ঠাকুরগাঁও: জেলায় ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড় মহাসড়কে প্রায় ৫ লাখ টাকাসহ একটি ব্যাগ কুড়িয়ে পাওয়ার পর ব্যাগের মালিকের খোঁজে মাইকিং করছেন সৌরভ নামে এক যুবক। মাইকিং করার পর ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ছে। সবাই তার কাজের প্রশংসা করছেন।
শনিবার (২০ আগস্ট) সকাল ১০টা থেকে টাকার মালিক খুঁজতে শহড়জুড়ে চলছে এই মাইকিং। সৌরভ ঠাকুরগাঁও শান্তিনগর এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে। তিনি পেশায় একজন কোকারিজ ব্যবসায়ী।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিকেলে ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড় মহাসড়কে রাস্তার ধারে একটি ব্যগ পরে থাকতে দেখেন সৌরভ। ব্যাগ খুলে দেখেন সেখানে প্রায় ৫ লাখ টাকা রয়েছে। টাকার সন্ধানে কেউ আসবে বা শহর জুরে মাইকিং বের হবে এমনটাই ভেবে অপেক্ষায় ছিলেন তিনি। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও টাকার মালিকের কোনো সন্ধান মেলেনি। অবশেষে শনিবার মালিকের সন্ধানে মাইকিং বের করার ব্যবস্থা করেন তিনি। আর এই মাইকিং বের হবার পর থেকেই সবাই তার প্রশংসা করছে।
মাইকিং শুনে পৌর শহরের বাসিন্দা গোলাম আজম বলেন, ‘এই মাইকিং প্রমাণ করে যে, মানবতা এখনো বেঁচে আছে। পৃথিবীতে এখনো ভালো মানুষ আছে। সৌরভের সর্বময় মঙ্গল কামনা করেন তিনি। তাকে দেখে সমাজ অনেক কিছু শিখতে পারবে।’
শহরের আরেক বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘সকালে বাসা থেকে বের হয়েই আমি টাকার মালিকের খোঁজে বের করা মাইকিং শুনতে পাই। প্রথমে অবাক হয়েছি। তবে ঘটনাটি অবশ্যই প্রশংসা করার মতো। ধন্যবাদ এই উদ্যোগকে।’
এই বিষয়ে সৌরভ বলেন, ‘ঠাকুরগাঁও -পঞ্চগড় মহাসড়কে ব্যাগটি পরে থাকতে দেখি আমি। পরে ব্যাগ ভর্তি টাকা দেখতে পাই। এই টাকা হতে পারে কারও ব্যবসার মূল পুঁজি। হতে পারে চাকরিজীবীর অফিসের টাকা। অথবা এই টাকা হতে পারে কারও স্বপ্ন পূরণের সম্বল। তাই ভেবেছি টাকাগুলো মালিকের কাছে পৌঁছে দেওয়া জরুরি। তাই মাইকিং করে টাকার মালিককে খোঁজা হচ্ছে। টাকার মালিক স্টেডিয়ামের সামনে মদিনা মেশিনারিজ দোকানে এসে আমর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে।’
এই ঘটনায় ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) কামাল হোসেন বলেন, টাকা হারিয়েছে জানিয়ে কেউ এখনো আমাদের কাছে কোনো জিডি করেনি। তাই টাকার মালিকের বিষয়ে এখনি আমরা কোনো সহায়তা করতে পারছি না। তবে টাকার মালিক খোঁজার এই অভিনব ঘটনাটি প্রশংসনীয়।
এ বিষয়ে জেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহরিয়ার রহমান বলেন, ‘অবশ্যই এটি একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। যুবক সৌরভকে সাধুবাদ জানাই। যেকোনো রকমের প্রশাসনিক সহায়তা প্রয়োজন হলে আমরা পাশে থাকবো।’