‘রিমোট কন্ট্রোল ডাকে এদেশে আন্দোলন হবে না’
২৮ জুলাই ২০২২ ১৫:৩১
ঢাকা: রিমোট কন্ট্রোল ডাকে এদেশে আন্দোলন হবে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বিএনপির নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ১৩ বছরে বুঝেননি? কত ডাক দিলেন— রোজার ইদ, কোরবানির ইদ, পরীক্ষার পর আন্দোলন। আপনাদের ডাকে কি জনগণ সাড়া দিয়েছে? ’
বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) দুপুরে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের হাজারীবাগ থানাধীন ১৪ ও ২২ ওয়ার্ডের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের উদ্দেশে বলেন, ‘লং ডিসটেন্সে থেকে রিমোট কন্ট্রোল লিডারশিপ ডাক দিলে বাংলাদেশের পদ্মা-মেঘনা-যমুনায় ঢেউ আসবে না, রাজপথে আন্দোলন হবে না। আন্দোলন যদি করতে চান, আপনাদের ভারপ্রাপ্ত নেতাকে বলেন, সৎ সাহস থাকলে মাঠে আসুন। মাঠে মোকাবিলা হবে, খেলা হবে। সেখানেই দেখা যাবে জনগণ কাদের সঙ্গে আছে।’
বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এই প্রশ্নের জবাব আমি জানতে চাই, দেশটা ভালো চললে তাদের কেন মন খারাপ হয়ে যায়? দেশের ভালো তারা চায় না। তারা চায় নিজেদের ভাগ্যের উন্নয়ন, নিজেদের পকেটের উন্নয়ন। তারা চায় ক্ষমতায় আসলে আবারও হাওয়া ভবন। তারা চায় ক্ষমতায় আসলে আবারও মাইনরিটি নিপীড়ন। তারা চায় ক্ষমতায় আসলে আবারও হত্যা খুনের রাজনীতি, আরও একটা একুশে আগস্ট। আরও একটি ১৫ই আগস্টের ভয় দেখায়, হুমকি দেয়। তারপরও বলে, সরকার তাদের কথা বলতে দেয় না। তারপরও বলে, দেশে গণতন্ত্র নেই? কিভাবে গণতন্ত্র আসবে? স্থানীয় সরকার নির্বাচন করতে করতে এক পর্যায়ে বয়কট করলেন। দলের লোকেরা ঠিকই ঘোমটা পরে নামল। ঘোমটা পরে স্বতন্ত্র ইলেকশন কিন্তু তারা করেছে।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে বিএনপি আসবে, আসতে হবে। অস্তিত্ব রক্ষার জন্য আসতে হবে। খাদের কিনারায় এসে গেছে, দলকে রক্ষা করতে হলে আসতে হবে। দলকে রক্ষা করতে হলে, অস্তিত্ব রক্ষা করতে হলে, তাদের নির্বাচনে আসতে হবে। ক্ষমতার পরিবর্তন এই দেশে নির্বাচন ছাড়া অন্য কোন উপায় নেই। নির্বাচন করেই ক্ষমতার পরিবর্তন করতে হবে। যদি জনগণ তাদের চায় তারা বিজয়ী হবে। এই কথা আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা বার বার বলেছেন যে, জনগণ না চাইলে আমরা বিদায় নেব।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে পাওয়ার সংকট নেই। যেটুকু আছে তা সাময়িক। জ্বালানি ও খাদ্যের অভাব আমাদের নেই। আমাদের ক্রাইসিস ম্যানেজার, আমাদের ট্রাভেল শ্যুটার শেখ হাসিনা আজকে পরিস্থিতি ভারসাম্যমূলকভাবে মোকাবিলা করে যাচ্ছেন। তিনি সামলিয়ে যাচ্ছেন। নেত্রীর ওপর আস্থা রাখুন। তিনি যা বলেন তা করেন। ক্ষমতায় বসে নিজেদের ভাগ্য উন্নয়নের কোনো মানসিকতা নেই।’
তিনি বলেন, ‘গত ৪৭ বছরে শেখ হাসিনার মতো এত পরিশ্রমী ও ত্যাগী নেতা এদেশে আসেনি। তার সৎ সাহস আছে, সত্য কথা বলেন। লোডশেডিং হবে সারাদেশে। কোথায় কী অবস্থা হবে- কোনো প্রকার ভূমিকার আশ্রয় না নিয়ে আগেভাগেই সেটা সরকারের পক্ষ থেকে বলে দিয়েছেন। দেশের জনগণ নেত্রীকে বিশ্বাস করে। পদ্মা সেতু এখন স্বপ্ন নয়, দৃশ্যমান বাস্তবতা। শেখ হাসিনা যা করছেন সবই দৃশ্যমান বাস্তবতা। দেশের মানুষের চোখের সামনে সব।’
বিএনপির উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা চোখে সরষে ফুল দেখছেন। শেখ হাসিনার এসব উন্নয়ন অর্জনের মানুষ যখন খুশি, তখন আপনাদের বুকে বড় বেদনা, আপনাদের অন্তরে কষ্ট। এ কষ্ট কিছুতেই ভুলতে পারছেন না।’
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ঢাকা মহানগর সত্যিকার অর্থে আওয়ামী লীগের ইঞ্জিন। ইঞ্জিন না চললে বগি চলে না। সেই ইঞ্জিনের রূপ অনেকদিন পর আওয়ামী লীগ ফিরে পেয়েছে। আওয়ামী লীগ নবরূপে বলিয়ান হয়েছে নবশক্তিতে উজ্জীবিত হয়েছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে আওয়ামী লীগের অদম্য গতি কেউ রুখতে পারবে না।’
হাজারীবাগ থানা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাজী মোহাম্মদ সেলিম আহমেদের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির, সহ-সভাপতি নুরুল আমিন রুহুল প্রমুখ।
সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম