Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আশা জাগাচ্ছে শাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্র, দৈনিক মিলবে ২৫ মিলিয়ন ঘনফুট

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২০ আগস্ট ২০২২ ১৭:১১

ঢাকা: জ্বালানি সংকটের কারণ দেখিয়ে এরই মধ্যে দেশের সকল তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। গ্যাস সংকটের কারণে গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রগুলোও উৎপাদন কমিয়ে দিয়ে লোডশেডিং করে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। বিদ্যুতের পাশাপাশি ঘাটতি দেখা দিয়েছে গ্যাসেও। এই পরিস্থিতির মধ্যে ভোলার শাহবাজপুর গ্যাসফিল্ডের একটি কূপে খনন কাজ শুরু হয়েছে। জ্বালানি বিভাগ বলছে, এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাবে। এতে করে কিছুটা হলেও গ্যাসের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছে তারা।

বিজ্ঞাপন

জ্বালানি বিভাগের তথ্যানুযায়ী, শুক্রবার (১৯ আগস্ট) থেকে ভোলার শাহবাজপুর গ্যাসফিল্ডের ৬ নম্বর কূপের খনন কাজ শুরু করা হয়। কাজের উদ্বোধন করেন জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মাহবুব হোসেন।

জানা গেছে, ভোলার শাহবাজপুর গ্যাস ক্ষেত্রের টবগী-১ কূপ প্রায় ৩৫০০ মিটার গভীরতা পর্যন্ত খনন করা হবে। খনন কাজ পরিচালনা করছে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান গ্যাজপ্রম। গ্যাস কূপ খননের জন্য বাপেক্সের সঙ্গে রাশিয়ান কোম্পানি গ্যাজপ্রম চুক্তিবদ্ধ হয়েছে।

চুক্তি অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জুন মাস পর্যন্ত খনন কাজ পরিচালনা করবে এই কোম্পানি। জানা গেছে, ওই কূপ থেকে দৈনিক ২০ থেকে ২৫ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস পাওয়া যাবে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চলমান সংকট কাটিয়ে উঠতে দেশীয় জ্বালানি অনুসন্ধান কার্যক্রম আরও জোরদার করেছে সরকার। এ লক্ষে ২০২২-২৫ সালের মধ্যে ৪৬টি অনুসন্ধান, উন্নয়ন ও ওয়ার্কওভার কূপ খননের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে জ্বালানি বিভাগ।

এ প্রসঙ্গে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান বলেন, বিশ্বজুড়ে যে জ্বালানি সংকট, তার মধ্যে এই উদ্যোগ আশার আলো দেখাচ্ছে। এ কূপ থেকে দৈনিক ২০ থেকে ২৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাবে আশা করছি। যা সংকট নিরসনে সহায়তা করবে।

জানা যায়, দুই বছর আগে বাপেক্সের একটি অনুসন্ধানী দল ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ করে গ্যাসের জন্য সম্ভাবনাময় বিবেচিত ভোলার তিনটি স্থানে গ্যাসের সন্ধান পায়। সেগুলোর নাম দেওয়া হয় ইলিশা-১, ভোলা নর্থ-২ ও টবগী-১ গ্যাসপকূপ। এই টবগীর খনন কাজ শুরু হলো। এ প্রকল্পের আওতায় দ্রুতই আরও ২টি অনুসন্ধান কূপ ইলিশা-১ ও ভোলা নর্থ-২ খনন করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এ নিয়ে দ্বীপ জেলা ভোলায় গ্যাস কূপের সংখ্যা দাঁড়ালো ৯টিতে।

বিজ্ঞাপন

বাপেক্স সূত্রে জানা গেছে, ভোলার শাহবাজপুরের গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ৪৫ থেকে ৪৬ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হয়। এই গ্যাস চারটি বিদ্যুৎকেন্দ্র, একটি কারখানা ও আবাসিকে গ্যাস সরবরাহ করা হয়।

সূত্রমতে, ১৯৯৩ সালে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নে শাহবাজপুরে গ্যাসক্ষেত্র খনন শুরু হয়। বর্তমানে চারটি কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন করা হয়। সেখানে প্রায় ১ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুত রয়েছে। এ কূপগুলো ছাড়াও শাবহাজপুর ইস্ট ও ভোলা নর্থ নামে আরও দুইটি কূপে মোট গ্যাসের মজুতের পরিমান প্রায় ১ দশমিক ৭ টিসিএফ। ২০১০ সালে রাশিয়া সফরকালে দেশটির প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে গ্যাস অনুসন্ধান ও উন্নয়ন কাজে সহযোগিতার অনুরোধ জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংস্থা গ্যাজপ্রম প্রাথমিকভাবে বাপেক্স, বাংলাদেশ গ্যাসফিল্ড কোম্পানি লিমিটেড ও সিলেট গ্যাসফিল্ডের আওতাভুক্ত ১০টি কূপ খনন করে।

উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে জ্বালানি বিভাগ এ পর্যন্ত ২১টি অনুসন্ধান, ৫০টি উন্নয়ন ও ৫৬টি ওয়ার্কওভার কূপ খনন করেছে। যার হাত ধরে বাংলাদেশ পেয়েছে ৫টি নতুন গ্যাসক্ষেত্র। দেশীয় খনিজ সম্পদ অনুসন্ধান ও উত্তোলনে জোর দেওয়ার কারণেই ২০১৮ সালে গ্যাস উৎপাদন বেড়ে দাঁড়ায় দৈনিক ২৭৫০ মিলিয়ন ঘনফুট (এমএমসিএফ), যা ২০০৯ সালে ছিল দৈনিক ১,৭৪৪ এমএমসিএফ। কূপগুলোর রিজার্ভ কমতে থাকায় উৎপাদন কিছুটা হ্রাস পেলেও এলএনজি-সহ বর্তমানে বাংলাদেশের দৈনিক প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ সক্ষমতা প্রায় ৩,৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট।

সারাবাংলা/জেআর/এএম

টপ নিউজ শাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্র

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

বিএসইসি‘র চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:৫১

বাড়তে পারে তাপমাত্রা
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:৩৪

গুলশানে দুইজনের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:৫৫

সম্পর্কিত খবর