বিদ্যুৎ সংকটে বরফের অভাব, ইলিশ আহরণে বিপর্যয়
৯ আগস্ট ২০২২ ১৩:৫১
ইলিশের ভরা মৌসুমে বাগেরহাটের শরণখোলায় বরফ পাওয়া যাচ্ছে না। বিদ্যুত সংকটের কারণে বরফকলে উৎপাদন অর্ধেকে নেমে আসায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এতে অর্ধেকের বেশি ট্রলার বরফের অভাবে এখনো সাগরে যেতে পারেনি। লোকসানের আশঙ্কা করছেন জেলে-মহাজনরা।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শরণখোলার চারটি বরফকলের দুটি আগে থেকেই বন্ধ। বর্তমানে চালু আছে মেসার্স মেঘা ও মেসার্স মেঘনা নামের দুটি কল। এর মধ্যে মেঘা বরফকলের উৎপাদন ক্ষমতা ২৫০ ক্যান (প্রতি ক্যানে প্রায় সোয়া এক মণ) এবং মেঘনার ৬০০ ক্যান। অন্যদিকে এই উপজেলায় সমুদ্রগামী মাছধরা ট্রলারের সংখ্যা ৩০০। গত ২৩ জুলাই ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর মাছ ধরা শুরু করেন জেলেরা। কিন্তু ৩০০ ট্রলারের মধ্যে এ পর্যন্ত মাত্র দেড়শর মতো ট্রলারে বরফ সরবরাহ করতে পেরেছে দুটি বরফকল। বাকি ট্রলারগুলো বরফ না পাওয়ায় সাগরে যেতে পারছে না।
মেসার্স মেঘা বরফকলের ম্যনেজার বিকাস চন্দ্র বলেন, সারা দিনে দুই থেকে তিন ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। তাও একটানা থাকে না। আসা-যাওয়া করে। এই ফাঁকে ক্যানে যেটুকু বরফ জমে, বিদ্যুৎ চলে গেলে আবার তা গলে যায়। তিন-চার দিন বসে ক্যানে আংশিক বরফ পূর্ণ হয়। এতে বিদ্যুৎ ঠিকই ব্যয় হচ্ছে, কিন্তু সে তুলনায় বরফ উৎপাদন হচ্ছে না। যে কারণে চাহিদার সিকি পরিমাণও বরফ দিতে পারছি না ট্রলারগুলোতে।
বাংলাদেশ ফিসিং ট্রলার মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইফুল ইসলাম খোকন বলেন, গত দুই বছর করোনাকালীন সময়ে ব্যবসায়ীরা পথে বসছে। এখন ৬৫ দিন অবরোধ শেষে বরফ ও বিদ্যুৎ সংকট যেন ব্যবসায়ীদের মরার উপর খারার ঘা অবস্থা।
একজন জেলে জানান, ৬৫ দিনের অবরোধের পর এখনো তারা ইলিশ আহরনে যেতে পারেননি। ৪০ শতাংশ জেলে এখনো বরফের অপেক্ষায় রয়েছেন।
এ বিষয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির শরণখোলা সাব-জোনাল অফিসের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার (এজিএম) মো. আশিক মাহমুদ সুমন বলেন, ‘আমাদের পল্লী বিদ্যুতের আমতলী উপকেন্দ্রে দিনের বেলায় চাহিদা সাড়ে ছয় মেগাওয়াট। সেখানে পাই আড়াই থেকে তিন মেগাওয়াট। এ ছাড়া রাতে পিক আওয়ারে চাহিদা থাকে সাড়ে ৯ থেকে ১০ মেগাওয়াট। সেখানে কখনো পাই তিন মেগাওয়াট, কখনো চার মেগাওয়াট। এ কারণে চাহিদামতো বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না।’
তবে রামপাল ও পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হলে এ অঞ্চলে আর বিদ্যুতের সমস্যা থাকবে না বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
সারাবাংলা/এএম