ব্যাটারিচালিত অবৈধ রিকশা বন্ধের আহ্বান ডিএনসিসি মেয়রের
২৮ জুলাই ২০২২ ১৯:৪৬
ঢাকা: ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা একটি বিদ্যুৎ বিধ্বংসী বাহন। এর কারণে প্রচুর বিদ্যুৎ অপচয় হচ্ছে। পাশাপাশি এগুলোতে প্রচুর দুর্ঘটনাও ঘটছে। তাই ব্যাটারিচালিত অবৈধ অটোরিকশা বন্ধ করে সরকারকে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। এ সময় তিনি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার পরিবর্তে পায়ে চালিত রিকশা চালানোর পরামর্শও দেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর গুলশান-২ নগরভবনের হলরুমে ২ পরিষদের ১৫তম কর্পোরেশন সভার (বাজেট সভা) সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ডিএনসিসি মেয়র।
আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের সময় এসেছে। শুধু আমরাই নই, বিশ্বব্যাপী উন্নতদেশগুলোও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এবং সেটা তারা করছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সবাইকে বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যায়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তাই ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন বিদ্যুতের ব্যবহার অনেকাংশে কমিয়ে এনেছে। প্রয়োজনীয় বাতি ছাড়া সব বন্ধ থাকছে। এসিও বন্ধ থাকছে। যেসব কক্ষের এসি একান্তই প্রয়োজনে চালাতে হচ্ছে সেগুলোর টেম্পারেচার ২৫ এর নিচে নামানো হচ্ছে না।’ এ সময় তিনি ব্যাটারিচালিত অবৈধ অটোরিকশা বন্ধ করে সরকারকে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের সহযোগিতার আহ্বান জানান।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘আজ প্রতিটি রাস্তায়-মহল্লায় অটোরিকশায় সয়লাব। একেকটা অটোরিকশায় ৪টি করে ব্যাটারি থাকে। সারাদিন চালানোর পর এগুলোকে সারারাত ধরে চার্জে রাখা হয়। এই অটোরিকশাগুলো বিদ্যুৎ বিধ্বংসী। প্রচুর বিদ্যুতের অপচয় হচ্ছে। পাশাপাশি এগুলোতে প্রচুর দুর্ঘটনাও ঘটছে।’
অটোরিকশা চালকদের জন্য বিকল্প কী ব্যবস্থা?— এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘এই শহরে আগে পায়ে চালিত প্রচুর রিকশা চলতো। এখনো চলে। আমরা তো পায়ে চালিত রিকশা বন্ধ করে দিচ্ছি না। যে অটোরিকশা চালাতো সে পায়ে চালিত রিকশা চালাবে।’ এ সময় তিনি এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
এদিন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ২০২২-২৩ অর্থবছরের ৫ হাজার ৪৮ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয় এক সভায়। এই বাজেট সভায় হল রুমের ২০ শতাংশ লাইট ব্যবহার করে বাজেট উপস্থাপন করা হয়। শীতাতপ যন্ত্র চালু ছিল ৫০ শতাংশ। সভায় সর্বসম্মতভাবে এ বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় ২০২১-২২ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটও অনুমোদন দেওয়া হয়।
২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট প্রসঙ্গে ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘পুরো বিশ্ব বর্তমানে তিন সি’র (কোভিড, কনফ্লিক্ট এবং ক্লাইমেট চেইঞ্জ) জন্য টালমাটাল অবস্থায় রয়েছে। এই তিন সি আমাদের দেশের জন্যও চ্যালেঞ্জ। প্রধানমন্ত্রীর দক্ষ নেতৃত্বে আমরা এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এগিয়ে যাচ্ছি। বৈশ্বিক মহামারি করোনা, সংঘর্ষ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন গত ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে ডিএনসিসির ২০২২-২৩ অর্থবছরের গৃহীত বাজেট বাস্তবায়নের জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী মিতব্যয়ী হতে হবে, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমাতে হবে। এ, বি, সি ক্যাটেগরি অনুযায়ী প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে ‘
সভায় ডিএনসিসির সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিকের সঞ্চালনায় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগে. জেনা. মো. জোবায়দুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহম্মদ আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফ-উল ইসলাম, ডিএনসিসির বিভিন্ন এলাকার কাউন্সিলর এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম