পুত্রবধূর স্বীকৃতির দাবিতে কলেজ শিক্ষার্থীর অনশন
৬ আগস্ট ২০২২ ২১:২৫
বরগুনা: জেলার তালতলী উপজেলায় পুত্রবধূ হিসেবে স্বীকৃতির দাবিতে শ্বশুর বাড়িতে গত ১৫ দিন ধরে অবস্থান নিয়েছেন বরিশাল হাতেম আলী কলেজের ডিগ্রি শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী কারিমা আক্তার। একই উপজেলার সৌদি প্রবাসী রাসেলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক। গত ৩১ মে সৌদি থেকে দেশে আসেন রাসেল। এরপর গত ৭ জুলাই বরগুনায় আইনজীবী আমিনুল ইসলামের মাধ্যমে পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে কারিশমাকে বিয়ে করেন তিনি।
অমানবিক নির্যাতন সহ্য করে ওই শিক্ষার্থী এখনো তার স্বামীর বাড়িতে অবস্থান করছেন। ঘটনাটি মীমাংসা করার নামে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকায় রাসেলের বাবা আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার (৬ আগস্ট) সন্ধ্যা পর্যন্ত বিষয়টির সমাধান হয়নি।
উপজেলার বড়বগী ইউনিয়নের নয়াভাইজোড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। কারিমা আক্তার ওই উপজেলার নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়নের ইউনুস মৃধার মেয়ে।
কারিমা আক্তার জানান, নয়াভাইজোড়া এলাকার সৌদি প্রবাসী রাসেলের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইমোতে বিভিন্ন সময় কথা হয় কারিমার। এক পর্যায় তাদের দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দীর্ঘ দুই বছরের বেশি সময় তাদের সম্পর্ক চলে। এরপর বিদেশ থেকে গত ৩১ মে দেশে আসে রাসেল। পরে গত ৭ জুন জেলা নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে রেজিস্ট্রি বিয়ে করেন তারা। বরগুনা ও ঢাকাসহ বিভিন্নস্থানে স্বামী-স্ত্রী হিসাবে পরিচয়ে ঘুরে বেড়ান তারা।
গত ২১ জুলাই তাদের বিয়ের বিষয়টি পরিবারকে জানায় রাসেল। এ কথা শোনার পর অভিভাবকরা রাসেলকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মারধর করে বলে জানতে পারি। এরপর থেকেই তার স্বামী নিখোঁজ রয়েছে। তার সন্ধান না পাওয়া পর্যন্ত তিনি শ্বশুর বাড়ি থেকে যাবে না বলে জানিয়েছেন কারিমা।
এ বিষয়ে রাসেলের বাবা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘কোনোভাবেই ওই মেয়েকে তার পুত্রবধূ হিসেবে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। মেয়েটির একটি পা নেই, প্রতিবন্ধী তা কোনো সমেস্যা নয়। সমস্যা হলো, মেয়েটির সঙ্গে কয়েকটি ছেলের ছবি দেখেছি। আর বগী এলাকার একটি ছেলে ওই মেয়েটিকে তার স্ত্রী বলে আমাদের কাছে দাবি করছে। তাহলে এই মেয়েকে কিভাবে আমার ছেলের পুত্রবধূ হিসেবে মানব?’
তিনি আরও বলেন, ‘ওই ছবি দেখে আমার ছেলে গত ১ আগস্ট অভিমান করে আবার বিদেশে চলে গেছে। তাই এই মেয়েকে পুত্রবধূ হিসেবে মেনে নেওয়া অসম্ভব।’
এ ঘটনায় তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি, তবে কোনো অভিযোগ পাইনি। আমি খোঁজ নিচ্ছি।’