগে বলা হয়েছিল, আইএমএফর কাছ থেকে ঋণ চায় না বাংলাদেশ। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘তখন আমরা যদি টাকা চাইতাম, আইএমএফ নানা শর্ত দিত। দর-কষাকষির জন্য আমরা সুযোগ পেতাম না। সেজন্য তখন চাইনি। এটা দেশের স্বার্থে করা হয়েছে। ঋণ নিলে সবার জানার অধিকার আছে। আমার কাজ হচ্ছে তার ব্যাখ্যা দেওয়া।’
আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘আমাদের ঋণ দরকার। আর কিছুদিন, এরপর ঋণ থাকবে না। আমরা তো বলেছিলাম ঋণ দেবো। আমি আবারও বলি আমরা ঋণ দিতে পারব। চাহিদা সবাই জানতে পারলে আমার ওপর খরচটা বেশি দেবে। সেজন্যই প্রয়োজন নেই বলেছি। এভাবেই আমাদের ম্যানেজ করতে হয়। ঋণের বিষয়টি যাতে কোনোভাবেই আমাদের বিপক্ষে না যায়। আমরা অর্থ চাই, আমরা বলেছি। কিন্তু কত লাগবে আমরা সেটি বলিনি।’
আইএমএফের কাছে ঋণের বিষয়ে চিঠি দেওয়ার বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এটা বলা হবে। আমাদের মিটিং চলছে। তাদের টিম এখানে আছে। আমরা চেয়েছি তারা আমাদের সক্ষমতা দেখুক। তারা বাংলাদেশকে ঋণ দেবে, সেজন্য তাদের সুযোগটা দিয়েছি।’
ডলার সংকট প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘কাজ হবে, একটু সময় লাগবে। এক্সপোর্ট বাড়ছে, রেমিট্যান্সও বাড়ছে। গত বছর রেমিট্যান্স কিছুটা কম হলেও চলতি অর্থবছর আশা করছি ভালো রেমিট্যান্স পাব। রেমিট্যান্স ও এক্সপোর্টের মাধ্যমেই ডলারের চাহিদা মেটানো হবে।’
তিনি বলেন, ‘কিছু আমদানিকারক মূল্যবৃদ্ধির কারসাজি করে আমদানি করছে। আমরা এসব অনিয়ম খতিয়ে দেখছি। তবে ডলারের দাম নির্ধারিত হবে চাহিদার ও জোগানের ভিত্তিতেই।’
ব্যাংক খাতে ছয়-নয় শতাংশ সুদের হার তুলে নেওয়ার কথা বলেছে আইএমএফ- এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের অর্থনীতি এখন ভালো অবস্থানে আছে। যদি ব্যাংক ঋণের সুদ ছয়-নয় নির্ধারণ করা না হতো তাহলে কোভিডের সময় ছোট, বড়, মাঝারি কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই টিকে থাকতে পারত না। ভয়াবহ বেকারত্ব সৃষ্টি হতো। আমি মনে করি, ব্যাংক খাতে আমানত ও সুদের হার ছয়-নয় করার উদ্যোগটি ভালো। আইএমএফ যা বলছে, তা ঠিক নয়।’
তিনি বলেন, ‘সুদহার ছয়-নয় করার কারণে ব্যাংকিং খাতে স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে। বেসরকারি খাতও চাঙা হয়েছে। সুতরাং আইএমএফ যে কথা বলেছে, তা সঠিক নয়।’
সারাবাংলা/জিএস/পিটিএম