Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাজারে একাধিক নতুন মাদক; গডফাদার গ্রেফতার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২ আগস্ট ২০২২ ১৭:২১

ঢাকা: এতদিন যেসব মাদকের নাম শোনা গেছে সেগুলোর একটিও নয় বরং একাধিক নতুন মাদক বাজারে বিক্রি হচ্ছে। এসব মাদকের মধ্যে রয়েছে এক্সট্যাসি, কুশ, হেম্প, এডারল, ফেন্টানিল এবং মলি। এগুলোর সবই অপ্রচলিত মাদক। এসব মাদকের গডফাদার ওনাইসি সাঈদ ওরফে রেয়ার সাঈদকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। এ সময় তার কাছ থেকে তিন কোটি টাকা মূল্যের দেশি বিদেশি মুদ্রা জব্দ করা হয়েছে।

র‌্যাব জানিয়েছে, বিভিন্ন অপ্রচলিত ও নতুন মাদক বিক্রির পাশাপাশি সাঈদ তাপনিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে কুশ তৈরি করতো। যুব সমাজের নতুন নতুন মাদকের প্রতি বেশি আসক্তির কারণে নতুন মাদকের নেটওয়ার্কের খোঁজ করতে গিয়ে এ চক্রের সন্ধান পায় তারা।

মঙ্গলবার (২ আগস্ট) দুপুরে কারওয়ান বাজার মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, সোমবার দিবাগত রাতে রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে সাঈদকে গ্রেফতারের সময় ১০১ গ্রাম কুশ, ৬ গ্রাম হেম্প, .০৫ গ্রাম মলি, ১ গ্রাম ফেন্টানল, ১৮ গ্রাম কোকেন, ১২৩ পিস এক্সট্যাসি, ২৮ পিস এডারল ট্যাবলেট এবং দুই কোটি ৪০ লাখ টাকা ও ৫০ হাজার মার্কিন ডলার উদ্ধার করা হয়েছে।

গ্রেফতারের পর তার দেওয়া তথ্যে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি ফ্ল্যাট থেকে বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাতকরণের উদ্দেশ্যে তাপ নিয়ন্ত্রণ গ্রো-টেন্ট এর মাধ্যমে অভিনব পন্থায় বিদেশি প্রজাতির কুশ তৈরির প্লান্ট ও সেটআপ উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতার সাঈদ বাংলাদেশে একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল-কলেজ থেকে পড়াশুনা শেষ করে বিদেশ থেকে বিবিএ এবং এমবিএ সম্পন্ন করেন। বিদেশে অধ্যায়ন শেষে ২০১৪ সাল থেকে বাংলাদেশে অবস্থান করে। প্রাথমিক পর্যায়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি দেশে অবস্থানকারী পূর্বপরিচিত একজন গ্রেফতার সাঈদ বিভিন্ন ধরণের অপ্রচলিত মাদক সরবরাহ করত। সরবরাহকারী উত্তর আমেরিকার একটি দেশে স্থানান্তরিত হলে, সেখান থেকে এ জাতীয় মাদক সাপ্লাই করতে থাকে। এভাবে সে আন্তর্জাতিক মাদক সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত হয় বলে জানিয়েছে র‍্যাব।

জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, বাংলাদেশে এক্সট্যাসির মূলহোতা গ্রেফতার ওনাইসী সাঈদ। সে প্রায় চার বছর যাবত এক্সট্যাসিসহ অন্যান্য উচ্চমূল্যের মাদকের কারবারের সঙ্গে জড়িত। বাংলাদেশে বেশ কয়েকজন তার সহযোগী হিসেবে কাজ করে। এসব মাদক সে পার্সেলের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশ থেকে সংগ্রহ করে। মাঝে মধ্যে সে নিজেও বিদেশ গিয়ে মাদক লাগেজে বহন করে দেশে নিয়ে আসে। সে পার্সেলে মাদক আনার ক্ষেত্রে নিকটাত্মীয়/বন্ধু-বান্ধবদের নাম ব্যবহার করে। হুন্ডির মাধ্যমে সরবরাহকৃত মাদকের অর্থ পরিশোধ করা হয় বলে জানায়।

দেশে তার ক্রেতাদের সম্পর্কে জানা যায় যে, অধিকাংশ ধণাঢ্য পরিবারের সদস্য; এছাড়া অভিজাত এলকায় বিভিন্ন পার্টিতে চাহিদার ভিত্তিতে সরবরাহ করে। সে মাদক পরিবহনের ক্ষেত্রে বিশ্বস্তদের নিয়োগ করে থাকে; এই বিশ্বস্তরা মাদক বিক্রির টাকা তার কাছে নিয়ে আসে।

গ্রেফতার সাঈদ আরও জানায়, নতুন বিভিন্ন মাদকের প্রতি তার আগ্রহ থেকে এ নিয়ে অধ্যয়ন এবং গবেষণা শুরু করে। তার ভবিষ্যত পরিকল্পনা ছিল কুশ প্ল্যান্ট এর ফার্ম তৈরি করে উন্নত দেশে সরবরাহ করা। টেস্ট অ্যান্ড ট্রায়াল হিসেবে সে ঢাকার মোহাম্মদপুরে ফ্ল্যাটের ভেতর গ্রো-টেন্ট পদ্ধতিতে চাষ করে। ইতোমধ্যে, সে ওই ফার্ম থেকে একবার হারভেস্ট ও পরবর্তীতে প্রসেস করে কুশ মাদক প্রস্তুত করে। যা বাংলাদেশের বিভিন্ন মাদকাসক্তদের কাছে বিক্রি করে। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানায় র‍্যাব।

সারাবাংলা/ইউজে/একেএম

টপ নিউজ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর