মাশরুম চাষ শিখতে বিদেশ যাবেন ৩০ কর্মকর্তা
২ আগস্ট ২০২২ ১০:০৪
ঢাকা: এবার মাশরুম চাষ শিখতে বিদেশ যাবেন ৩০ কর্মকতা। এজন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা। এতে কর্মকর্তা প্রতি ব্যয় হবে ৪ লাখ টাকা করে। যা মোট প্রকল্প ব্যয়ের ১.২০ শতাংশ। ‘মাশরুম চাষ সম্প্রসারণের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন ও দারিদ্র্য হ্রাসকরণ শীর্ষক প্রকল্পে’ এই প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে পরিকল্পনামন্ত্রী জানিয়েছেন, এ প্রকল্পে বিদেশ সফরের প্রয়োজন আছে কিনা সেটি খতিয়ে দেখা হবে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, বিভিন্ন প্রকার মাশরুমের ২৫টি জার্মপ্লাজম সংগ্রহ করে চাষ ও সংরক্ষণ উপযোগী ২০টি টেকসই প্রযুক্তি উদ্ভাবন, উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ। উচ্চ মানসম্পন্ন মাশরুম ও মাশরুমজাত পণ্য উৎপাদন ও সম্প্রসারণ, ৮০০ জন মাশরুম শিল্পোদ্যোক্তা সৃষ্টি এবং মাশরুম উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের সক্ষমতা বাড়ানো।
পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, ‘কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর গত বছরের ২৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো প্রতিপালন করায় প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে ২০২৭ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর।’
প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, মাশরুম একটি পুষ্টিকর, সুস্বাদু ওষুধি গুণসম্পন্ন খাবার, যা চাষের জন্য কোনো আবাদি জমির প্রয়োজন হয় না। অনুৎপাদনশীল স্বল্প পরিমাণ জমিতে স্বল্প পুঁজিতে বিপুল পরিমাণ মাশরুম উৎপাদন করা যায়। দেশের আবহাওয়া বছরব্যাপী মাশরুম চাষের উপযোগী। এছাড়া হোটেল, রেস্টুরেন্ট এবং উচ্চবিত্ত জনগণের নিকট মাশরুমের পর্যাপ্ত চাহিদা রয়েছে। এ জন্য আগ্রহী উদ্যোক্তাদেরকে মাশরুম চাষে সম্পৃক্ত করার জন্য প্রকল্পটি নেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রকল্পের মূল কার্যক্রম হচ্ছে- ৯৫টি ছাদ প্রদর্শনী, ৮০০টি স্পন ও মাশরুম উৎপাদন প্রদর্শনী স্থাপন। ৬০০ বর্গ মিটার ডরমিটরি ভবন এক্সটেনশন, ৪৫০ বর্গ মিটার ল্যাবরেটরি কাম অফিস ভবন এক্সটেনশন, ৯৫০ বর্গ মিটার ওয়ার্কশপ কাম ল্যাবরেটরি ভবন, একটি ইনকিউবেশন রুম, ৩৫টি ভার্মি কম্পোস্ট ইউনিট নির্মাণ এবং ৫০০ ঘন মিটার ভূমি উন্নয়ন। ২৭ ব্যাচ উদ্যোক্তা, ৮০০ ব্যাচ দলভুক্ত চাষী, ১০০ ব্যাচ ছাদবাগান, ৮০০ ব্যাচ রিফ্রেসার, ২৯ ব্যাচ উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা (এসএএও) ও উপসহকারী উদ্যান কর্মকর্তা (এসএএইচও), ৭ ব্যাচ প্রশিক্ষক, ৯ ব্যাচ সিনিয়র কর্মকর্তা, ৬ ব্যাচ জিও-এনজিও কর্মকর্তা প্রশিক্ষণ এবং ১৬০টি মাঠ দিবস, ৫টি মাশরুম মেলা ও ১৪ ব্যাচ উদ্বুদ্বকরণ ভ্রমণ।
পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য শরিফা খান বলেন, ‘প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে দেশে উন্নত জাতের মাশরুমের জার্মপ্লাজম সংগ্রহ ও সংরক্ষণ এবং কৃষক পর্যায়ে সম্প্রসারণ করা সম্ভব হবে। দেশে উচ্চ গুণগত মানসম্পন্ন মাশরুম ও মাশরুমজাত পণ্যের উৎপাদন ও ব্যবহার বৃদ্ধি পাবে এবং উৎপাদিত মাশরুম বিদেশে রফতানির সুযোগ সৃষ্টি হবে।’
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সারাবাংলাকে বলেন, ‘এ ধরনের প্রকল্প করার যৌক্তিকতা সম্পর্কে আমি জানতে চেয়েছি। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা অনেক দিন ধরে আমার কাছে আসছেন। আমি নানা প্রশ্ন করে বিষয়গুলো জানার চেষ্টা করেছি। এ প্রকল্পে বিদেশ সফরের প্রয়োজন আছে কিনা সেটি খতিয়ে দেখা হবে।
তিনি বলেন, ‘উন্নয়ন প্রকল্পে যেকোনো অপচয় বন্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়া হয়েছে।’
সারাবাংলা/জেজে/এমও